বারাসত, 8 জুলাই: ফের আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ । এবার কাঠগড়ায় তৃণমূল পরিচালিত কদম্বগাছি গ্রাম পঞ্চায়েত । অভিযোগ, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন । সরকারি টাকা পেয়েছেন পঞ্চায়েত প্রধান, উপপ্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যদের আত্মীয়রা । এই নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে কদম্বগাছির পূর্ব ইছাপুর গ্রামে । চাপে পড়ে অনেকে ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরতও দিয়েছেন ৷
আমফান ঘূর্ণিঝড়ে উত্তর 24 পরগনার বিভিন্ন এলাকার মতো কদম্বগাছির পূর্ব ইছাপুর গ্রামেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে । ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়াতে রাজ্য সরকার 20 হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে । সেই টাকা নিয়েই অভিযোগ । পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, কদম্বগাছি পঞ্চায়েত এলাকায় ইতিমধ্যে প্রায় 650 জন ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েছেন । অভিযোগ, সিংহভাগই পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সদস্যদের আত্মীয় । বিষয়টি চাউর হতেই কয়েকজন ক্ষতিপূরণের টাকা ফেরতও দেন । অন্যদিকে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা ক্ষতিপূরণের জন্য আবেদন করলেও সরকারি সাহায্য মেলেনি বলে অভিযোগ ।
এই বিষয়ে এক প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সানোয়ার আলি বলেন, "আমার কাঁচাবাড়ির ক্ষতি হলেও এখনও ক্ষতিপূরণের টাকা পাইনি । স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যকে বলেও কাজ হয়নি । মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাসের পর চার-পাঁচ দিন আগে ছোটো জাগুলিয়া BDO অফিসে গিয়ে আবেদনপত্র জমা দিয়েছি । সেখান থেকে এখনও কেউ বাড়িতে আসেনি। যারা প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত তাঁরা টাকা না পেলেও পঞ্চায়েত প্রধান, সদস্যদের আত্মীয়রা দিব্যি ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়ে গিয়েছে ।"
দুর্নীতি তথা স্বজনপোষণের অভিযোগ কার্যত মেনে নিয়েছেন কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা ও পঞ্চায়েত সদস্য সুদর্শন দেব । তিনি বলেন, "পঞ্চায়েত প্রধান ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ভুয়ো তালিকা তৈরি করেছে ৷ তাঁদের আত্মীয়দের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন । প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা বঞ্চিত হয়েছেন । প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি ।"
কদম্বগাছি পঞ্চায়েতের প্রধান গৌতম পাল বলেন, "সুদর্শনবাবু আমার দিকে আঙুল তোলার আগে নিজের দিকে তাকান ৷ উনি দীর্ঘদিন পঞ্চায়েত অফিসে আসেন না। এলাকাতেও পরিষেবা দেন না । আমফানের ক্ষতিপূরণ নিয়ে সঠিক তথ্য জানেন না উনি ৷"
তবে, তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে ভুলত্রুটি থাকতে পারে বলে মনে করছেন পঞ্চায়েত প্রধান । ত্রুটি শুধরে নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি ।