বারাসত, 6 নভেম্বর : এ যেন উলটপুরাণ! ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় যখন যমের দুয়ারে কাঁটা দিতে ব্য়স্ত বোনেরা, তখন ব্যতিক্রমী ছবি ধরা পড়ল উত্তর ২৪ পরগণার জেলা সদর বারাসতে। 'সমন্বয়ে'র (সামাজিক সংগঠন) উদ্যোগে ভাইফোঁটার সকালে সেখানে আয়োজন করা হয়েছিল বোনফোঁটার। চন্দনের ফোঁটায় বোনেদের মঙ্গল কামনা করলেন সংগঠনের দাদারা। রেলপাড়ের ঝুপড়ি কিংবা রাস্তার ধারের বস্তিতে থাকা শতাধিক মহিলাকে ফোঁটা দিল সমন্বয়।
করোনা অতিমারিতে এমনিতেই বিপর্যস্ত মানুষের জীবন-জীবিকা । গত দু'বছরে কাজ হারিয়েছেন অসংখ্য মানুষ। আর কাজ হারিয়ে সংসার চালানোই যখন দায়, তখন দুর্মূল্যের বাজারে ভাইফোঁটার পঞ্চব্যঞ্জন জোগাড় বিলাসিতাই বটে ৷ তাই বোনেদের স্বপ্নপূরণ করতে ভাইফোঁটার দিন এগিয়ে এল 'সমন্বয়ে'র সদস্যরা। বোনফোঁটার উপহার স্বরূপ বোনেদের হাতে তুলে দেওয়া হল হেঁশেলের নিত্যনৈমিত্তিক নানা জিনিস ৷ সেই তালিকাও বেশ লম্বা ৷ শেষে ছিল অবশ্যই মিষ্টি দই এবং নতুন পোশাক। উদ্যোক্তাদের দাবি, অন্তত ২০ রকমের খাদ্যসামগ্রী এদিন উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়েছে গরিব বোনেদের হাতে, যাতে বাড়িতে গিয়ে ভাইকে ফোঁটা দিতে কোনও অসুবিধা না হয় তাঁদের।
ভাইফোঁটার দিন এমন অভিনব উদ্যোগে সামিল হয়ে উপহার পেয়ে স্বভাবতই খুশি বোনেরা। তাদের মধ্য়ে একজনের কথায়, "কোভিড পরিস্থিতিতে কাজ হারিয়ে যেখানে সংসার চালাতে গিয়ে কালঘাম ছুটছে পরিবারের, সেখানে ফোঁটা দিয়ে সমন্বয়ের দাদারা যেভাবে পাশে দাঁড়াল তা এককথায় অনবদ্য। তারা সহযোগিতা করায় খুব ভাল লাগছে।"
আরও পড়ুন : আদিবাসী দিদির থেকে ভাইফোঁটা নিলেন অধীর
এ বিষয়ে সমন্বয় সংগঠনের সদস্য রজত বিশ্বাস বলেন, "ইচ্ছে থাকলেও করোনা অতিমারির জেরে গরিব বোনেরা ঠিকমতো ভাইফোঁটা পালন করতে পারছেন না। তাদের সমস্যার কথা মাথায় রেখে এবারও আমরা এমন অভিনব উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। আমরা চাই দুঃস্থ বোনেরা নিরোগ এবং সুস্থ থাকুক। সেই জন্য তাদের মঙ্গল কামনায় বোনফোঁটার আয়োজন করেছি আমরা ৷" কর্মসূচিতে হাজির হয়ে সমন্বয় সংগঠনের এই কর্মকাণ্ডের প্রশংসা করেছেন জেলা পরিষদের নারী ও শিশু কল্যাণ কর্মাধ্যক্ষ ও তৃণমূল নেত্রী রেহেনা খাতুন।