পুরুলিয়া, 24 মার্চ: বিদ্যালয় ও পড়ুয়া থাকলেও শিক্ষক-শিক্ষিকা নেই ৷ তার অভাবেই বন্ধ হতে চলেছে পুরুলিয়া 1 নম্বর ব্লকের তেলিডি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় । ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়েছে মিড ডে (Purulia News) ৷ এখন দিন গোনার পালা কখন বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যালয়টি ৷ সেই আশঙ্কাতে অথৈ জলে 92 জন পড়ুয়ার ভবিষ্যৎ ৷ কোনও রকমে একজন অতিথি শিক্ষক দিয়ে চলছে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠন ৷
2013-2014 বর্ষ থেকে পুরুলিয়া শহর থেকে মাত্র 6 কিমি দূরে কংসাবতী নদীর পাড়ে পুরুলিয়া 1 নম্বর ব্লকের অন্তর্গত তেলিডি গ্রামে তেলিডি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয়ে পঠন-পাঠন চালু হয় । সেই সময় বিদ্যালয়ে শিক্ষক, শিক্ষিকা, শিক্ষাকর্মীও নিয়োগ হয়েছিল । এলাকার ছাত্র-ছাত্রীরাও স্কুলে ভর্তি হয় । অতীতে নিয়মিত মিড-ডে মিলের রান্না থেকে শুরু করে ভালো পঠন-পাঠনও হত । কিন্তু গত এক বছরে বদলে গিয়েছে সবটাই । বর্তমানে ওই বিদ্যালয়ে রয়েছে 92 জন পড়ুয়া । খাতায়-কলমে একজন ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক থাকলেও অজানা কারণে বহু দিন ধরে তিনি বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত । বন্ধ হয়ে গিয়েছে মিড-ডে মিলের রান্না । জেলা শিক্ষা দফতরের পক্ষ থেকে ওই বিদ্যালয়ে কাজ চালানোর মতো একজন অবসরপ্রাপ্ত অতিথি শিক্ষকের ব্যবস্থা করা হয়েছিল । অতিথি শিক্ষক সুভাষ বাউরি অবশ্য মাঝে মধ্যে স্কুলে আসেন । তাঁর ভরসাতেই কোনও কোনও দিন হয় পঠন-পাঠন ।
কিন্তু একজন অতিথি শিক্ষকের ভরসায় পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণির 92 জন পড়ুয়ার পঠন-পাঠন কি হবে ? উঠছে প্রশ্ন । শিক্ষকের অভাবে সপ্তাহের বেশিরভাগ দিন তালা বন্ধ থাকে বিদ্যালয়টি । পড়ুয়ারা নিয়মিত আসেন, বারান্দায় বসে খেলাধুলা, বই খুলে নিজেরাই পড়াশোনা করে, তারপর বাড়ি চলে যায় । তাই ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা নিয়ে দুশ্চিন্তাই পড়েছেন অভিভাবকরা । সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে তাদের অন্যত্র ভরতি করাতে চাইছেন ৷
আরও পড়ুন: স্কুল বন্ধের নোটিশ দিতে এসে গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে আধিকারিকরা
পুরুলিয়ার এই তেলিডি জুনিয়র বিদ্যালয়ের বর্তমান অচলাবস্থা নিয়ে এবং অনুপস্থিতির বিষয়ে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক চন্দন দাসকে কারণ দর্শাতে নোটিশ পাঠানো হয়েছে শিক্ষা দফতর থেকে । তাঁর কাছ থেকে কোনও সদুত্তর না-মেলায় এই মাস থেকে তাঁর বেতনও বন্ধ করছে শিক্ষা দফতর । স্থানীয় টামনা থানার ওসি এ বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করে পুরুলিয়া 1 নম্বর ব্লকের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিকের কাছে রিপোর্ট জমা করেছেন । পুরুলিয়া 1 ব্লকের বিডিও সংশ্লিষ্ট অতিরিক্ত জেলাশাসক (শিক্ষা)কে বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছেন । আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা দফতর এবং জেলা প্রশাসন । এখন সমস্যা মিটবে কবে সেই দিকেই তাকিয়ে এলাকাবাসী ৷