Budhan Shabar Murder Case: বুধন শবর হত্যা মামলায় দোষী সাব্যস্ত পুলিশ আধিকারিককে কারাদণ্ড আদালতের - দোষী সাব্যস্ত পুলিশ আধিকারিককে কারাদণ্ড আদালতের
1998 সালের ফেব্রুয়ারিতে সংশোধনাগারে অস্বাভাবিকভাবে মারা যান বুধন শবর নামে এক যুবক ৷ সেই ঘটনায় কারাদণ্ড হল পুরুলিয়ার বরাবাজার থানার তৎকালীন ওসি অশোক রায়কে (Court Sentenced Police Officer to Jail) ৷
পুরুলিয়া, 20 ফেব্রুয়ারি: দীর্ঘ 25 বছর পর বিচার পেল বুধন শবরের পরিবার । 1998 সালে সংশোধনাগারে বুধন শবরের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় । আজ সোমবার সেই মামলায় বরাবাজার থানার তৎকালীন ওসি অশোক রায়কে কারাদণ্ড দিল পুরুলিয়া জেলা আদালত (Purulia District Court) । ভারতীয় দণ্ডবিধির দু’টি ধারায় তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করা হয় ৷ একটিতে 8 বছর ও অন্যটিতে 5 বছরের কারাদণ্ড দিল আদালত ৷ এছাড়াও 50 হাজার টাকা জরিমানা করা হয় আদালতের তরফে । আদালতের রায়ে খুশি বুধন শবরের পরিবার ও পশ্চিমবঙ্গ শবর খেড়িয়া কল্যাণ সমিতি ।
1998 সালের 10 ফেব্রুয়ারি চুরির অভিযোগে তৎকালীন কেন্দা থানার অধীনে অকরবাইদ গ্রামের বাসিন্দা বুধু ওরফে বুধন শবর নামে ওই যুবককে আটক করে বরাবাজার থানার পুলিশ । 12 তারিখ সকাল পর্যন্ত থানার লকআপে রাখা হয় । 12 তারিখ তাঁকে পুরুলিয়া জেলা আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে 5 দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন । 16 তারিখ পুনরায় আদালতে তোলা হলে বিচারক তাঁকে জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন ।
17 তারিখ পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারে এসে তাঁর স্ত্রী শ্যামলী শবর জানতে পারেন যে বুধন শবর ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে । জেল কর্তৃপক্ষ জানায়, বুধন আত্মহত্যা করেছে । পুলিশ ময়নাতদন্ত করলেও পশ্চিমবঙ্গ খেড়িয়া শবর সমিতির উদ্যোগে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য দেহ গ্রামে মাটি চাপা দিয়ে রাখা হয় । সেই ঘটনায় পশ্চিমবঙ্গ শবর খেড়িয়া কল্যাণ সমিতির সভাপতি তথা প্রয়াত সাহিত্যিক মহাশ্বেতা দেবী হাইকোর্টের (Calcutta High Court) তদানীন্তন প্রধান বিচারপতিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে একটি চিঠি দেন ।
পাশাপাশি 19 তারিখ মৃত বুধন শবরের স্ত্রী শ্যামলী শবর পুরুলিয়া জেলা আদলতের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে আদালতে অভিযোগ করেন । কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি রুমা পালের নির্দেশে দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত হয় ও অ্যাডভোকেট প্রদীপ রায়কে আদালত বান্ধব হিসেবে নিয়োগ করেন । পরে এই ঘটনার তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেন । তৎকালীন বাম সরকার এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে প্রধান বিচারপতির এজলাসে আবেদন করে । প্রধান বিচারপতি সেই আবেদন খারিজ করে দেন ।
তদন্ত শুরু করে 2003 সালে 22 সেপ্টেম্বর চার্জ ফ্রেম করা হয় । ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা দেওয়া হয় ৷ তার আগে 2001 সালের ফেব্রুয়ারি মাসের 19 তারিখ বরাবাজার থানার তৎকালীন ওসি অশোক রায় ও তৎকালীন অফিসার এএসআই অজয় সেনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় সিবিআই । এই মামলায় মোট 89 জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয় । তাতে বরাবাজার ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মী যেমন ছিলেন, তেমনই পুরুলিয়া জেলা সংশোধনাগারের বেশ কয়েকজন আধিকারিক-সহ জেল কর্মী ও পুলিশ ছিল ।
গত শুক্রবার পুরুলিয়া জেলা আদালতের ফার্স্ট ট্র্যাকের 2 আদালত তৎকালীন বরাবাজার থানার ওসি অশোক রায়কে দোষী সাব্যস্ত করেন ৷ প্রমাণের অভাবে অন্য পুলিশ অফিসার অজয় সেনকে বেকসুর খালাস করেন । আজ, সোমবার বরাবাজার থানার তৎকালীন ওসি অশোক রায়ের বিরুদ্ধে সাজা ঘোষণা করা হয় (Court Sentenced Police Officer to Jail) ।
আরও পড়ুন: 25 বছর অনেক কষ্ট করেছি, স্বামীর হত্যাকারীদের সাজা ঘোষণার দিনেও চোখে জল শ্যামলীর