বারাসত, 28 মে: সামনেই 34 নম্বর জাতীয় সড়ক। কয়েক মিটারের মধ্যে রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি স্কুল। তাছাড়া রয়েছে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তারপরও লকডাউনের মধ্যে এমন একটি জায়গায় নতুন মদের দোকান খোলার লাইসেন্স দেওয়ার অভিযোগ উঠল প্রশাসনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ, লাইসেন্স পাওয়ার পরই জনবহুল এলাকায় সেই মদের দোকান খোলার চেষ্টাও চলছে। যদিও, তার আগেই এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলনে নেমে প্রতিবাদ জানাল স্থানীয় BJP নেতৃত্ব । এমনকী মদের দোকানের শাটারে পোস্টার সাঁটিয়ে দলীয় পতাকা টাঙিয়ে বিক্ষোভও দেখান দলের কর্মীরা । বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এই বিক্ষোভ। পরে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে নিয়ে স্থানীয় থানায় গিয়ে মদের দোকান বন্ধের দাবিতে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয় BJP-র তরফে। ঘটনাটি বারাসত পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের।
কোরোনা মোকাবিলায় দেশজুড়ে চতুর্থ দফার লকডাউন চলছে। তার আগেই লকডাউন শিথিল হতেই রাজ্যের বিভিন্ন মদের দোকান খোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সরকারের তরফে। লকডাউনের নিয়মবিধি মেনে মদের দোকান খোলার নির্দেশিকা জারি করা হলেও বেশিরভাগ মদের দোকানেই দেখা গেছে অনিয়মের ছবি। গা ঘেঁষাঘেঁষি করেই চলেছে মদ কেনাবেচা। যা দেখে শিউরে উঠেছেন অনেকেই। এরই মধ্যে এবার রেড জ়োন বারাসতের জনবহুল এলাকায় নতুন মদের দোকান খোলার ছাড়পত্র দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রশাসনের বিরুদ্ধে। পৌরসভার তিন নম্বর ওয়ার্ডের মালঞ্চ এলাকায় জাতীয় সড়কের পাশেই ওই মদের দোকান খোলার চেষ্টা চলছে বলে অভিযোগ। মদের দোকানের কর্মীদের তৎপরতা বাড়ায় নজর এড়ায়নি এলাকার বাসিন্দাদের। বিষয়টি কানে আসে স্থানীয় BJP নেতৃত্বেরও। এরপরই,আজ সকালে স্থানীয় লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই মদের দোকানের সামনে বিক্ষোভ দেখায় গেরুয়া শিবির । বেশ কিছুক্ষণ ধরে চলে এই বিক্ষোভ। সেই সঙ্গে,দোকানের শাটারে পোস্টার সাঁটিয়ে দলীয় পতাকাও লাগিয়ে দেওয়া হয় । সাময়িক উত্তেজনা ছড়ায় সেখানে। পরে, মদের দোকান বন্ধের দাবিতে এলাকার লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে বারাসত থানায় গিয়ে স্মারকলিপিও জমা দেয় BJP নেতৃত্ব।
এই বিষয়ে BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার নেতা প্রতীক চট্টোপাধ্যায় বলেন, "দোকান থেকে 500 মিটারের মধ্যে সরকারি স্কুল রয়েছে। 100-150 মিটারের মধ্যে আরও দু'টি বাচ্চাদের বেসরকারি স্কুল রয়েছে। দোকানের সামনেই জাতীয় সড়ক। জাতীয় সড়কের ওপারে ডায়াগনস্টিক সেন্টার। তারপরও কীভাবে এমন জনবহুল এলাকায় মদের দোকান খোলার লাইসেন্স দেওয়া হয়, সেটাই আশ্চর্যের।" তাঁর অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব ও প্রশাসনের একাংশের মদতেই মদের দোকান খোলার ছাড়পত্র মিলেছে। জনবহুল এলাকায় কিছুতেই ওই মদের দোকান খুলতে দেওয়া হবে না। তারজন্য বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে হলেও তারা প্রস্তুত।
এদিকে, BJP-র অভিযোগ অস্বীকার করে বারাসত পৌরসভার বোর্ড অফ অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সদস্য ও কাউন্সিলর অশনী মুখোপাধ্যায় বলেন, "এরকম কোনও ঘটনার কথা আমার জানা নেই। মদের দোকানের লাইসেন্স স্টেট এক্সাইজ ডিপার্টমেন্ট থেকে দেওয়া হয়ে থাকে। এখানে স্থানীয় কোনও কাউন্সিলর কিংবা পৌরসভার অনুমোদন লাগে না। এটাই সিস্টেম। এই সিস্টেমের মধ্যেই সরকার চলে।"
অন্যদিকে, বিষয়টি নিয়ে বারাসতের মহকুমাশাসক তাপস বিশ্বাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। বারবার তাঁকে ফোন করা হলেও ফোন ধরেননি তিনি।