ETV Bharat / state

খরচ 3 কোটি, 5 বছর পরও অব্যবহৃত তমলুকের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড

তিন কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি করা হয়েছিল ৷ কিন্তু, উদ্বোধনের পাঁচ বছর পরও চালু করা গেল না জেলা সদর তমলুকের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড ।

author img

By

Published : Sep 20, 2019, 7:55 AM IST

Updated : Sep 20, 2019, 8:04 AM IST

লরি

তমলুক, 20 সেপ্টেম্বর : খরচ হয়েছিল 3 কোটি টাকা ৷ উদ্বোধনও হয়েছিল ঘটা করে ৷ কিন্তু, পাঁচ বছর পরও তমলুকের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৷ স্ট্যান্ড ছাড়াই যত্রতত্র বাস দাঁড়ানোয় যানজট সমস্যায় ভুগছে জেলা সদর শহর তমলুকের বাসিন্দারা ।

স্থানীয় ও তমলুক পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, 2011-12 অর্থবর্ষে তৃণমূল পরিচালিত পৌর বোর্ডের আমলে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের কাজ শুরু হয় । তমলুক শহরের চককামিনায় রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণে বরাদ্দ করা হয় প্রায় তিন কোটি টাকা । এরপর ঘটা করে 2014 সালে তৎকালীন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ (বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী) শুভেন্দু অধিকারী এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন । তারপর কেটে গেছে পাঁচ বছর । এখনও চালু করা যায়নি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডটি । ফলে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামো ।

bus stand
উদ্বোধন হয়েও অব্যবহৃত বাসস্ট্যান্ড

প্রসঙ্গত, জেলা সদর তমলুকের মধ্য দিয়ে গেছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক । যা হলদিয়া থেকে মেচেদা, ঘাটাল, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম সহ কলকাতাগামী প্রায় দুশোটির উপর সরকারি ও বেসরকারি বাস প্রত্যহ যাতায়াত করে । এই রুটে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক মানুষের প্রতিদিন আনাগোনা রয়েছে । এমন অবস্থায় তমলুক শহরে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকায় বাসগুলি শহরের বিভিন্ন জায়গায় সড়কের উপরই দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রীদের নিয়ে ওঠানামা করতে হচ্ছিল । এর জেরে জনবহুল এলাকার উপর দিয়ে চলা এই সড়কে প্রায়ই সৃষ্টি হচ্ছিল তীব্র যানজট । এই সমস্যা দূর করতেই বাম পরিচালিত তাম্রলিপ্ত পৌরসভার উদ্যোগে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল শহরের বুকেই তৈরি করা হবে একটি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড । সেই মতো রাজ্য কৃষি বিপণন দপ্তরের অধিগৃহীত জমির উপর বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল । এরপর রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভা সেই কাজ শুরুও করে দেয় । কিন্তু বাসস্ট্যান্ডটির জায়গা নির্বাচন নিয়েই উঠতে শুরু করে বিস্তর অভিযোগ । স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে যাত্রী ও বাস মালিক সংগঠনের অভিযোগ, রাজ্য সড়ক থেকে প্রায় 500 মিটার দূরে এই বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলায় তা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে । এর ফলে শহরবাসীর বহু প্রতীক্ষিত এই সেন্টাল বাসস্ট্যান্ড কোনও কাজে আসেনি ।

দেখুন ভিডিয়ো


এবিষয়ে পৌরসভাকেই কাটগড়ায় তুলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরা । তিনি বলেন, "সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের পরিকল্পনা শুরুর আগে অনেকগুলো দিক ভাবা উচিত ছিল । পৌরসভা স্ট্যান্ড নির্মাণ শুরুর সময় আমাদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা করেনি । কোনও মতামতও না নিয়েই পৌরসভার এই একতরফা হঠকারী সিন্ধান্তের জেরে নতুন এই বাসস্ট্যান্ডে বাস ঢোকা ও বেরোনোর ক্ষেত্রে অনেকটাই সময় লেগে যাবে । ফলে কোনও বাসই আর সরকার নির্ধারিত সময় সূচি অনুযায়ী চলতে পারবে না । তাই সমস্ত বাসেরই সময়সূচি সম্পূর্ণ পরিবর্তন না করেই বৃহৎ এই পরিকল্পনা কোনওভাবেই বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় না । যদি প্রকল্প শুরুর সময়ই আমাদের সাথে এবিষয়ে আলোচনা করা হত তা হলে এই সমস্যাগুলি তুলে ধরা যেত । অপরিকল্পিত ভাবে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের জেরেই তিন কোটি টাকা ব্যয়ের তৈরি এই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে ।"

