বারাসত, 11 অক্টোবর : অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় ধৃত গৃহশিক্ষক বিপুলচন্দ্র বিশ্বাসের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে তৃণমূল ও BJP-র মধ্যে শুরু হয়েছে জোর চাপানউতোর । গ্রেপ্তার হওয়ার পর ধৃতের স্ত্রী দাবি করেছিলেন BJP করার অভিযোগে তার স্বামীকে ফাঁসানো হয়েছে । কিন্তু এর 24 ঘণ্টার মধ্যেই উলটো সুর শোনা গেল BJP-র বারাসত সাংগঠনিক জেলার সভাপতি শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের গলাতে ।
আজ বিকেলে বারাসতের সুভাষ পল্লিতে নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করার পর তিনি দাবি করেন, "ধৃত ওই গৃহশিক্ষকের সঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই । তৃণমূলের প্রলোভন ও চাপের কাছে তার স্ত্রী BJP-র কথা বলতে বাধ্য হয়েছেন । তৃণমূলের কাজই হল BJP-র বিরুদ্ধে বদনাম করা । আমরা চায় ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয় । নির্যাতিতার পরিবারের পাশে রয়েছি আমরা ।"
যদিও BJP-র জেলা সভাপতির এই দাবি উড়িয়ে স্থানীয় তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর মিলন সরদার বলেন, "BJP তো এখন চাইবে ধৃতের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি করার । কারণ,ধৃত গৃহশিক্ষকের স্ত্রী-ই সংবাদ মাধ্যমের কাছে দাবি করেছেন তার স্বামী BJP করার অভিযোগে শাসক দল নাকি মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়েছে । তাই এই নির্যাতনের ঘটনার সঙ্গে যে BJP জড়িত তা পরিষ্কার হয়ে গেছে । এখন তো এসব কথা বলবেই BJP-র নেতারা । আমাদের কাউকে প্রলোভন কিংবা চাপ দিতে হয়না । এসব কাজ BJP করতে অভ্যস্ত ।"
এদিকে, তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটরের BJP যোগের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে খোদ নির্যাতিতার দাদু । তিনি বলেন, "ধৃত গৃহশিক্ষক এলাকায় কখনও BJP করত না । তাকে বরং CPI(M)করতে দেখেছি । কেন যে তাকে BJP কর্মী বলা হচ্ছে তা আমরা বুঝতে পারছি না । ঘটনার পর স্থানীয় কো-অর্ডিনেটরকে সেই কথা বলাও হয়েছিল । তা সত্বেও অযথা এই ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে । এটা না করে দোষীরা যাতে কঠোর শাস্তি পায় সেদিকে দেখা উচিত সকলের ।"
গণধর্ষণের ঘটনার প্রতিবাদে আজ বিকেলে বারাসতের সুভাষ পল্লিতে 100 মিটারের মধ্যেই যুযুধান তৃণমূল ও BJP দু'পক্ষের মিছিল পালটা মিছিলে তপ্ত হয়ে উঠে এলাকা । হয় সভাও । তৃণমূল ও BJP উভয়ই পুলিশ প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়ে রাজনৈতিক কর্মসূচি করার দাবি করলেও কীভাবে 100 মিটারের মধ্যে সেই কর্মসূচির অনুমতি মিলল তা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন । সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, অপ্রীতিকর কোনও ঘটনা এড়াতে ঘটনাস্থানে মোতায়েন ছিল না কোনও পুলিশকর্মী ।
যদিও শেষ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবেই সম্পন্ন হয়েছে শাসক ও গেরুয়া শিবিরের এই রাজনৈতিক কর্মসূচি । অপরদিকে,গণধর্ষণ কাণ্ডে যোগসাজশের অভিযোগে স্বপন সামন্ত ও তার স্ত্রী শান্তা-কে গ্রেপ্তার করেছে বারাসত থানার পুলিশ । গতকাল রাতে বারাসতের চিকেন মোড়ের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ওই দম্পতিকে । পুলিশ জানতে পেরেছে সামন্ত দম্পতির বাড়িতেই ওই ছাত্রীকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল । আজ দুপুরে ধৃত সামন্ত দম্পতিকে বারাসত আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জেল হেপাজতের নির্দেশ দেন ।