ETV Bharat / state

Panchayat Elections 2023: পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাখির চোখ পূর্ব মেদিনীপুর, কার দখলে থাকবে জেলা পরিষদ ?

author img

By

Published : Jul 6, 2023, 1:40 PM IST

Updated : Jul 6, 2023, 3:06 PM IST

পঞ্চায়েত নির্বাচনে এ বার সব পক্ষের কাছেই পাখির চোখ পূর্ব মেদনীপুর জেলা পরিষদ ৷ কারা ক্ষমতায় আসবে ? এই নিয়ে চলছে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর ৷ দেখে নেব এই জেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট ৷

Panchayat Elections 2023
Panchayat Elections 2023
পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাখির চোখ পূর্ব মেদিনীপুর

তমলুক, 6 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরে এ বার সম্মানরক্ষার লড়াই ৷ কার দখলে থাকবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ ? শাসক দল, বিজেপি নাকি একসময়ে রাজত্ব করা বামফ্রন্ট ? চোখ রাখা যাক এই জেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকে ৷

অবিভক্ত মেদিনীপুর 2002 সালে ভাগ হয়ে যায় । সে বছরই 9 ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদের পূর্ব মেদিনীপুরের অংশের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ । তখন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ছিল 52 । তার মধ্যে বামফ্রন্টের ছিল 50টি আসন । বাকি দুটি আসন তৃণমূল কংগ্রেসের । প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচন হয় 2004 সালে । সেখানে 52টি আসনের মধ্যে 50টি আসন বামফ্রন্ট পায় । বাকি দুটি যায় তৃণমূলের ঘরে ।

তারপর 2007 সালে শুরু হয় নন্দীগ্রামে জমি রক্ষার আন্দোলন । এই জমি রক্ষার আন্দোলন চলাকালীন 2008 সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই 34 বছরের বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হতে থাকে । 2008 সালে জেলা পরিষদে 52টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট পায় 17টি । 35টি জেলা পরিষদের আসনে জিতে প্রথম জেলা পরিষদ গঠন করে তৃণমূল । তারপর ধীরে ধীরে বামফ্রন্টের আসন সংখ্যা কমতে থাকে ।

2013 সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা বেড়ে 60 হয় । সেখানে বামফ্রন্ট পায় ছটি আসন, বাকি 54টি আসন নিয়ে আবার জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল । 2018 সালে তৎকালীন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য করার ডাক দিয়েছিলেন । সেই মতোই 60 আসনের জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য হয় । এ বারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত 223টি । পঞ্চায়েত সমিতি 25 টি। গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন 4290টি । পঞ্চায়েত সমিতির আসন 665টি । পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র 4128টি । এ বারে মোট ভোটার 38 লক্ষ 14 হাজার 888 জন।

এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে তৎপরতা তুঙ্গে হলেও তৃণমূলের পাখির চোখ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ৷ কারণ এখানে তৃণমূলের সবথেকে বড় শত্রু হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী । তিনি এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা । 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে অল্প ব্যবধানে হলেও শুভেন্দুর কাছে হাত স্বীকার করতে হয়েছিল তাঁকে ৷ তাই এ বার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শাসকদলের সম্মানরক্ষার লড়াই ৷

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতই কি হবে জবাব দেওয়ার মঞ্চ ? সম্মানরক্ষার লড়াই নন্দীগ্রামে

শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পর বেশ কয়েকবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব দিনের পর দিন পূর্ব মেদিনীপুরের ছুটে বেড়িয়েছেন । তাঁদের একটাই লক্ষ্য, এই জেলায় শুভেন্দুর শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানানো ৷ এ দিকে, পূর্ব মেদনীপুর জেলার ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীও ছাড়ার পাত্র নন । তিনিও প্রত্যেকটা জায়গায় বলে বেড়ান, "নন্দীগ্রামে আমি তোমাদের নেত্রীকে হারিয়েছি ‌। তোমরা তো চুনোপুটি ।" অপরদিকে, তৃণমূলের নেতৃত্ব শুভেন্দু অধিকারীকে পালটা কটাক্ষ করে লোডশেডিং বিধায়ক বলে বিদ্রুপ করেন ৷

তবে এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ নন্দীগ্রাম । যে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারতে হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর কাছে, সেই নন্দীগ্রামকে পুনরায় উদ্ধার করতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস । এ বার কি তৃণমূল পারবে বিজেপির সঙ্গে টক্কর নিতে ?

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার 16টি বিধানসভা রয়েছে । 2016 সালে বামফ্রন্ট পেয়েছিল তিনটি বিধানসভা । বাকি 13টি বিধানসভা পেয়েছিল তৃণমূল । 2021 এর নির্বাচনে সেই 16 টি বিধানসভার মধ্যে তৃণমূলের আসন সংখ্যা কমে হয় 9 । বাকি সাতটি বিধানসভা বিজেপি প্রথম দখল করে । সাতটি বিধানসভার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা আসন ছিল নন্দীগ্রাম । সেই নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারান শুভেন্দু । রাজ্যে ক্ষমতায় না এলেও বিজেপির তরফ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা করা হয় । শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর তাঁর আক্রমণের নিশানায় সবার উপরে রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ এ বারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শুভেন্দু অধিকারী কি নিজের গড় ধরে রাখতে পারবেন ? নাকি শাসকদলই কর্তৃত্ব করবে ?

যদিও এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বামফ্রন্টের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিপিআইএম-এর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, "তৃণমূল তো পশ্চিমবাংলায় বিজেপিকে তৈরি করেছে । বিজেপি ও আরএসএস তৃণমূলকে পরিচালনা করে । আর লাল ঝান্ডা যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই চেষ্টা করে ওরা ৷ এ বারে পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদল যদি ছাপ্পা, রিগিং, সন্ত্রাস না করে, তাহলে বামফ্রন্ট ভালো ফল করবে । আর যদি 2018 সালের মতো পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়, তাহলে বিরোধী শূন্য হবে ।

আরও পড়ুন: শেষবেলায় নন্দীগ্রামে 'মমতা', প্রচারে চমক তৃণমূলের

অপরদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, "এ বারে মানুষ এই চোরেদেরকে তাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে । আগে এই জেলায় বিজেপির কিছু ছিল না । এ বারে জেলার বেশ কয়েকটি বিধানসভা আসন দখল করেছে বিজেপি । এ বার যদি ভালোভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় তাহলে জেলা পরিষদ দখল করবে বিজেপি ।"

অপরদিকে তৃণমূলের পটাশপুরের বিধায়ক ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, "এ বারেও আমরা বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদ গঠন করব । কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে হাতিয়ার রেখেই আমরা প্রচার করেছি । মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প গুলোর সুবিধা পেয়েছে। তাই এ বারেও বিরোধী শূন্য জেলা পরিষদ আমরা গঠন করব । আর শুভেন্দু অধিকারী আমাদের বিরোধিতা করায় তার কোনও এফেক্ট পড়বে না । কারণ মানুষ এই জেলায় শুভেন্দু অধিকারীকে দেখে নয়, স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আস্থা রেখেই তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেয়নি । এ বার দেখার বিষয় কে জেলা পরিষদ দখল করতে পারে ? শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নাকি প্রধান বিরোধী দল বিজেপি । নাকি এই জেলা পরিষদের প্রাক্তন সেনানি বামেরা ৷ তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে চলতি মাসের 11 তারিখ পর্যন্ত ।

পঞ্চায়েত নির্বাচনে পাখির চোখ পূর্ব মেদিনীপুর

তমলুক, 6 জুলাই: পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব মেদিনীপুরে এ বার সম্মানরক্ষার লড়াই ৷ কার দখলে থাকবে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদ ? শাসক দল, বিজেপি নাকি একসময়ে রাজত্ব করা বামফ্রন্ট ? চোখ রাখা যাক এই জেলার রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের দিকে ৷