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রাজু বলেন, "বাসস্ট্যান্ডে কোনও বাস না এসে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করার ফলে শহরের রাস্তায় যানজট বাড়ছে । সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে শুধুমাত্র কিছু টুরিস্ট বাস গ্যারেজ করে রাখা হয় । কোনও পাবলিক বাস এখানে আসে না । বাসমালিকদের সঙ্গে পৌর কর্তৃপক্ষের সমঝোতা না হওয়ার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে । যেখানে সেখানে বাস ড্রাইভাররা বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় আমাদেরও যাওয়া-আসার সমস্যা হচ্ছে । স্ট্যান্ড চালু হলে শহরের মানুষ যেমন যানজট থেকে মুক্তি পাবে, অপরদিকে এক জায়গা থেকে সব বাস ধরা যাবে । তাই আমরা চাই অবিলম্বে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড চালু হোক ।"

যদিও পরিকল্পনা অভাবের কথা মানতে নারাজ তমলুক পৌরসভার উপ-পৌরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় । তিনি বলেন, "আমরা বিভিন্ন বাস অ্যাসোসিয়েশনে সংগঠন ও রাজ্য সরকারের পরিবহন দপ্তরকে বলেছি ওখানে বাস রেখে চালু করার জন্য । কিন্তু কিছু প্রাথমিক সমস্যা থাকার কারণে ওরা ওখান থেকে বাস রাখ চালু করতে পারছেন না । পরিকল্পনা হয়েছিল বামফ্রন্টের সময়ে ৷ তাই তখন কী হয়েছিল আমরা জানি না । পরবর্তীকালে আমরা সমস্ত কিছু ঠিকঠাক করেছি । অনেকটা কাজ এগিয়ে গেছিল তারপর থেকে আমরা কাজটা সম্পূর্ণ করেছি । স্ট্যান্ড চালু না হওয়ার কারণ হিসেবে বাস ওনার অ্যাসোসিয়েশন রাজ্য সড়ক থেকে স্ট্যান্ড দূরে থাকার যে অভিযোগ করছে তা ঠিক নয় । কারণ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসষ্ট্যান্ড সড়ক থেকে অনেকটা দূরেই হয়েছে । আশা করছি আমরা আগামী ছয় মাসের মধ্যেই স্ট্যান্ড চালু করার ব্যবস্থা করতে পারব ।"

তমলুক, 20 সেপ্টেম্বর : খরচ হয়েছিল 3 কোটি টাকা ৷ উদ্বোধনও হয়েছিল ঘটা করে ৷ কিন্তু, পাঁচ বছর পরও তমলুকের সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ৷ স্ট্যান্ড ছাড়াই যত্রতত্র বাস দাঁড়ানোয় যানজট সমস্যায় ভুগছে জেলা সদর শহর তমলুকের বাসিন্দারা ।

স্থানীয় ও তমলুক পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, 2011-12 অর্থবর্ষে তৃণমূল পরিচালিত পৌর বোর্ডের আমলে প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের কাজ শুরু হয় । তমলুক শহরের চককামিনায় রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বাসস্ট্যান্ডটি নির্মাণে বরাদ্দ করা হয় প্রায় তিন কোটি টাকা । এরপর ঘটা করে 2014 সালে তৎকালীন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ (বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী) শুভেন্দু অধিকারী এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন । তারপর কেটে গেছে পাঁচ বছর । এখনও চালু করা যায়নি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডটি । ফলে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের পরিকাঠামো ।

