ETV Bharat / state

Shiksha ratna award : শিক্ষারত্ন সম্মান পাচ্ছেন অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক - Shiksha ratna award

অশোকনগর স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে তাঁর অবদান অনেকটাই ৷ 16 বছর আগের স্কুল আর বর্তমান স্কুলের মধ্যে ফারাক বিস্তর ৷ পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়েছে ৷ মনোযোগ বাড়াতে স্কুলগুলির সিঁড়ি ইতিহাসের সাল ও অঙ্কের সূত্রে সাজানো হয়েছে ৷ সাজিয়ে তুলেছেন স্কুল প্রাঙ্গণ ।

মনোজ ঘোষ
মনোজ ঘোষ
author img

By

Published : Sep 2, 2021, 6:06 PM IST

অশোকনগর, 2 সেপ্টেম্বর : ঈশ্বরচন্দ্র পুরস্কার, শিশু মিত্র পুরস্কার, টেলিগ্রাফ অ্যাওয়ার্ড-সহ একাধিক পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে । এবার সেখানে জুড়তে চলেছে শিক্ষারত্ন পুরস্কার । 5 সেপ্টেম্বর শিক্ষারত্নে ভূষিত হবেন অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষ । ইতিমধ্যে রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে তাঁর কাছে সেই বার্তা এসে পৌঁছেছে । এই খবর চাউর হতে খুশির হাওয়া অশোকনগর-সহ গোটা স্কুলজুড়ে । আপ্লুত মনোজবাবুও । তবে তাঁর কাছে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার মানে মানুষের ভালোবাসা । যা তিনি অনেক আগে থেকে ছাত্র-ছাত্রী ও অশোকনগরবাসীর কাছ থেকে পেয়ে আসছেন ।

মনোজবাবু বলেন, "পুরস্কার হচ্ছে ভাল কাজের সম্মান । ফলে পুরস্কার পেতে কার না ভাল লাগে । দিনকয়েক আগে আমি জানতে পারি, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক দিবসের দিনে আমাকে শিক্ষারত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে । স্বাভাবিকভাবে আমিও আনন্দিত হই । তবে আমাদের প্রত্যেকটা জিনিসের জন্য সকলের সমবেত অবদান রয়েছে । আজ হয়ত সম্মানটা আমার নামে এসেছে ৷ আমি পাচ্ছি । কিন্তু এর জন্য আমার আশেপাশে যত মানুষ আছেন, আমার স্কুলের সংলগ্ন মানুষ, আমার ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষাকর্মী, সহযোদ্ধা বন্ধু এবং অভিভাবক-অভিভাবিকা ৷ প্রত্যেকেই সমান অংশীদার ।’’ তাঁর কথায়, "এককভাবে কিছু করা যায় বলে আমি বিশ্বাস করি না ।"

আজ থেকে প্রায় 16 বছর আগে মনোজবাবু অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন । যদিও তখন এই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন হত । ছাত্রসংখ্যা ছিল মাত্র 37 জন । স্কুলের প্রায় 90 শতাংশ পড়ুয়া নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের । ফলে এলাকায় স্কুলছুটের সংখ্যাটা ছিল প্রচুর । তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করার পরে এলাকায় ঘুরে ঘুরে স্কুল ছুটের কারণ খুঁজে বের করেন । সকলকে সঙ্গে নিয়ে সেইসব স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করেন । শিক্ষাপ্রাঙ্গণ পড়ুয়াদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলেন তিনি । তাদের মনসংযোগ বাড়াতে স্কুলের সিঁড়িগুলি ইতিহাসের সাল ও অঙ্কের বিভিন্ন সূত্রে সাজিয়ে তুলেছেন । সাজিয়ে তোলেন স্কুল প্রাঙ্গণও । একে একে স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পঠন-পাঠন শুরু করান । আজ এই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় 1200-র কাছাকাছি । মনোজবাবুর ইচ্ছে, আগামী দিনে স্কুলে একটি গ্রিন জেনারেটরের ব্যবস্থা করা । পাশাপাশি, স্কুলের বর্জ্য পদার্থ গ্যাসে রূপান্তরিত করে মিড-ডে মিলের রান্নার কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা ।

শিক্ষারত্ন সম্মান পাচ্ছেন অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

আরও পড়ুন, Siksha Ratna : এবার শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হবেন মালদার জাতীয় শিক্ষক হরিস্বামী


স্কুলের সহ-শিক্ষক সুমন্ত মণ্ডল মনে করেন, এমন একজন শিক্ষকের আরও আগে শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাওয়ার দরকার ছিল । দেরিতে হলেও পুরস্কার পাওয়ায় খুশি তাঁরা । এমন একজন মহান শিক্ষকের সান্নিধ্যে কাজ করার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন । পড়ুয়ারা জানিয়েছে, তাদের প্রধান শিক্ষকের মতো শিক্ষক হয় না । তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের সন্তানের মত স্নেহ-যত্ন করে পড়ান । সবসময় তাদের পাশে থাকেন । প্রধান শিক্ষক শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাওয়ায় তারাও খুব আনন্দিত ।

স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বরঞ্জন রায় বলেন, "মনোজবাবু খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারেন । আর তার এই ক্ষমতা স্কুলের উন্নয়নের জন্য কাজে লাগিয়েছেন । বহু স্কুলছুট পড়ুয়াকে স্কুলমুখী করে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিয়েছেন । কীভাবে স্কুলের ও ছাত্র-ছাত্রীদের ভাল করা যায় সব সময় তিনি সেই কথাই ভাবেন । এমন একজন শিক্ষককে আমাদের এলাকার স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আমরা খুবই গর্বিত। তাঁর এই পুরস্কারের জন্য আমরাও খুশি ।" স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, পড়ুয়া সহ গোটা অশোকনগরবাসী এখন 5 তারিখ সেই শুভক্ষণের অপেক্ষায় রয়েছেন ।

অশোকনগর, 2 সেপ্টেম্বর : ঈশ্বরচন্দ্র পুরস্কার, শিশু মিত্র পুরস্কার, টেলিগ্রাফ অ্যাওয়ার্ড-সহ একাধিক পুরস্কার রয়েছে তাঁর ঝুলিতে । এবার সেখানে জুড়তে চলেছে শিক্ষারত্ন পুরস্কার । 5 সেপ্টেম্বর শিক্ষারত্নে ভূষিত হবেন অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণীভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মনোজ ঘোষ । ইতিমধ্যে রাজ্য শিক্ষা দফতর থেকে তাঁর কাছে সেই বার্তা এসে পৌঁছেছে । এই খবর চাউর হতে খুশির হাওয়া অশোকনগর-সহ গোটা স্কুলজুড়ে । আপ্লুত মনোজবাবুও । তবে তাঁর কাছে শ্রেষ্ঠ পুরস্কার মানে মানুষের ভালোবাসা । যা তিনি অনেক আগে থেকে ছাত্র-ছাত্রী ও অশোকনগরবাসীর কাছ থেকে পেয়ে আসছেন ।

মনোজবাবু বলেন, "পুরস্কার হচ্ছে ভাল কাজের সম্মান । ফলে পুরস্কার পেতে কার না ভাল লাগে । দিনকয়েক আগে আমি জানতে পারি, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষক দিবসের দিনে আমাকে শিক্ষারত্ন পুরস্কারে সম্মানিত করা হবে । স্বাভাবিকভাবে আমিও আনন্দিত হই । তবে আমাদের প্রত্যেকটা জিনিসের জন্য সকলের সমবেত অবদান রয়েছে । আজ হয়ত সম্মানটা আমার নামে এসেছে ৷ আমি পাচ্ছি । কিন্তু এর জন্য আমার আশেপাশে যত মানুষ আছেন, আমার স্কুলের সংলগ্ন মানুষ, আমার ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষাকর্মী, সহযোদ্ধা বন্ধু এবং অভিভাবক-অভিভাবিকা ৷ প্রত্যেকেই সমান অংশীদার ।’’ তাঁর কথায়, "এককভাবে কিছু করা যায় বলে আমি বিশ্বাস করি না ।"

আজ থেকে প্রায় 16 বছর আগে মনোজবাবু অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হয়ে আসেন । যদিও তখন এই স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পঠন-পাঠন হত । ছাত্রসংখ্যা ছিল মাত্র 37 জন । স্কুলের প্রায় 90 শতাংশ পড়ুয়া নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের । ফলে এলাকায় স্কুলছুটের সংখ্যাটা ছিল প্রচুর । তিনি স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করার পরে এলাকায় ঘুরে ঘুরে স্কুল ছুটের কারণ খুঁজে বের করেন । সকলকে সঙ্গে নিয়ে সেইসব স্কুলছুট পড়ুয়াদের স্কুলমুখী করেন । শিক্ষাপ্রাঙ্গণ পড়ুয়াদের কাছে আকর্ষণীয় করে তোলেন তিনি । তাদের মনসংযোগ বাড়াতে স্কুলের সিঁড়িগুলি ইতিহাসের সাল ও অঙ্কের বিভিন্ন সূত্রে সাজিয়ে তুলেছেন । সাজিয়ে তোলেন স্কুল প্রাঙ্গণও । একে একে স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত পঠন-পাঠন শুরু করান । আজ এই স্কুলে পড়ুয়া সংখ্যা প্রায় 1200-র কাছাকাছি । মনোজবাবুর ইচ্ছে, আগামী দিনে স্কুলে একটি গ্রিন জেনারেটরের ব্যবস্থা করা । পাশাপাশি, স্কুলের বর্জ্য পদার্থ গ্যাসে রূপান্তরিত করে মিড-ডে মিলের রান্নার কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তোলা ।

শিক্ষারত্ন সম্মান পাচ্ছেন অশোকনগর বিদ্যাসাগর বাণী ভবন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক

আরও পড়ুন, Siksha Ratna : এবার শিক্ষারত্ন সম্মানে ভূষিত হবেন মালদার জাতীয় শিক্ষক হরিস্বামী


স্কুলের সহ-শিক্ষক সুমন্ত মণ্ডল মনে করেন, এমন একজন শিক্ষকের আরও আগে শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাওয়ার দরকার ছিল । দেরিতে হলেও পুরস্কার পাওয়ায় খুশি তাঁরা । এমন একজন মহান শিক্ষকের সান্নিধ্যে কাজ করার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন । পড়ুয়ারা জানিয়েছে, তাদের প্রধান শিক্ষকের মতো শিক্ষক হয় না । তিনি ছাত্র-ছাত্রীদের নিজের সন্তানের মত স্নেহ-যত্ন করে পড়ান । সবসময় তাদের পাশে থাকেন । প্রধান শিক্ষক শিক্ষারত্ন পুরস্কার পাওয়ায় তারাও খুব আনন্দিত ।

স্থানীয় বাসিন্দা বিশ্বরঞ্জন রায় বলেন, "মনোজবাবু খুব সহজেই মানুষকে আপন করে নিতে পারেন । আর তার এই ক্ষমতা স্কুলের উন্নয়নের জন্য কাজে লাগিয়েছেন । বহু স্কুলছুট পড়ুয়াকে স্কুলমুখী করে তাদের ভবিষ্যৎ গড়ে দিয়েছেন । কীভাবে স্কুলের ও ছাত্র-ছাত্রীদের ভাল করা যায় সব সময় তিনি সেই কথাই ভাবেন । এমন একজন শিক্ষককে আমাদের এলাকার স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে পেয়ে আমরা খুবই গর্বিত। তাঁর এই পুরস্কারের জন্য আমরাও খুশি ।" স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকা, পড়ুয়া সহ গোটা অশোকনগরবাসী এখন 5 তারিখ সেই শুভক্ষণের অপেক্ষায় রয়েছেন ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.