পুরুলিয়া, 28 এপ্রিল : প্রথম বিবাহবার্ষিকীতে পরিবারের সঙ্গে ভালো খাওয়া দাওয়া করার পরিকল্পনা ছিল বহুদিন থেকে । দিনটিকে স্মরণীয় করে রাখার চেষ্টায় প্রতিদিনই নতুন নতুন পরিকল্পনা করতেন । কিন্তু কোরোনার জেরে হঠাৎই সব ভেস্তে যায় । তাই নিজের প্রথম বিবাহবার্ষিকী বাড়ির লোকজনদের সঙ্গে পালন করা হয়নি । আর লকডাউনে যেখানে অর্ধেক মানুষ খেতে পাচ্ছেন না সেখানে নিজেরা ভালো খাবার খাবেনই বা কী করে । তাই বস্তি এলাকার দুস্থদের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেই প্রথম বিবাহ বার্ষিকী উদযাপন করলেন শিল্পী মহান্তি পতি ও কৌশিক পতি ।
পুরুলিয়ার বলরামপুরের বাসিন্দা শিল্পী । এক বছর আগে আজকের দিনে বাঁকুড়ার বাসিন্দা কৌশিক পতির সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয় । কয়েক বছর আগে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের সেবিকা হিসেবে যোগদান করেন শিল্পী । সেই সূত্রে পুরুলিয়াতেই থাকেন দু'জনে । বর্তমানে কোরোনা যুদ্ধে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে দিন রাত মানুষের সেবায় কাজ করছেন শিল্পী । ভেবেছিলেন যদি লকডাউন উঠে যায়, কোরোনা পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হয় তাহলে পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আজকের দিনটি কাটাবেন । ভালো খাওয়া-দাওয়া করবেন । কিন্তু পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া তো দূর । ক্রমেই বাড়ছে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা । যার জেরে লকডাউনের সময়সীমাও বাড়ে । এই পরিস্থিতিতে পূর্ব পরিকল্পিত সবকিছুই ভেস্তে যায় । ছোটো থেকেই খারাপ সময়ে মানুষের পাশে দাঁড়ান শিল্পী । এই লকডাউনে তাই আর পাঁচটা দিন আনা দিন খাওয়া মানুষের কথা ভেবে নিজেদের মতো করে তাঁদের পাশে দাঁড়িয়ে বিবাহবার্ষিকী উদযাপন করলেন। পুরুলিয়া শহর লাগোয়া চিড়াবাড়ি বস্তিতে চাল, আলু, মুড়ি, সোয়াবিন, সাবান, নুন, তেল বিলি করলেন তাঁরা ।
এবিষয়ে এই দম্পতি জানান, লকডাউনের ফলে বহু পরিবারে অভাব দেখা দিয়েছে । মানুষ এখন অসহায় । এই সময় নিজেরা ভালো খেয়ে বা আত্মীয়দের সঙ্গে পালন না করে সাধারণ মানুষের সেবা করে কাটানোই যথাযোগ্য । তাই নিজেদের আনন্দের মুহূর্তকে এঁদের সাথেই ভাগ করে নিলেন । আগামীদিনেও এভাবেই মানুষের সেবা করে যাবেন ।