শাসন, 2 এপ্রিল : শাসনের তেহাটা গ্রামে বোমাবাজির ঘটনায় গ্রেফতার হলেন পাঁচ তৃণমূল কর্মী ৷ ধৃতদের নাম শেখ জামিরুল হক, রবীন ঘোষ, দিলীপ ঘোষ, পঞ্চানন মণ্ডল ও ইয়ামিন মণ্ডল । শাসনের ঘোষপাড়া এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়েছে (5 TMC workers arrested in Shasan Bombing case) ৷
পুলিশ জানায়, এদিন ভোররাতে এই পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 448, 308, 427, 506 এবং 34 ও 9(বি) ধারায় মামলা রুজু হয়েছে । যদিও তাঁদের গ্রেফতারের পিছনে শাসকদলের একাংশের হাত রয়েছে বলে দাবি পরিবারের ।
ধৃতদের পরিবারের অভিযোগ, "চক্রান্ত করেই মিথ্যা মামলায় ওই পাঁচ তৃণমূল কর্মীকে ফাঁসানো হয়েছে । যাতে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর লোকজনের সুবিধা হয় ৷"
একটি খুনের মামলায় জামিনে মুক্ত হওয়ার পরও শাসনের তেহাটা গ্রামে ফিরতে পারছিলেন না মোতালেব আলি, গফফার আলি-সহ শাসকদলের আরও কয়েকজন । অভিযোগ, তাঁদের গ্রামে ঢুকতে বাধা দিচ্ছিলেন তৃণমূলেরই শাসন অঞ্চলের সভাপতি সহিদুল ইসলাম ও তাঁর দলবল । গ্রামে ঢুকতে না পেরে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন মোতালেব আলিরা । এরপর হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, গ্রাম ছাড়াদের দ্রুত এলাকায় ফেরাতে পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে হবে । তারপরও দীর্ঘদিন গ্রামছাড়া ছিলেন সকলে । এমনই অভিযোগ পরিবারের লোকেদের । তারই মধ্যে বৃহস্পতিবার রাতে এলাকার দখলদারি ঘিরে তেহাটা গ্রামে শুরু হয় দুষ্কৃতীদের বোমাবাজি । চার তৃণমূল কর্মীর বাড়ি লক্ষ্য করে এলোপাতাড়ি বোমাবাজি এবং হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মোতাবেক আলি ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে ।
রাতভর বোমাবাজিতে তটস্থ হয়ে পড়েন গ্রামবাসীরা । আতঙ্ক এতটাই গ্রাস করেছিল যে পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবারও ভয়ে কার্যত সিঁটিয়ে ছিল গোটা গ্রাম । তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরেই এই হামলা ও বোমাবাজির ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন গ্রামবাসীদের একাংশ । যদিও, তা মানতে রাজি হননি তৃণমূল বিধায়ক হাজি নুরুল ইসলাম । এবিষয়ে তাঁর পালটা দাবি ছিল, "এটা দুষ্কৃতী দলেরই কাজ । ঘটনার সঙ্গে দলের নাম পরিকল্পিতভাবে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে ৷"
আরও পড়ুন : রাতভর দুষ্কৃতীদের বোমাবাজিতে তপ্ত শাসন, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের অভিযোগ
এদিকে, এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দলের ফল বলে দাবি করেন ধৃত ইয়ামিন মণ্ডলের মেয়ে আসমা খাতুন ৷ তাঁর কথায়, "আমাদের পরিবারের সকলেই তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত । মজিদ মাস্টারের আমল থেকেই বাবা তৃণমূল দলটা করে আসছে । তা সত্ত্বেও চক্রান্ত করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে ইয়ামিন-সহ বাকিদের । অঞ্চল সভাপতি সহিদুল ইসলামের ইন্ধনেই পুলিশ এই কাজ করেছে । আমরা ন্যায় বিচার চাই ৷" হাইকোর্টের সামনে ভুল বার্তা পৌঁছে দিতেই সেদিন সহিদুল ও তাঁর দলবল তেহাটা গ্রামে বোমাবাজি করে বলেও বিস্ফোরক অভিযোগ করেন আসমা খাতুন । অন্যদিকে, আসমার এই অভিযোগ নিয়ে শাসন অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি সহিদুল ইসলামের কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি ৷