কাঁথি, 12 নভেম্বর : ছেলেরা বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে ৷ রাস্তার একটি দোকানে রাত কাটল বৃদ্ধ দম্পতির ৷ অভিযোগ, তিন ছেলে সম্পত্তি লিখিয়ে নেওয়ার পর বাড়ি থেকে বের করে দেয় দম্পতিকে ৷ কাঁথি থানা থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে একটি দোকানে বসে রাত কাটান ওই দম্পতি ৷ এরপর সকালে গাছের নিচে আশ্রয় নেন তাঁরা ৷ স্থানীয় কয়েকজনের নজরে আসে বিষয়টি ৷ তাঁদের সহযোগিতায় পুলিশ ও মহকুমা শাসকের কাছে অভিযোগ জানান ননিগোপাল দাস ও তাঁর স্ত্রী গৌরী দাস ৷
মহকুমা শাসক শুভময় ভট্টাচার্য কাঁথি থানার IC-কে নির্দেশ দেন এই বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ৷ পাশাপাশি অভিযুক্ত তিন ছেলের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণেরও নির্দেশ দেওয়া হয় ।
পূর্ব মেদিনীপুর জেলার কাঁথি থানার কুদভেড়ি গ্রামে বাড়ি ননিগোপাল বাবুর । তাঁর তিনছেলেই রোজগার করেন ৷ বড় ছেলে রবীন্দ্র দাস রাজমিস্ত্রি ৷ মেজো ছেলে শচীন্দ্র ভারতীয় সেনা বিভাগে কর্মরত ৷ আর ছোটো ছেলে হরেন্দ্র হোটেলকর্মী । জানা গেছে, গৌরীদেবীর সুগার রয়েছে । ননিগোপাববাবুর শরীরের অবস্থাও তেমন ভালো নয় ৷
ওই দম্পতির অভিযোগ, তিন ছেলে তাঁদের কাছ থেকে বাড়িসহ 45 ডেসিমল জমি লিখিয়ে নেওয়ার পর তাঁদের বাড়ি থেকে বের করে দেয় । তিনি বলেন, "প্রায় তিন বছর আগে ছেলেদের কথা মতো কিছু সম্পত্তি ওদের লিখে দিয়েছিলাম । এরপর ওরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার শুরু করে ৷ তখন গ্রামে সালিশি সভা ডেকে আমাকে আলাদা থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় । তাঁদের কথা মতো আমরা আলাদা থাকতে শুরু করি । বাড়ির একটা ঘরে আমরা বুড়োবুড়ি রান্না করে খেতাম ও থাকতাম । রবিবার ছোটো ছেলে ও বউমা ওই ঘর থেকে গ্যাস সিলিন্ডারসহ সব জিনিস ছুঁড়ে ফেলে দেয় ও বাড়ি থেকে বের করে দেয় ৷ তাঁদের খুনের হুমকিও দেওয়া হয় ।"
মহকুমা শাসক বৃদ্ধ দম্পতির থেকে সব জানার পর পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলেন । কাঁথি থানার পুলিশ বৃদ্ধ দম্পতিকে বাড়িতে দিয়ে আসে । বড় ছেলে রবীন্দ্র দাস ও ছোটো ছেলে হরেন্দ্র দাসকে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ । তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় ৷ সম্পত্তি লিখিয়ে নিজের বৃদ্ধ ও অসুস্থ বাবা-মাকে বাড়ি থেকে তাড়ানোর অভিযোগে আটক করা হয় ওই দুজনকে ।