কাঁথি, 5 ডিসেম্বর: দলের সেকেন্ড ইন কম্য়ান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের (Abhishek Banerjee) নির্দেশে ইতিমধ্যেই পদত্যাগ করেছেন পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথির মারিশদা গ্রাম পঞ্চায়েতের (Marishda Gram Panchayat) প্রধান ঝুনুরানি মণ্ডল এবং উপপ্রধান রমাকৃষ্ণ মণ্ডল ৷ পদত্যাগ করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকায় তৃণমূল কংগ্রেসের অঞ্চল সভাপতি গৌতম মিশ্রও ৷ কিন্তু, তারপরও বিতর্ক কিছুতেই থামছে না ৷ সোমবার এ নিয়ে তাঁর বক্তব্য চাওয়া হলে ক্য়ামেরার সামনে কার্যত 'বাক্যহারা' হয়ে যান স্থানীয় তৃণমূল নেত্রী তথা কাঁথি-3 ব্লক পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মিতারানি সাহু !
শনিবার কাঁথিতে সভা করতে আসার পথেই কনভয় থামিয়ে মারিশদার একটি গ্রামে ঢোকেন অভিষেক ৷ সেখানকার মানুষের দুরাবস্থা দেখে ক্ষুব্ধ তৃণমূল নেতা মঞ্চ থেকেই উপরোক্ত তিনজনকে 48 ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করতে বলেন ৷ সেই সময়সীমা পেরোনোর আগেই সংশ্লিষ্ট তিনজন পদত্যাগ করেন ৷ তারপর তাঁদের স্থানীয় থানায় ডেকেও পাঠানো হয় ৷ যদিও কেন এই তলব, তা নিয়ে কেউই মুখ খোলেননি ৷ কিন্তু, ইতিমধ্যে সংবাদমাধ্যমের ক্য়ামেরার সামনে সরব হয়েছেন ঝুনুরানি মণ্ডল ৷ এমনকী, মানুষের ভোটে জিতে আসা ঝুনুরানিকে দলের নেতা এভাবে পদত্যাগ করার নির্দেশ দিতে পারেন কিনা, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি ৷ কিন্তু, তারপরও পদত্যাগ করেছেন ঝুনুরানি ৷
আরও পড়ুন: মমতার কায়দায় মানুষের দরজায়, পূর্ব মেদিনীপুরে অভিষেকের পদক্ষেপে তৃণমূল নেত্রীর ছায়া
সোমবার এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে কাঁথি-3-এর বিডিও নেহাল আহমেদ বলেন, "আমার কাছে প্রধান এবং উপপ্রধানের পদত্যাগপত্র জমা পড়েছে ৷ এরপর আমরা আইন অনুসারে পদক্ষেপ করব ৷ তবে, এই ঘটনার জন্য মানুষের পরিষেবা পেতে কোনও সমস্যা হবে না ৷ আমরা সেটা দেখে নেব ৷" কিন্তু, এই মাপা কথার বাইরে একটি বাক্যও খরচ করেননি এই সরকারি আমলা ৷
অন্যদিকে, এই ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর মতামত কী, তা জানতে চাওয়া হয় কাঁথি-3 পঞ্চায়েত সমিতির সভানেত্রী মিতারানি সাহুর কাছে ৷ কিন্তু, সংবাদকর্মীদের ব্যুম ধরে থাকাই কার্যত সার হয় ৷ প্রশ্ন শুনে দীর্ঘক্ষণ মুখে কুলুপ এঁটে রাখেন মিতারানি ৷ তারপর বলেন, "অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের নির্দেশে ঝুনুরানি পদত্যাগ করেছেন ৷ বিডিওর কাছে পদত্যাগ দিয়েছেন ৷ আমি আর এ নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না !"
সূত্রের দাবি, এই ঘটনা ঘিরে স্থানীয় রাজনৈতিক মহলে যেমন আলোড়ন পড়ে গিয়েছে, তেমনই চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে ৷ বিরোধীদের যদিও অভিযোগ, পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পুরোটাই আসলে শাসকদলের রাজনৈতিক গিমিক ৷ অন্যদিকে, এমন কঠোর পদক্ষেপে মারিশদার হতদরিদ্র মানুষের একাংশ খুশি ৷ যদিও অন্য অংশের দাবি, হঠাৎ এভাবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের চাপ দেওয়া কি উচিত হচ্ছে ? কিন্তু, আসল প্রশ্ন হল, গ্রামের মানুষ কী ভাবছে ? সেই প্রশ্নের স্পষ্ট উত্তর এখনই মেলা সম্ভব নয় বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল ৷