কোলাঘাট,২৯ মার্চ: লকডাউনের জেরে গৃহবন্দি হয়েছেন সাধারণ মানুষ। বাজার হাট বন্ধ। ফলে দিন আনি দিন খাওয়া মানুষগুলোর দুর্দশার শেষ নেই। সরকারি উদ্যোগে রেশন সামগ্রী দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে কিন্তু তা এখনও বাড়ি বাড়ি পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ। ফলে সমস্যায় পড়ছেন গরীব মানুষেরা। তাঁদের সেই কষ্টের কথা ভেবেই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণে উদ্যোগী হল কোলাঘাট ব্লকের বরিশা স্বামীজি একাডেমি। সংস্থার উদ্যোগে প্রায় 800 জন গরীব মানুষের হাতে তুলে দেওয়া হয় দু কেজি করে চাল ও আলু।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন দশক ধরে কোলাঘাটের বরিশা গ্রামে বিভিন্ন সেবামূলক কাজকর্মের সাথে যুক্ত রয়েছে এই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। সংস্থার উদ্যোগে দীর্ঘদিন ধরেই স্বল্প খরচে এলাকার ছাত্র-ছাত্রীদের নাচ, ব্যায়াম,ছবি আঁকা ও আবৃত্তির প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। আর তা থেকেই সংস্থার ভাঁড়ারে জমতে শুরু করে কিছু টাকা। সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে মানুষের কষ্টের দিনে তাঁদের বাঁচাতে যদি সেই টাকা কাজে না লাগানো হয় তাহলে টাকা গচ্ছিত করে কী লাভ? সে কারণে সমস্ত সদস্যদের ডেকে আলোচনা করে ক্লাবের সঞ্চিত সমস্ত টাকা থেকে চাল ও আলু কিনে তা দুস্থ মানুষদের মধ্যে বিতরণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কয়েকদিন আগেই। এরপরই আজ থেকে কোলাঘাট ব্লকের বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে সেই নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণের কাজ শুরু করল সংস্থার সদস্যরা। সামাজিক দূরত্ব মেনেই সেই কাজ লকডাউনের দিনগুলোতে প্রতিনিয়ত চালিয়ে যাওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে সংস্থার তরফে।
এই বিষয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক বিশ্বনাথ দাস জানিয়েছেন, " যে মহামারীতে গোটা বিশ্ব আক্রান্ত হয়েছে তাতে আমাদের বসে থাকলে চলবে না। এলাকার অনেক মানুষ খাবারের সংকটে বাড়িতেই রয়েছেন । তাই সকল সদস্যদের সাথে আলোচনা করে স্থানীয় মানুষদের সহযোগিতা নিয়ে গরীব মানুষদের বাড়ি বাড়ি চাল ও আলু পৌঁছে দেওয়ার কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই 800 জন গ্রামবাসীর হাতে সেই পরিষেবা তুলে দেওয়া হয়েছে। আগামী দিনেও সেই কাজ চলবে।"
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার এই উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছেন কোলাঘাট ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি রাজকুমার কুন্ডু। তিনি জানান, আমাদের ব্লকে প্রায় 100 টির মত রেজিস্টার ক্লাব রয়েছে। যারা প্রত্যেকেই মুখ্যমন্ত্রীর তরফে সাহায্য পেয়েছে। বরিশার স্বামীজি একাডেমি যেভাবে সাধারণ মানুষের বিপদে পাশে দাঁড়িয়েছে সেভাবে সমস্ত ক্লাব উদ্যোগী হলে ব্লক এর কোন মানুষকে আর খেয়ে থাকতে হবে না ।"
ব্লকের সকল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি ।