বারাসত, 11 এপ্রিল : মাত্র কয়েক ঘণ্টার ব্যবধান । তারই মধ্যে প্রতিপক্ষ বিজেপি ও তৃণমূলের দুই হেভিওয়েট সেনাপতির নির্বাচনী জনসভা । একজন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । অপরজন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । আগামীকাল অর্থাৎ সোমবার এই দুই প্রধান সেনাপতির নির্বাচনী জনসভা ঘিরে সরগরম উত্তর 24 পরগনার জেলা সদর বারাসত । ইতিমধ্যে তা নিয়ে রাজনৈতিক তরজায় জড়িয়েছে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়ই । হাইভোল্টেজ এই দুই সভা ঘিরে চাপ বেড়েছে পুলিশ প্রশাসনেও । সুষ্ঠভাবে সভা সম্পন্ন করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের কাছে ।
আগামী 17 এপ্রিল পঞ্চম দফায় উত্তর 24 পরগনার 16টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ । বারাসত, মধ্যমগ্রাম সহ বসিরহাট মহকুমার সাতটি কেন্দ্রেও ভোট রয়েছে । বারাসত, মধ্যমগ্রাম সহ সন্নিহিত বিধানসভার বিজেপি প্রার্থীদের সমর্থনে সোমবার বারাসতের কাছারি ময়দানে জনসভা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । ওইদিন বিকেল তিনটে নাগাদ সভাস্থলে পৌঁছাবেন প্রধানমন্ত্রী ।
একই দিন দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে বারাসতে জনসভা করতে আসছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল এগারোটা নাগাদ বারাসত স্টেডিয়ামে সভা করবেন তিনি । ফলে, এক কিলোমিটারের ব্যবধানে প্রতিপক্ষের দুই প্রধান সেনাপতির জনসভা ঘিরে রাজনৈতিক উত্তাপ বাড়তে শুরু করেছে ৷
তবে সভার এই উত্তাপ শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগে থেকেই । একইদিনে কাছারি ময়দানে মোদি-মমতার সভার জন্য বিজেপি ও তৃণমূল উভয়ই অনুমতি চেয়েছিল জেলা প্রশাসনের কাছে । যদিও বিজেপি আগে সভার অনুমোদনের জন্য আবেদন করায় তাদেরই অনুমতি দেওয়া হয় । কিন্তু নাছোড়বান্দা তৃণমূল নেতৃত্বও একইদিনে মমতার সভার আয়োজন করতে চাওয়ায় বিপাকে পড়ে প্রশাসন । শেষে বিকল্প হিসেবে তাদের বারাসত স্টেডিয়ামে সভা করার অনুমতি দেওয়া হয় । আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর ।
এই বিষয়ে বিজেপির বারাসত সাংগঠনিক জেলার কনভেনার অনুপ দাস বলেন, "পরিকল্পনা করে মোদির সভার দিনে তৃণমূল সভার আয়োজন করেছে । এই পরিকল্পনায় পুলিশ প্রশাসনেরও যোগসাজশ রয়েছে । 12 এপ্রিল প্রধানমন্ত্রীর বারাসতের সভা পূর্বনির্ধারিত । আমরা আগেই জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে সভার অনুমতি নিয়েছি ।’’ তা সত্বেও কীভাবে একইদিনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার অনুমতি দেওয়া হল তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি ।
আরও পড়ুন : 2 মে রাজভবনে পদত্যাগপত্র জমা দিতে হবে মুখ্যমন্ত্রীকে : শুভেন্দু
যদিও পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করে পাল্টা বিজেপির বিরুদ্ধেই একের পর এক মাঠ দখল করে সভা করতে না দেওয়ার অভিযোগ এনেছেন বারাসত শহর তৃণমূলের সভাপতি অশনি মুখোপাধ্যায় । তিনি বলেন, "ওরাই (বিজেপি)পরিকল্পনা করে একই মাঠ 5-6 দিন ধরে বুক করে রাখছে । যাতে অন্য কোনও দল সভা করতে না পারে । যেহেতু মুখ্যমন্ত্রীকে বিভিন্ন জায়গায় ছুটতে হচ্ছে সভা করার জন্য । সেই কারণে ওইদিন বারাসত স্টেডিয়ামে সভার আয়োজন করতে হয়েছে ।’’ এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল ।