বারাসত, 23 সেপ্টেম্বর : CBI আধিকারিক পরিচয় দিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে সাত লাখ টাকা প্রতারণার অভিযোগ । তদন্তে নেমে রাহুল চৌধুরি নামে ওই প্রতারককে গ্রেপ্তার করল পুলিশ । টালিগঞ্জের রিজেন্ট পার্ক এলাকা থেকে আজ সকালে তাকে প্রথমে আটক ও তারপর গ্রেপ্তার করা হয় । জানা গেছে, বারাসতের বিধান পার্ক এলাকায় বাড়িভাড়া নিয়ে থাকত সে ।
বারাসত পৌরসভার 23 নম্বর ওয়ার্ডের রামমোহন পল্লির বাসিন্দা অপর্ণা মজুমদার ও রঞ্জিত মজুমদার । বিধান মার্কেটে রঞ্জিতের সবজির দোকান হওয়ায় সেখানে তাদের ছেলে মিলন মাঝেমধ্যে আসত । ওই দোকানেই আলাপ রাহুলের সঙ্গে । তখন সে নিজেকে CBI আধিকারিক বলে পরিচয় দেয় । অপর্ণার বক্তব্য অনুযায়ী, এরপর হঠাৎই একদিন ছেলের কলকাতা পুলিশে চাকরি করিয়ে দেওয়ার প্রস্তাব দেয় রাহুল । জানায়, CBI আধিকারিক হওয়ার সুবাদে তার সঙ্গে কলকাতা পুলিশ ও লালবাজারের উপর মহলের সম্পর্ক রয়েছে । প্রমাণ হিসেবে সে CBI-এর ভুয়ো পরিচয়পত্র ও বেশকিছু পুলিশকর্তার ছবি দেখায় । তারপর রেজিস্ট্রেশন বাবদ প্রথমে 10 হাজার তারপর 2 লাখ টাকা নেয় । 2 লাখ নেওয়ার সময় ওই ভাড়াবাড়িতে তাদের কলকাতা পুলিশের ফর্ম ফিলাপ করানো হয় বলে জানান তিনি । আশ্বাস দেন, চিন্তার কোনও কারণ নেই, কলকাতা পুলিশে চাকরি হয়ে যাবে ।
10 হাজার, 2 লাখেই থামেনি সে । এরপর আরও টাকা হাতানোর লোভে চাকরি দিতে পারে এমন প্রামাণ্য অনেক নথি দেখাতে থাকে মজুমদার পরিবারকে । মিনলকে ফোনে কথা বলিয়ে দেয় পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও । তখন বিষয়টিকে সত্যি মনে হলেও পাঁচ লাখ টাকা দেওয়ার পর হুঁশ ফেরে সকলের । বুঝতে পারে আদতে সাত লাখ টাকা খোয়া গেছে তাদের । এরপরই 15 দিন আগে বারাসত থানায় অভিযোগ দায়ের করেন অপর্ণা । তারপর থেকেই ভুয়ো ওই CBI আধিকারিকের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছিল পুলিশ । শেষে খবর পেয়ে আজ সকালে টালিগঞ্জের রিজেন্ট পার্ক এলাকা থেকে তাকে আটক করে তদন্তকারী অফিসাররা । পরে গ্রেপ্তার করা হয় ।
এবিষয়ে অপর্ণা মজুমদার বলেন, "চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধাপে ধাপে আমার কাছ থেকে প্রায় পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছে ওই ব্যক্তি । এছাড়া কখনও সোনার আংটি, আবার কখনও নতুন জামা প্যান্ট দিতে হয়েছে তাকে । এমনভাবে আমাদের সামনে বিষয়টি উপস্থাপন করা হয়েছে যে বিশ্বাস করা ছাড়া উপায় ছিল না ।" এবিষয়ে তাঁর ছেলে মিলন বলেন, "কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলেছিল ওই ব্যক্তি । আমি মাধ্যমিকে অনুত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও সে আমাদের আশ্বাস দেয়, এতে চাকরির কোনও অসুবিধে হবে না । কখনও সে ফোনে কলকাতার পুলিশ কমিশনার, আবার কখনও লালবাজারের কোনও বড় কর্তার সঙ্গে এমনভাবে কথা বলিয়েছে যে, তা দেখে সবটা সত্যিই মনে হয়েছে । আমরা প্রতারিত তো হয়েছিই, আর কেউ যেন এমন লোকের হাতে প্রতারিত না হয় । সেইজন্য কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক তাকে ।"
এবিষয়ে উত্তর 24 পরগনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিশ্বচাঁদ ঠাকুর বলেন, "প্রতারণার অভিযোগে রাহুল নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । তাকে জেরা করে জানার চেষ্টা চলছে তার নাম সত্যিই রাহুল না কি অন্যকিছু ৷ এর পিছনে আর কেউ জড়িত আছে কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।"