bus stand
উদ্বোধন হয়েও অব্যবহৃত বাসস্ট্যান্ড

প্রসঙ্গত, জেলা সদর তমলুকের মধ্য দিয়ে গেছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক । যা হলদিয়া থেকে মেচেদা, ঘাটাল, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম সহ কলকাতাগামী প্রায় দুশোটির উপর সরকারি ও বেসরকারি বাস প্রত্যহ যাতায়াত করে । এই রুটে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষাধিক মানুষের প্রতিদিন আনাগোনা রয়েছে । এমন অবস্থায় তমলুক শহরে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকায় বাসগুলি শহরের বিভিন্ন জায়গায় সড়কের উপরই দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রীদের নিয়ে ওঠানামা করতে হচ্ছিল । এর জেরে জনবহুল এলাকার উপর দিয়ে চলা এই সড়কে প্রায়ই সৃষ্টি হচ্ছিল তীব্র যানজট । এই সমস্যা দূর করতেই বাম পরিচালিত তাম্রলিপ্ত পৌরসভার উদ্যোগে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল শহরের বুকেই তৈরি করা হবে একটি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড । সেই মতো রাজ্য কৃষি বিপণন দপ্তরের অধিগৃহীত জমির উপর বাসস্ট্যান্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল । এরপর রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল পরিচালিত পৌরসভা সেই কাজ শুরুও করে দেয় । কিন্তু বাসস্ট্যান্ডটির জায়গা নির্বাচন নিয়েই উঠতে শুরু করে বিস্তর অভিযোগ । স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে যাত্রী ও বাস মালিক সংগঠনের অভিযোগ, রাজ্য সড়ক থেকে প্রায় 500 মিটার দূরে এই বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলায় তা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে । এর ফলে শহরবাসীর বহু প্রতীক্ষিত এই সেন্টাল বাসস্ট্যান্ড কোনও কাজে আসেনি ।

দেখুন ভিডিয়ো


এবিষয়ে পৌরসভাকেই কাটগড়ায় তুলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরা । তিনি বলেন, "সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডের পরিকল্পনা শুরুর আগে অনেকগুলো দিক ভাবা উচিত ছিল । পৌরসভা স্ট্যান্ড নির্মাণ শুরুর সময় আমাদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা করেনি । কোনও মতামতও না নিয়েই পৌরসভার এই একতরফা হঠকারী সিন্ধান্তের জেরে নতুন এই বাসস্ট্যান্ডে বাস ঢোকা ও বেরোনোর ক্ষেত্রে অনেকটাই সময় লেগে যাবে । ফলে কোনও বাসই আর সরকার নির্ধারিত সময় সূচি অনুযায়ী চলতে পারবে না । তাই সমস্ত বাসেরই সময়সূচি সম্পূর্ণ পরিবর্তন না করেই বৃহৎ এই পরিকল্পনা কোনওভাবেই বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় না । যদি প্রকল্প শুরুর সময়ই আমাদের সাথে এবিষয়ে আলোচনা করা হত তা হলে এই সমস্যাগুলি তুলে ধরা যেত । অপরিকল্পিত ভাবে বাসস্ট্যান্ড নির্মাণের জেরেই তিন কোটি টাকা ব্যয়ের তৈরি এই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে ।"

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রাজু বলেন, "বাসস্ট্যান্ডে কোনও বাস না এসে যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করার ফলে শহরের রাস্তায় যানজট বাড়ছে । সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে শুধুমাত্র কিছু টুরিস্ট বাস গ্যারেজ করে রাখা হয় । কোনও পাবলিক বাস এখানে আসে না । বাসমালিকদের সঙ্গে পৌর কর্তৃপক্ষের সমঝোতা না হওয়ার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে । যেখানে সেখানে বাস ড্রাইভাররা বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় আমাদেরও যাওয়া-আসার সমস্যা হচ্ছে । স্ট্যান্ড চালু হলে শহরের মানুষ যেমন যানজট থেকে মুক্তি পাবে, অপরদিকে এক জায়গা থেকে সব বাস ধরা যাবে । তাই আমরা চাই অবিলম্বে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ড চালু হোক ।"

