গাইঘাটা, 10 নভেম্বর: চা বাঙালি প্রথম পছন্দের না হলেও বর্তমান সময়ে চা বাঙালি জীবনের সঙ্গে জড়িয়ে গিয়েছে (Tea Stall in Gaighata)। সকালে এক কাপ চা না হলে যেন দিনই শুরু হয় না। তাই তো আজ চায়েও ভ্যারাইটি এসেছে। কখন চায়ের জন্য কখন বা চায়ের দোকানের নামের জন্য বরাবরই চার্চায় থাকে চা। এই তো কিছুদিন আগের কথা হাবড়ার ইংরেজিতে এমএ পাশ চাওয়ালিকে নিয়ে উত্তাল হয়েছিল নেট পাড়া। তার পরে দেখে গিয়েছে বিএড চাওলাকে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন 'বিশ্রী চা'। কি ভাবছেন এমন চা আবার হয় নাকি.? হ্যাঁ ঠিকই শুনছেন। এমন চাও পাওয়া যায়। দামও সাধ্যের মধ্যে, মাত্র 10 টাকা। তাও আবার দীর্ঘ দশ বছর ধরে ক্রেতাদের কাছে প্রিয়। নাম ‘বিশ্রী চা‘ হলে কী হবে ? আসল রহস্য লুকিয়ে আছে স্বাদে ৷
উত্তর 24 পরগণার গাইঘাটা চাঁদপাড়া স্টেশনের 2 নম্বর স্টেশন গেলেই পাওয়া যাবে বিকাশ বসুর বিশ্রী চা। বিকাশ বাবুর হাতের তৈরি চায়ের স্বাদ নিতে বহু দূর থেকে মানুষ তার দোকানে ভীড় জমান। সকাল বিকাল স্থানীয় যুবকদের আড্ডা বসে স্টেশন চত্বরে। তবে তিনি কোনও এমএ বা বিএড চা বিক্রেতা নন ৷ বিকাশ বাবু জানান, উচ্চ মাধ্যমিকে আশা অনুয়ায়ী ফলাফল না-হওয়ায় 1990 সালে চাঁদপাড়া স্টেশনে চায়ের দোকান করে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। প্রথমে তার দোকানের নাম ছিল ‘বিকাশের চা’। তবে ছন্দপতন ঘটে এক বিক্রেতার মুখে বিশ্রী চা কথাটা শুনে ৷ এই প্রসঙ্গেই বিকাশ বলেন, "বছর দশেক আগে দুই ব্যক্তি চা খেতে এসেছিল , যার মধ্যে একজন চা খেয়ে বলে উঠেন কী "বিশ্রী চা"। যা আঘাত করেছিল তাঁকে। সেই থেকে তিনি তার দোকানের নাম পরিবর্তন করে নাম রাখেন ‘বিশ্রী চা‘।"
আরও পড়ুন: কোভিডে কাজ হারিয়ে বাঁকুড়ার বিটেক ইঞ্জিনিয়ার এখন চা-বিক্রেতা
বিকাশ বাবুর দুই মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে সংসার। এই চায়ের দোকানের উপরে চার জনের জীবন সুখে অতিবাহিত হয়ে যায়। এই দোকানের উপার্জনে দুই মেয়ের পড়াশোনার খরচও চলে। বড় মেয়ে বিএ দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। বিকাশ বাবুর কথায়, প্রতিদিন সকালে দোকান খুলতে এসে যখন তিনি দোকানের নাম দেখেন তখন ভালো চা বানানোর অনুপ্রেরণা যোগায় তাঁকে। প্রতিনিয়ত তিনি চায়ের স্বাদ ভালো করার চেষ্টা করেন। আর সেই কারনে হয়তো আজ বিকাশ বাবু বিশ্রী চায়ের দোকানে চা সকলের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছে। ঠাকুরনগর, চাঁদপাড়া ও বনগাঁ-সহ বিভিন্ন জয়গা থেকে মানুষ তাঁর দোকানে চা খেতে আসেন।