বারাসত, 18 অগস্ট: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথমবর্ষের ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর ঘটনায় নাম জড়িয়েছে উত্তর 24 পরগনার বারাসতের বাসিন্দা অরিত্র মজুমদার ওরফে আলুর । তিনি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ফেটসু সংগঠনের চেয়ারপার্সন পদে বর্তমানে রয়েছেন । ছাত্রের রহস্যমৃত্যুর পর থেকেই খোঁজ মিলছে না অরিত্রের ।
শুক্রবার বারাসত নবপল্লী এলাকায় অরিত্র মজুমদারের খোঁজে ইটিভি ভারতের প্রতিনিধি তাঁর বাড়িতে গেলেও সেখানে দেখা মেলেনি । বারবার ডেকেও কারও কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যায়নি বাড়ির ভিতর থেকে । তবে জানা গিয়েছে, অরিত্রদের অভিজাত পরিবার । বাবা তপন মজুমদার নামী ব্যবসাদার । মা একসময় জেলা পরিষদে চাকরি করতেন ।
সম্ভ্রান্ত সেই পরিবারের সন্তানের নামই কি না জড়িয়েছে যাদবপুরের প্রথম বর্ষের ছাত্রের রহস্য মৃত্যুর ঘটনায় ! এই বিষয়টি কিছুটা অবিশ্বাস্য মনে হয়েছে পাড়া-প্রতিবেশীদের । প্রতিবেশীদের কথায়, কয়েকদিন ধরেই সেভাবে অরিত্রর বাবা-মাকে দেখা যাচ্ছে না । বাড়িতে আদৌও আছেন কি না, সেই বিষয়ে কিছুই জানেন না তাঁরা । যদিও ছোটবেলা থেকে অরিত্রর ব্যবহারের মধ্যে খারাপ কিছু তাঁরা দেখেননি বলেই দাবি করেছেন ।
আরও পড়ুন: ‘লজ্জাজনক’, যাদবপুরের পড়ুয়া মৃত্যুতে মুখ খুললেন মহারাজ
যাদবপুরে ছাত্রমৃত্যুতে সিনিয়র-প্রাক্তনীদের ভূমিকা: যাদবপুরকাণ্ডে প্রথম থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র দাদা ও প্রাক্তনীদের একাংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । ঘটনার পর এদেরই অনেকে আসরে নেমে ছাত্র মৃত্যুর বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে বলে অভিযোগ । সেই সূত্রেই উঠেছে 'শিট' ও 'আলু'-র নাম৷ মনে করা হচ্ছে প্রাক্তন ছাত্র সৈকত শিটকেই শিট বলে উল্লেখ করা হয়েছে ৷ আর আলু-ই হলেন অরিত্র মজুমদার । ফলে, যাদবপুরকাণ্ডে এই দু'জনের ভূমিকায় এখন আতস কাঁচের নিচে ! ইতিমধ্যে, অরিত্র এবং সৈকতের নামে যাদবপুর ক্যাম্পাসে পোস্টারও পড়েছে । পোস্টারে কোথায় তাঁরা রয়েছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের একাংশ ।
অরিত্র মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ: ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, ঘটনার পর তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেন হস্টেলে গিয়ে এই ঘটনা যাতে বাইরে না আসে, তা ড্যামেজ কন্ট্রোল করার চেষ্টা করেছিলেন । শুধু তাই নয়, পদাধিকারবলে তিনি এনিয়ে একাধিকবার বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বৈঠকও করেন বলে অভিযোগ উঠেছে ।
আরও পড়ুন: ছাত্রকে হাসপাতালে ভরতির পর পুলিশের হাত থেকে বাঁচার নীল নকশা সাজিয়েছিলেন সৌরভ
তাঁকে ঘিরে সন্দেহ আরও জোরালো হয়েছে, ঘটনার পর তাঁর গা-ঢাকা দেওয়া নিয়ে । কিন্তু, প্রশ্ন হল কোথায় অরিত্র গা-ঢাকা দিয়ে রয়েছেন ! একটি সূত্র বলছে, তিনি জম্মু কাশ্মীরে পালিয়ে গিয়েছেন ! অন্য সূত্র বলছে, অন্য কোথাও গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারেন ফ্যাকাল্টি অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজির স্টুডেন্টস ইউনিয়নের চেয়ারপার্সন অরিত্র মজুমদার । ফলে তাঁর খোঁজ না পাওয়া পর্যন্ত এই নিয়ে কিছু নিশ্চিত করা বলা যাবে না বলে কোনও কোনও মহলের মত ৷