যদিও পরিকল্পনা অভাবের কথা মানতে নারাজ তমলুক পৌরসভার উপ-পৌরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ণ রায় । তিনি বলেন, "আমরা বিভিন্ন বাস অ্যাসোসিয়েশনে সংগঠন ও রাজ্য সরকারের পরিবহন দপ্তরকে বলেছি ওখানে বাস রেখে চালু করার জন্য । কিন্তু কিছু প্রাথমিক সমস্যা থাকার কারণে ওরা ওখান থেকে বাস রাখ চালু করতে পারছেন না । পরিকল্পনা হয়েছিল বামফ্রন্টের সময়ে ৷ তাই তখন কী হয়েছিল আমরা জানি না । পরবর্তীকালে আমরা সমস্ত কিছু ঠিকঠাক করেছি । অনেকটা কাজ এগিয়ে গেছিল তারপর থেকে আমরা কাজটা সম্পূর্ণ করেছি । স্ট্যান্ড চালু না হওয়ার কারণ হিসেবে বাস ওনার অ্যাসোসিয়েশন রাজ্য সড়ক থেকে স্ট্যান্ড দূরে থাকার যে অভিযোগ করছে তা ঠিক নয় । কারণ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসষ্ট্যান্ড সড়ক থেকে অনেকটা দূরেই হয়েছে । আশা করছি আমরা আগামী ছয় মাসের মধ্যেই স্ট্যান্ড চালু করার ব্যবস্থা করতে পারব ।"

Intro:তমলুক, ১৯সেপ্টেম্বর: পরিকল্পনার অভাব। তাই তিন কোটি ব্যায়ে শহরের বুকে সেন্ট্রাল বাস স্ট্যাণ্ড গড়ে উঠলেও আজও চালু করা গেল না তা। ফলে একদিকে যেমন সরকারি এই বিপুল অর্থ মাঠে মার খাচ্ছে তেমনি অন্যদিকে নূন্যতম পরিবহন পরিষেবা থেকেও বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা। স্ট্যাড ছাড়াই যত্রতত্র বাস দাঁড়ানোয় যানজট সমস্যায় ভুগছেন জেলা সদর শহর তমলুকের বাসিন্দারাও। কাঠগড়ায় তমলুক পুরসভা।Body:স্থানীয় ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১-১২ অর্থ বর্ষে তৃণমূল পরিচালিত পৌর বোর্ডের আমলেই প্রস্তাবিত সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ড নির্মানের কাজ শুরু হয়। তমলুক শহরের চককামিনা এলাকায় রেলস্টেশন সংলগ্ন এলাকায় বাসস্ট্যাণ্ডটি নির্মানে বরাদ্দ করা হয় প্রায় তিন কোটি টাকা। এরপর ঘটা করে ২০১৪সালে বর্তমান পরিবহন মন্ত্রী তৎকালিন তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারী এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তারপর কেটে গিয়েছে পাঁচ পাঁচটা বছর। এখনও চালু করা যায়নি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ডটি। ফলে পড়ে পড়ে নষ্ট হচ্ছে সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ডের পরিকাঠামো। প্রসঙ্গত, জেলা সদর তমলুকের মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে অতি ব্যস্ততম হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক। যা হলদিয়া থেকে মেচেদা, ঘাটাল, মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম সহ কলকাতাগামী প্রায় দুশোটির উপর সরকারি ও বেসরকারি বাসের প্রত্যাহ যাতায়াত। এর মাধ্যমে এই রুটে জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লক্ষ্যাধিক মানুষের জোরদিন আনাগোনা রয়েছে। এমন অবস্থায় তমলুক শহরে স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড না থাকায় বাসগুলি শহরের বিভিন্ন জায়গায় সড়কের উপরই দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রীদের নিয়ে ওঠা নামা করতে হচ্ছিল। এর জেরে জনবহুল এলাকার উপর দিয়ে চলা এই সড়কে প্রায়শই সৃষ্টি হচ্ছিল তীব্র যানজট। এই সমস্যা দূর করতেই বাম পরিচালিত তাম্রলিপ্ত পৌরসভার উদ্যোগে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল শহরের বুকেই তৈরি করা হবে একটি সেন্ট্রাল বাসস্ট্যাণ্ড। সেই মতো রাজ্য কৃষি বিপণন দফতরের অধিগৃহীত জমির উপর বাসস্ট্যাণ্ড তৈরির পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। এরপর রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল পরিচালিত পুরসভা সেই কাজে শুরুও করে দেয়। কিন্তু বাসস্ট্যাণ্ডটি জায়গা নির্বাচন নিয়েই উঠতে শুরু করে বিস্তর অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে যাত্রী ও বাস মালিক সংগঠনের অভিযোগ, রাজ্য সড়ক থেকে প্রায় ৫০০মিটার দুরে এই বাসস্ট্যাণ্ডটি গড়ে তোলায় তা ব্যবহার অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এরফলে শহরবাসীর বহু প্রতীক্ষীত এই সেন্টাল বাসস্ট্যাণ্ডটির স্বপ্নপূরনে আজও অধরাই রয়ে গিয়েছে।
Conclusion:এবিষয়ে পুরসভাকেই কাটগড়ায় তুলেছেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলা বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুকুমার বেরা। তাঁর অভিযোগ, সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ডের পরিকল্পনা শুরুর আগে অনেকগুলো দিক ভাবা উচিত ছিল। পৌরসভা স্ট্যান্ড নির্মাণ শুরুর সময় আমাদের সাথে কোন রকম আলোচনা করেনি। কোনো মতামতও না নিয়েই পুরসভার এই একতরফা হঠকারি সিন্ধান্তের জেরে নতুন এই বাসস্ট্যাণ্ডে বাস ঢোকা ও বেরানোর ক্ষেত্রে অনেকটাই সময় লেগে যাবে। ফলে কোন বাসই আর সরকার নির্ধারিত সময় সূচী অনুযায়ী চলতে পারবে না। তাই সমস্ত বাসেরই সময়সূচি সম্পূর্ণ পরিবর্তন না করেই বৃহৎ এই পরিকল্পনা কোন ভাবেই বাস্তবে রূপ দেওয়া যায় না। যদি প্রকল্প শুরুর সময়ই আমাদের সাথে এবিষয়ে আলোচনা করা হত তা হলে এই সমস্যা গুলি তুলে ধরা যেত। অপরিকল্পিত ভাবে বাসস্ট্যাণ্ড নির্মানের জেরেই তিন কোটি টাকা ব্যয় এই প্রকল্পটি মুখ থুবড়ে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শেখ রাজু বলেন, বাসস্ট্যান্ডে কোন বাস নাএসে  যত্রতত্র যাত্রী ওঠানামা করার   ফলে শহরের রাস্তায় যানজট বাড়ছে। সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে শুধু মাত্র কিছু টুরিস্ট বাস গ্যারেজ করে রাখা হয়। কোন পাবলিক বাস এখানে আসে না। বাস মালিকদের সঙ্গে পৌর কর্তৃপক্ষের সমঝোতা না হওয়ার কারণে এই সমস্যা হচ্ছে। যেখানে সেখানে বাস ড্রাইভাররা বাস দাঁড় করিয়ে রাখায় আমাদেরও যাওয়া-আসার সমস্যা হচ্ছে।  স্ট্যান্ড চালু  হলে শহরের মানুষ যেমন যানজট থেকে  মুক্তি পাবে অপরদিকে এক জায়গা থেকে সব বাসো ধরা যাবে।তাই আমরা চাই অবিলম্বে  সেন্ট্রাল বাস স্ট্যান্ড চালু হোক।