অবিভক্ত মেদিনীপুর 2002 সালে ভাগ হয়ে যায় । সে বছরই 9 ফেব্রুয়ারি জেলা পরিষদের পূর্ব মেদিনীপুরের অংশের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদ । তখন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা ছিল 52 । তার মধ্যে বামফ্রন্টের ছিল 50টি আসন । বাকি দুটি আসন তৃণমূল কংগ্রেসের । প্রথম জেলা পরিষদ নির্বাচন হয় 2004 সালে । সেখানে 52টি আসনের মধ্যে 50টি আসন বামফ্রন্ট পায় । বাকি দুটি যায় তৃণমূলের ঘরে ।

তারপর 2007 সালে শুরু হয় নন্দীগ্রামে জমি রক্ষার আন্দোলন । এই জমি রক্ষার আন্দোলন চলাকালীন 2008 সালে পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই 34 বছরের বামফ্রন্ট ক্ষমতাচ্যুত হতে থাকে । 2008 সালে জেলা পরিষদে 52টি আসনের মধ্যে বামফ্রন্ট পায় 17টি । 35টি জেলা পরিষদের আসনে জিতে প্রথম জেলা পরিষদ গঠন করে তৃণমূল । তারপর ধীরে ধীরে বামফ্রন্টের আসন সংখ্যা কমতে থাকে ।

2013 সালে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পরিষদের আসন সংখ্যা বেড়ে 60 হয় । সেখানে বামফ্রন্ট পায় ছটি আসন, বাকি 54টি আসন নিয়ে আবার জেলা পরিষদ দখল করে তৃণমূল । 2018 সালে তৎকালীন তৃণমূল নেতা তথা বর্তমান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য করার ডাক দিয়েছিলেন । সেই মতোই 60 আসনের জেলা পরিষদ বিরোধীশূন্য হয় । এ বারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার গ্রাম পঞ্চায়েত 223টি । পঞ্চায়েত সমিতি 25 টি। গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন 4290টি । পঞ্চায়েত সমিতির আসন 665টি । পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মোট ভোটগ্রহণ কেন্দ্র 4128টি । এ বারে মোট ভোটার 38 লক্ষ 14 হাজার 888 জন।

এ বার পঞ্চায়েত নির্বাচনে রাজ্যজুড়ে তৎপরতা তুঙ্গে হলেও তৃণমূলের পাখির চোখ পূর্ব মেদিনীপুর জেলা ৷ কারণ এখানে তৃণমূলের সবথেকে বড় শত্রু হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে এক সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছায়াসঙ্গী শুভেন্দু অধিকারী । তিনি এখন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা । 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে এসেছিলেন স্বয়ং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে অল্প ব্যবধানে হলেও শুভেন্দুর কাছে হাত স্বীকার করতে হয়েছিল তাঁকে ৷ তাই এ বার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শাসকদলের সম্মানরক্ষার লড়াই ৷

আরও পড়ুন: পঞ্চায়েতই কি হবে জবাব দেওয়ার মঞ্চ ? সম্মানরক্ষার লড়াই নন্দীগ্রামে

শুভেন্দু অধিকারী বিজেপিতে যাওয়ার পর বেশ কয়েকবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব দিনের পর দিন পূর্ব মেদিনীপুরের ছুটে বেড়িয়েছেন । তাঁদের একটাই লক্ষ্য, এই জেলায় শুভেন্দুর শক্তিকে চ্যালেঞ্জ জানানো ৷ এ দিকে, পূর্ব মেদনীপুর জেলার ভূমিপুত্র শুভেন্দু অধিকারীও ছাড়ার পাত্র নন । তিনিও প্রত্যেকটা জায়গায় বলে বেড়ান, "নন্দীগ্রামে আমি তোমাদের নেত্রীকে হারিয়েছি ‌। তোমরা তো চুনোপুটি ।" অপরদিকে, তৃণমূলের নেতৃত্ব শুভেন্দু অধিকারীকে পালটা কটাক্ষ করে লোডশেডিং বিধায়ক বলে বিদ্রুপ করেন ৷

তবে এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে শাসকদলের কাছে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ নন্দীগ্রাম । যে নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারতে হয়েছিল শুভেন্দু অধিকারীর কাছে, সেই নন্দীগ্রামকে পুনরায় উদ্ধার করতে মরিয়া তৃণমূল কংগ্রেস । এ বার কি তৃণমূল পারবে বিজেপির সঙ্গে টক্কর নিতে ?

