মধ্যমগ্রাম, 9 অক্টোবর: পৌরসভার নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় এবার সিবিআইয়ের র্যাডারে খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের ঘনিষ্ঠ মধ্যমগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষের সম্পত্তি ৷ সেই বিষয়ে তথ্য পেতে সোমবার মধ্যমগ্রাম পৌরসভায় গিয়ে তাঁকে দীর্ঘক্ষণ জেরা করলেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা ৷ সূত্রের খবর, জেরা পর্বে নিমাই ঘোষের কাছে তাঁর সম্পত্তির খতিয়ান জানতে চাওয়া হয় ৷
খাদ্যমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ নিমাই ঘোষের কতগুলি বাড়ি, ফ্ল্যাট, গাড়ি ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে ? সেই বিষয়েও এদিন তথ্য আদায়ের চেষ্টা করেন সিবিআই আধিকারিকরা ৷ মধ্যমগ্রাম পৌরসভার চেয়ারম্যানের বয়ান অনুযায়ী সম্পত্তির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে তাঁর প্যান এবং আধার কার্ডও চেয়ে পাঠানো হয়েছে ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, অয়ন শীলের সংস্থাকে বরাত দেওয়ার কথা স্বীকার করলেও নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও অস্বচ্ছতা হয়নি বলে দাবি করেছেন তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভার চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষ ৷
রবিবারের পর সোমবারও পৌরনিয়োগ দুর্নীতি মামলায় তেড়েফুঁড়ে তদন্তে সিবিআই ৷ উলুবেড়িয়া, ডায়মন্ডহারবার, রাণাঘাট পৌরসভায় হানার পর এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের নজরে মধ্যমগ্রাম পৌরসভা ৷ কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পৌরসভা ঘিরে এ দিন চলে ম্যারাথন তল্লাশি অভিযান ৷ প্রথমে সিবিআইয়ের বিশেষ টিম পৌঁছয় পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসার রাজেন্দ্রনাথ মাহাতোর ঘরে ৷ সেখানে গিয়ে পৌরসভার 2014-2018 সালের নিয়োগ নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলে ৷ একাধিক নথিও সংগ্রহ করা হয় এক্সিকিউটিভ অফিসারের কাছ থেকে ৷
এর আগে গত বৃহস্পতিবার খাদ্যমন্ত্রী রথীন ঘোষের বাড়িতে ইডি'র তল্লাশি চলে ৷ তিনি চেয়ারম্যান থাকাকালীন এই পৌরসভায় কোনও দুর্নীতি হয়েছে কি না, জানতে চাওয়া হয় ৷ সেদিন ইডির তদন্তকারী দলের তল্লাশি অভিযানের হাত থেকে বাদ যায়নি মধ্যমগ্রাম পৌরসভার এক্সিকিউটিভ অফিসারের ঘরও ৷ তাঁর চারদিনের মাথায় ফের মধ্যমগ্রাম পৌরসভায় এই সিবিআই হানা ৷
আরও পড়ুন: রাজভবন চত্বরে ধরনা করা গেলে নব মহাকরণের সামনে কর্মসূচি কেন নয় ? রাজ্যকে প্রশ্ন হাইকোর্টের
সোমবার সাড়ে বারোটা নাগাদ সিবিআইয়ের ছয় সদস্যের টিম এসে পৌঁছয় মধ্যমগ্রাম পৌরসভায় ৷ পৌরপ্রধান নিমাই ঘোষের ঘর কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানদের ঘেরাটোপে রেখে তল্লাশি অভিযান শুরু হয় ৷ এরপর এক্সিকিউটিভ অফিসারের ঘরে ঢুকে বিভিন্ন নথিপত্র খতিয়ে দেখেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা ৷ তারই মধ্যে সিবিআইয়ের আধিকারিকরা চেয়ারম্যান নিমাই ঘোষের ঘরে ঢুকে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন ৷ চেয়ারম্যানের সম্পত্তির খতিয়ানের তথ্য নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার তরফে ৷ প্রায় চার ঘণ্টা মধ্যমগ্রাম পৌরসভায় ছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা ৷
সিবিআইয়ের এই অভিযান ও জিজ্ঞাসাবাদ নিয়ে নিমাই ঘোষ বলেন, "যা যা জানতে চেয়েছিলেন সিবিআইয়ের আধিকারিকরা, সবটাই ওদের জানিয়েছি ৷ মূলত আমার এবং মন্ত্রী রথীন ঘোষের সম্পত্তি নিয়েই বেশি জানার চেষ্টা করেন তাঁরা ৷ ওদের বলেছি আমি আমার পৈতৃক বাড়িতে থাকি ৷ আলাদা কোনও ফ্ল্যাট কিংবা বাড়ি আমার নেই ৷ ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে একটিই ৷ রথীন ঘোষও তাঁর পৈতৃক বাড়িতে চার ভাইকে নিয়ে থাকেন ৷ রথীন ঘোষ এবং আমার চেয়ারম্যানের সময়কালে পৌরসভায় কোনও বেআইনি নিয়োগ হয়নি, এটুকু বলতে পারি ৷ সমস্ত তথ্য এবং কাগজপত্র রয়েছে ৷ সেই কাগজপত্র পাঠানোও হয়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে ৷ এখনও দেখতে চাইলে ওরা দেখতে পারে ৷ আমাদের কোনও অসুবিধা নেই ৷"