যদিও পরিকল্পনা অভাবের কথা মানতে নারাজ তমলুক পুরসভার উপ পুরপ্রধান দীপেন্দ্রনারায়ন রায়। তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন বাস অ্যাসোসিয়েশনে সংগঠন ও রাজ্য সরকারের পরিবহন দপ্তর কে বলেছি ওখানে বাস রেখে চালু করার জন্য। কিন্তু কিছু প্রাথমিক সমস্যা থাকার কারণে ওনারা ওখান থেকে বাস রাখ চালু করতে পারছেন না। পরিকল্পনা হয়েছিল বামফ্রন্টের সময়ে তাই তখন কি হয়েছিল আমরা জানি না। পরবর্তীকালে ওটা আমরা সমস্ত কিছু ঠিকঠাক করেছি। অনেকটা কাজ এগিয়ে গিয়েছিল তারপর থেকে আমরা কাজটা  সম্পূর্ণ করেছি। স্ট্যান্ড চালু না হওয়ার কারণ হিসেবে বাস ওনার অ্যাসোসিয়েশন রাজ্য সড়ক থেকে স্ট্যান্ড দূরে থাকার যে  অভিযোগ করছেন তা ঠিক নয়। কারণ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের বাসষ্ট্যান্ড থেকে অনেকটা দূরেই হয়েছে। আশা করছি আমরা আগামী ছয় মাসের মধ্যেই স্ট্যান্ড চালু করার ব্যবস্থা করতে পারবো।
Last Updated : Sep 20, 2019, 8:04 AM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.