ETV Bharat / state

Crossing River at Risk: ভগবানই ভরসা! নদীর দু'পারে দড়ি বেঁধে নৌকা টেনে চলছে ঝুঁকির পারাপার - উত্তর ২৪ পরগনার খবর

উত্তর 24 পরগনার শাসনে বিদ্যাধরী নদী পারাপারে সম্বল দাঁড়টানা নৌকা (boats are crossing with ropes)। নদীর দুই পারে দুটি গাছের সঙ্গে মোটা দড়ি বেঁধে, সেই দড়ি টেনে টেনে চলছে নৌকায় যাত্রী পারাপার। প্রাণের ঝুঁকি (Crossing the river at the risk of life) নিয়ে নিত্য যাতায়াত করতে হচ্ছে এলাকার কয়েকশো বাসিন্দাকে।

Crossing River at Risk
নদীর দু'পারে দড়ি বেঁধে নৌকা টেনে চলছে ঝুঁকির পারাপার
author img

By

Published : Mar 23, 2023, 10:48 PM IST

নদীর দুপারে দড়ি বেঁধে নৌকা টেনে চলছে ঝুঁকির পারাপার

শাসন (উত্তর 24 পরগনা), 23 মার্চ: কথাতেই আছে, রাখে হরি মারে কে ! কিন্তু প্রতিদিন মৃত্যুভয়কে সঙ্গে নিয়ে নদী পার, এই ঘটনা সামনে না আসলে বোঝা যেত না ৷ ওপারে দক্ষিণ 24 পরগনার মাছিভাঙা, টোনা গ্রাম-সহ ভাঙড় অঞ্চল। এপারে উত্তর 24 পরগনার বাঁধা, সানবেড়িয়া গ্রাম-সহ শাসন অঞ্চল। তার মাঝখান দিয়েই বয়ে গিয়েছে বিদ‍্যাধরী নদী। একসময় যে নদীতে স্বচ্ছ জল টলটল করত আজ তা হেজেমজে, কচুরিপানায় ভর্তি ৷ অথচ, এই নদীই আবার দু'পারের পারাপারে সম্বল ৷ কিন্তু তার অবস্থা তথৈবচ! যাতায়াতের একমাত্র সম্বল বলতে দাঁড়টানা নৌকা (boats are crossing with ropes)।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে দুই চব্বিশ পরগনার সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে যাতায়াত।হাসপাতাল হোক কিংবা ব‍্যবসা। অথবা অন‍্যান‍্য যে কোনও দরকারি কাজ। বিংশ শতাব্দীতে এসেও দুই পারের মানুষের এখনও যাতায়াতের ভরসা সেই নৌকায়। বাসিন্দারা বলছেন, "সড়কপথেও যাতায়াত করা যায়। কিন্তু, তা ঘুরপথে। তাতে সময়ও লাগে অনেকটা। অর্থাৎ ভাঙড়, রাজারহাট-নিউটাউন হয়ে মানুষকে পৌঁছতে হবে গন্তব্যস্থলে।" স্বভাবতই, দড়ি বেঁধে নৌকাতে করে ভগবানের ওপর ভরসা রেখে ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত চলছে দুই চব্বিশ পরগনার বাসিন্দাদের পারাপার। অথচ, নদীর দু'পারের সংযোগস্থলে সেতু নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই সরব গ্রামবাসীরা।

এই বিষয়ে শ‍্যামল দলুই নামে নদীর ওপারের এক বাসিন্দা বলেন, "ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চললেও যাত্রী সুরক্ষায় কোনও উদ্যোগই লক্ষ্য করা যায়নি প্রশাসনের তরফে। আমরা চাই নদীর দু'পারের সংযোগস্থলে সেতু নির্মাণ করা হোক। তাহলেই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে বাসিন্দাদের"। একই সুর শোনা গিয়েছে সুজিত পাত্র নামে নদীর এপারের এক বাসিন্দার গলাতেও। তাঁর কথায়, "ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এভাবে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চলছে দুই পারের বাসিন্দাদের মধ্যে। শিশু, বয়স্ক ছাড়াও মোটরসাইকেল তুলে এপার-ওপারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে, মাঝেমধ্যেই ঘটছে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা। এর থেকে সুরাহা পেতে হলে পাকা সেতু নির্মাণ অত‍্যন্ত জরুরি। যা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন দুই পারের বাসিন্দারা"। বিষয়টি নিয়ে নৌকার মাঝি আকাশ মণ্ডল বলেন, "যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে! কিন্তু কী করব ! দুই পারের বাসিন্দাদের কথা ভেবেই ঝুঁকির পারাপার বন্ধ করতে পারছি না। তা না-হলে অনেক আগেই তো খেয়া পারাপার বন্ধ করে দিতে পারতাম। সরকারের উচিত অবিলম্বে সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।নইলে কখন যে কি হবে, সেটা ভাবলেই আঁতকে উঠতে হয়।"

আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর মধ্যস্থতায় দেউচা-পাচামি সহ আদিবাসীদের সমস্যার কথা শুনতে পারেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

উল্লেখ্য, নদীর দু'পারে যে নিয়মিত ঝুঁকির যাতায়াত চলছে তা মেনে নিয়েছেন কীর্তিপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, "বছরপাঁচেক আগে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু, নদীর ওপারে জমিজটের কারণে সেই কাজ আর সেভাবে এগোয়নি। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। যেহেতু পঞ্চায়েত কিংবা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির একার পক্ষে সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই, আশা করছি রাজ‍্য সরকার এগিয়ে আসবে সেতু নির্মাণের জন্য। দ্রুত সমস্যার সুরাহা হবে বলেও ধারণা আমাদের।"

