পুরুলিয়া, 3 এপ্রিল: পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বড়সড় দুর্নীতি সামনে এল পুরুলিয়ায় । খাতায় কলমে রয়েছে পুকুর, অথচ বাস্তবে সেই জায়গায় দেখা যাচ্ছে চাষের জমি । পুকুর খনন না-করেই পুরো টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠল তৃণমূল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে । ঘটনা জানাজানি হতেই ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন গ্রামবাসীরা । ঘটনার তদন্তের দাবি এবং দোষীদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা । ঘটনাটি পুরুলিয়া জেলার বরাবাজার ব্লকের শুকুরহুটু গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত শুকুরহুটু গ্রামের ।
2020-21 অর্থবর্ষে এমজিএনআরইজিএ সরকারি প্রকল্পে শুকুরহুটু গ্রামের বাসিন্দা পশুপতি মাহাতোর জমিতে পুকুর খননের জন্য বরাদ্দ হয় 2 লক্ষ টাকা । এতদিন এক চিমটেও মাটি কাটা হয়নি । খাঁ খাঁ করছে পুরো জমি । জমির পাশেই লাগানো হয়েছিল প্রকল্পের কাজের বোর্ড । কিন্তু সেই বোর্ড উপভোক্তা ব্যক্তিকে নিজের বাড়িতে রাখারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ । পুকুর খননই হয়নি । অথচ মাস্টাররোলে পুরো টাকাই উঠে গিয়েছে ৷ তা দেখেই চক্ষু চড়কগাছ গ্রামবাসীদের । সদ্য বিষয়টি জানাজানি হয়েছে ৷ আর তার পরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গ্রাম জুড়ে ।
যার জমিতে পুকুর খনন করার কথা সেই উপভোক্তা জমির মালিক নিরক্ষর । তাই গোটা দুর্নীতির বিষয়ে প্রথমে তিনি টেরই পাননি বলে জানান । পরে বিষয়টি জানতে পেরেই হতবাক তিনি । অভিযোগ, খাতায় কলমে সেই জমিকে দেখানো হয়েছে পুকুর । টাকাও উঠে গিয়েছে । অথচ এক কোদালও মাটি কাটা হয়নি সেই জমি থেকে । গোটা ঘটনায় অভিযোগের আঙ্গুল উঠেছে বরাবাজার ব্লকের তৃণমূল পরিচালিত শুকুরহুটু গ্রাম পঞ্চায়েতের দিকে । বিষয়টি নিয়ে যদিও পঞ্চায়েত প্রধান মুখে কুলুপ এঁটেছেন । ক্যামেরা দেখেই বাড়ির ভেতরে লুকিয়ে পড়লেন পঞ্চায়েত প্রধান করুণা সিং সর্দার এবং তাঁর স্বামী ।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, পুকুর খনন করলে এলাকার মানুষ উপকৃত হত। অথচ পুকুর খননের নামে টাকা আত্মসাৎ করে ফেলা হয়েছে । খাতায় কলমে দেখানো হয়েছে পুকুর, বসেছে ফলক । বাস্তবে পুকুর খননের কোনও কাজই হয়নি । তাই তদন্তের দাবি জানিয়েছেন তারা । গোটা বিষয়টি নিয়ে বিজেপি নেতৃত্বের অভিযোগ, দুর্নীতি হয়েছে এটা তারই প্রমাণ । বিভিন্ন প্রকল্প জেলায় সাড়ে তিনশো কোটি টাকারও বেশি দুর্নীতি হয়েছে । আগামিদিনে গোটা বিষয়টি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে তারা ।
আরও পড়ুন: পাননি মনরেগার সুবিধা ! পঞ্চায়েতের কাজের বোর্ড নিয়ে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভ