আমডাঙা, 20 নভেম্বর: চারদিন পার ! আমডাঙায় তৃণমূল নেতা খুনে মূল অভিযুক্ত তোয়েব আলি মণ্ডল-সহ বাকি তিনজন এখনও অধরা। এই পরিস্থিতিতে নিহত পঞ্চায়েত প্রধান রূপচাঁদ মণ্ডলের পরিবার-পরিজনের ক্ষোভের আঁচ কার্যত গিয়ে পড়ল তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমানের উপর। বিধায়ককে নিহত তৃণমূল নেতার বাড়িতেই ঘেরাও করে একের পর এক প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়েছেন রূপচাঁদের আত্মীয় স্বজন থেকে গ্রামবাসীদের একাংশ।কেন বাকি আসামীদের ধরা হচ্ছে না, পুলিশই বা কী করছে, বিধায়ক আসামীদের ধরতে কেন পুলিশের উপর চাপ তৈরি করছে না, এমনই সব প্রশ্ন তুলে স্থানীয় পুলিশ-প্রশাসন এবং বিধায়কের বিরুদ্ধে রীতিমতো সরব হয়েছে নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের সদস্যরা।
শুধু তাই নয়, টাকা নিয়ে পুলিশ খুনের ঘটনার মূল অভিযুক্ত তোয়েব আলিকে ছেড়ে দিয়েছে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ তোলেন বিধায়কের কাছে।ক্ষোভের মুখে পড়ে শেষে আমডাঙা থানার আইসি-কে ফোন করতে বাধ্য হন রফিকুর রহমান। এবিষয়ে ফোনে কথাও বলেন তিনি। নেতা খুনে তিনদিনের মধ্যে বাকি অভিযুক্তরা গ্রেফতার না হলে শাসকদলের বিধায়ক থানার আইসি-র বিরুদ্ধে নালিশ জানাবেন পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায়ের কাছে। ফোনে সে কথা তিনি জানিয়েও দেন আমডাঙা থানার আইসি-কে। তাতেই আশ্বস্ত হয়ে ঘেরাও তুলে নেওয়া হয় বিক্ষোভকারীদের তরফে। তবে, টাকার বিনিময়ে তৃণমূল নেতা খুনে অভিযুক্ত তোয়েব আলিকে ছেড়ে দেওয়ার কথা অবশ্য অস্বীকার করেছে আমডাঙা থানার পুলিশ।
নিহত তৃণমূল নেতা রূপচাঁদ মণ্ডলের পারলৌকিক ক্রিয়াকর্ম ছিল সোমবার। তাতে অংশগ্রহণ করতে এদিন দুপুরের দিকে রূপচাঁদের সোনাডাঙার বাড়িতে যান আমডাঙার তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান। তৃণমূল নেতার বাড়ির সামনের কার্যালয়ে বসেন তিনি। এরপর বিধায়ককে দেখতে পেয়ে সেখানে জড়ো হতে শুরু করেন নিহত তৃণমূল নেতার আত্মীয় স্বজন এবং গ্রামবাসীদের একাংশ। তাঁকে ঘিরে শুরু হয় ক্ষোভ-বিক্ষোভ। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ কেন নিষ্ক্রিয়, অভিযুক্তদের বাড়িতে হামলার জন্য পুলিশ অপেক্ষা করে রয়েছে, নিহত তৃণমূল নেতার পরিবারের এক সদস্যের কাছ থেকে এমনই সব প্রশ্ন শুনে রীতিমতো তখন বিব্রত বোধ করেন বিধায়ক রফিকুর রহমান। শেষমেশ কোনও রকমে আইসি-র সঙ্গে কথা বলে বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করে হাফ ছেড়ে বাঁচেন তিনি।
এই বিষয়ে নিহত তৃণমূল নেতার আত্মীয় খাদিজা বিবি বলেন, "খুনের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত পুলিশ একজনকেই গ্রেফতার করেছে। বাকিদের কেন ধরা হচ্ছে না। তার জবাব দিতে হবে বিধায়ককে। আমার দেওর-কে চারজন মিলে হত্যা করেছে। একজনের পক্ষে এই খুন অসম্ভব ! আমরা চাই প্রত্যেকের ফাঁসি হোক। সেটা যেন প্রকাশ্যে। সবাই যেন সেই মৃত্যুদন্ড দেখতে পায় ৷" এদিকে, অস্বস্তির মুখে এনিয়ে সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করেছেন তৃণমূল বিধায়ক রফিকুর রহমান। তাঁর কথায়, "পরিবারের ক্ষোভ ন্যায় সঙ্গত। এনিয়ে আর কী বলব ! পুলিশ বলছে বাকি তিন অভিযুক্তকে ধরার চেষ্টা চলছে। আইসি-কে আমি তিনদিন সময় দিয়েছি। যদি এর মধ্যে বাকিরা গ্রেফতার না হয় তাহলে ওনার বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ জায়গায় অভিযোগ জানাব ৷"
আরও পড়ুন
সারেনি 'রেফার' রোগ ! দিনভর 4 হাসপাতালে ঘুরে বাড়ি ফিরতে হল রোগীকে, পরদিন মিলল চিকিৎসা