পূর্ব মেদিনীপুর জেলার 16টি বিধানসভা রয়েছে । 2016 সালে বামফ্রন্ট পেয়েছিল তিনটি বিধানসভা । বাকি 13টি বিধানসভা পেয়েছিল তৃণমূল । 2021 এর নির্বাচনে সেই 16 টি বিধানসভার মধ্যে তৃণমূলের আসন সংখ্যা কমে হয় 9 । বাকি সাতটি বিধানসভা বিজেপি প্রথম দখল করে । সাতটি বিধানসভার মধ্যে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা আসন ছিল নন্দীগ্রাম । সেই নন্দীগ্রাম থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে হারান শুভেন্দু । রাজ্যে ক্ষমতায় না এলেও বিজেপির তরফ থেকে শুভেন্দু অধিকারীকে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা করা হয় । শুভেন্দু বিরোধী দলনেতা হওয়ার পর তাঁর আক্রমণের নিশানায় সবার উপরে রাখেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে ৷ এ বারে পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় শুভেন্দু অধিকারী কি নিজের গড় ধরে রাখতে পারবেন ? নাকি শাসকদলই কর্তৃত্ব করবে ?

যদিও এই বিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার বামফ্রন্টের প্রাক্তন সভাধিপতি তথা সিপিআইএম-এর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, "তৃণমূল তো পশ্চিমবাংলায় বিজেপিকে তৈরি করেছে । বিজেপি ও আরএসএস তৃণমূলকে পরিচালনা করে । আর লাল ঝান্ডা যাতে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারে সেই চেষ্টা করে ওরা ৷ এ বারে পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদল যদি ছাপ্পা, রিগিং, সন্ত্রাস না করে, তাহলে বামফ্রন্ট ভালো ফল করবে । আর যদি 2018 সালের মতো পঞ্চায়েত নির্বাচন হয়, তাহলে বিরোধী শূন্য হবে ।

আরও পড়ুন: শেষবেলায় নন্দীগ্রামে 'মমতা', প্রচারে চমক তৃণমূলের

অপরদিকে, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর ভাই সৌমেন্দু অধিকারী বলেন, "এ বারে মানুষ এই চোরেদেরকে তাড়াতে উঠে পড়ে লেগেছে । আগে এই জেলায় বিজেপির কিছু ছিল না । এ বারে জেলার বেশ কয়েকটি বিধানসভা আসন দখল করেছে বিজেপি । এ বার যদি ভালোভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন হয় তাহলে জেলা পরিষদ দখল করবে বিজেপি ।"

অপরদিকে তৃণমূলের পটাশপুরের বিধায়ক ও পূর্ব মেদিনীপুর জেলার সভাধিপতি উত্তম বারিক বলেন, "এ বারেও আমরা বিরোধীশূন্য জেলা পরিষদ গঠন করব । কারণ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নকে হাতিয়ার রেখেই আমরা প্রচার করেছি । মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রকল্প গুলোর সুবিধা পেয়েছে। তাই এ বারেও বিরোধী শূন্য জেলা পরিষদ আমরা গঠন করব । আর শুভেন্দু অধিকারী আমাদের বিরোধিতা করায় তার কোনও এফেক্ট পড়বে না । কারণ মানুষ এই জেলায় শুভেন্দু অধিকারীকে দেখে নয়, স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপরে আস্থা রেখেই তৃণমূল কংগ্রেসকে ভোট দেয়নি । এ বার দেখার বিষয় কে জেলা পরিষদ দখল করতে পারে ? শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস নাকি প্রধান বিরোধী দল বিজেপি । নাকি এই জেলা পরিষদের প্রাক্তন সেনানি বামেরা ৷ তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে চলতি মাসের 11 তারিখ পর্যন্ত ।

Last Updated : Jul 6, 2023, 3:06 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.