দেগঙ্গা, 3 অক্টাবর : পাড়ার যুবক খুন হওয়ার পরই গা ঢাকা দিয়েছিল অন্য যুবক । তাঁর বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও ছিল না । বান্ধবীর ফোনে আড়ি পেতে একমাস পরে তাঁকেই গ্রেপ্তার করল পুলিশ । ধৃতের নাম আরিফ আলি মোল্লা । ধৃতকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেপাজতে নেওয়া হয়েছে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, 2 সেপ্টেম্বর রাতে দেগঙ্গার বেড়াচাঁপা নন্দীপাড়ার বাসিন্দা সাইফুল মল্লিককে (32) ফোনে কেউ বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায় । ঘণ্টাখানেক পরে বাড়ির অদূরে আমবাগানের মধ্যে তাঁকে রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় । প্রথমে তাঁকে বারাসত জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয় । সেখান থেকে কলকাতার RG কর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয় । 8 সেপ্টেম্বর সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয় । কে বা কারা তাঁকে কুপিয়ে ছিল, তা জানা যায়নি । সাইফুলের স্ত্রী থানায় খুনের অভিযোগ করলেও কারও নাম ছিল না ।
সাইফুলের মৃত্যুর পর থেকে বাড়ির পাশের আরিফ আলি মোল্লা পালিয়ে যায় । তাঁর ফোনও সুইচড অফ ছিল । দু'দিন পরে আরিফের বান্ধবীকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না । বিষয়টা পুলিশের নজর এড়ায়নি । পুলিশও জাল পাততে শুরু করে । আড়ি পাতা হয় আরিফের বান্ধবীর মোবাইল ফোনে । সেই ফোন থেকেই আরিফ এলাকায় যোগাযোগ রাখছিল । অবশেষে মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে বর্ধমানের সুলতানপুর থেকে পুলিশ আরিফকে আটক করে ।
পুলিশের দাবি,দীর্ঘ জেরার পরে আরিফ সাইফুলকে খুন করার কথা কবুল করে । গতকাল তাকে গ্রেপ্তার করে বারাসত আদালতে পাঠানো হয় । বিচারক তাঁকে পাঁচ দিনের পুলিশি হেপাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন । বারাসতের পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "সাইফুলের খুনের ঘটনায় নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ ছিল না । মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে তদন্ত এগোনো হচ্ছিল । সেই সূত্র ধরেই আরিফকে বর্ধমান থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।"
খুনের কারণ সম্পর্কে পুলিশ জানিয়েছে, সাইফুল সুদের কারবার করতেন । আরিফুল তিন লাখ টাকা ধার নিয়েছিল । সেই টাকা শোধ করছিলেন না । তা নিয়ে দু'জনের মধ্যে একবার গোলমালও হয় । টাকা শোধ না দেওয়ার উদ্দেশ্যেই আরিফ সাইফুলকে খুন করেছে । পুলিশ সুপার বলেন, "খুনের মোটিভ ছিল ঋণের টাকা ফেরত না পাওয়ার আক্রোশ । ধৃতকে হেপাজতে নিয়ে আরও কিছু তথ্য জানার চেষ্টা চলছে।"