নদীর দুপারে দড়ি বেঁধে নৌকা টেনে চলছে ঝুঁকির পারাপার

শাসন (উত্তর 24 পরগনা), 23 মার্চ: কথাতেই আছে, রাখে হরি মারে কে ! কিন্তু প্রতিদিন মৃত্যুভয়কে সঙ্গে নিয়ে নদী পার, এই ঘটনা সামনে না আসলে বোঝা যেত না ৷ ওপারে দক্ষিণ 24 পরগনার মাছিভাঙা, টোনা গ্রাম-সহ ভাঙড় অঞ্চল। এপারে উত্তর 24 পরগনার বাঁধা, সানবেড়িয়া গ্রাম-সহ শাসন অঞ্চল। তার মাঝখান দিয়েই বয়ে গিয়েছে বিদ‍্যাধরী নদী। একসময় যে নদীতে স্বচ্ছ জল টলটল করত আজ তা হেজেমজে, কচুরিপানায় ভর্তি ৷ অথচ, এই নদীই আবার দু'পারের পারাপারে সম্বল ৷ কিন্তু তার অবস্থা তথৈবচ! যাতায়াতের একমাত্র সম্বল বলতে দাঁড়টানা নৌকা (boats are crossing with ropes)।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘ ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে এভাবেই চলছে দুই চব্বিশ পরগনার সীমান্তবর্তী গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে যাতায়াত।হাসপাতাল হোক কিংবা ব‍্যবসা। অথবা অন‍্যান‍্য যে কোনও দরকারি কাজ। বিংশ শতাব্দীতে এসেও দুই পারের মানুষের এখনও যাতায়াতের ভরসা সেই নৌকায়। বাসিন্দারা বলছেন, "সড়কপথেও যাতায়াত করা যায়। কিন্তু, তা ঘুরপথে। তাতে সময়ও লাগে অনেকটা। অর্থাৎ ভাঙড়, রাজারহাট-নিউটাউন হয়ে মানুষকে পৌঁছতে হবে গন্তব্যস্থলে।" স্বভাবতই, দড়ি বেঁধে নৌকাতে করে ভগবানের ওপর ভরসা রেখে ঝুঁকি নিয়ে নিয়মিত চলছে দুই চব্বিশ পরগনার বাসিন্দাদের পারাপার। অথচ, নদীর দু'পারের সংযোগস্থলে সেতু নির্মাণের দাবিতে দীর্ঘ কয়েক বছর ধরেই সরব গ্রামবাসীরা।

এই বিষয়ে শ‍্যামল দলুই নামে নদীর ওপারের এক বাসিন্দা বলেন, "ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চললেও যাত্রী সুরক্ষায় কোনও উদ্যোগই লক্ষ্য করা যায়নি প্রশাসনের তরফে। আমরা চাই নদীর দু'পারের সংযোগস্থলে সেতু নির্মাণ করা হোক। তাহলেই নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে বাসিন্দাদের"। একই সুর শোনা গিয়েছে সুজিত পাত্র নামে নদীর এপারের এক বাসিন্দার গলাতেও। তাঁর কথায়, "ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি এভাবে ঝুঁকি নিয়ে যাতায়াত চলছে দুই পারের বাসিন্দাদের মধ্যে। শিশু, বয়স্ক ছাড়াও মোটরসাইকেল তুলে এপার-ওপারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ফলে, মাঝেমধ্যেই ঘটছে কোনও না কোনও দুর্ঘটনা। এর থেকে সুরাহা পেতে হলে পাকা সেতু নির্মাণ অত‍্যন্ত জরুরি। যা দীর্ঘদিন ধরেই দাবি করে আসছেন দুই পারের বাসিন্দারা"। বিষয়টি নিয়ে নৌকার মাঝি আকাশ মণ্ডল বলেন, "যথেষ্ট ঝুঁকি রয়েছে! কিন্তু কী করব ! দুই পারের বাসিন্দাদের কথা ভেবেই ঝুঁকির পারাপার বন্ধ করতে পারছি না। তা না-হলে অনেক আগেই তো খেয়া পারাপার বন্ধ করে দিতে পারতাম। সরকারের উচিত অবিলম্বে সেতু নির্মাণের বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নেওয়া।নইলে কখন যে কি হবে, সেটা ভাবলেই আঁতকে উঠতে হয়।"

আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর মধ্যস্থতায় দেউচা-পাচামি সহ আদিবাসীদের সমস্যার কথা শুনতে পারেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু

উল্লেখ্য, নদীর দু'পারে যে নিয়মিত ঝুঁকির যাতায়াত চলছে তা মেনে নিয়েছেন কীর্তিপুর 1 নম্বর পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রবিউল ইসলাম। তিনি বলেন, "বছরপাঁচেক আগে পাকা সেতু নির্মাণের জন্য সরকারিভাবে মাটি পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছিল। কিন্তু, নদীর ওপারে জমিজটের কারণে সেই কাজ আর সেভাবে এগোয়নি। ইতিমধ্যে আমরা বেশ কয়েকবার জেলা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। যেহেতু পঞ্চায়েত কিংবা স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির একার পক্ষে সেতু নির্মাণ করা সম্ভব নয়। তাই, আশা করছি রাজ‍্য সরকার এগিয়ে আসবে সেতু নির্মাণের জন্য। দ্রুত সমস্যার সুরাহা হবে বলেও ধারণা আমাদের।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.