হলদিয়া,1 মার্চ : কোরোনা আতঙ্কের জেরে হলদিয়া রাষ্ট্রায়ত্ত গ্যাস প্রস্তুতকারী সংস্থায় শ্রমিক বিক্ষোভ। এর ফলে বন্ধ হল হলদিয়ার কসবেড়িয়া ইন্ডিয়ান অয়েল পেট্রোনাস প্রাইভেট লিমিটেডের গ্যাস সরবরাহের কাজ। মাস্ক, স্যানিটাইজার ও গ্লাভস কর্মরত শ্রমিকদের না দেওয়ার কারণে তাঁরা কাজ বন্ধ করে দেন বুধবার দুপুর নাগাদ। ফলে গোটা রাজ্যসহ জেলায় গ্রাহকদের চরম ভোগান্তির আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জানা গিয়েছে, হলদিয়ার ওই গ্যাস কারখানা থেকেই রিফিলিং করে রাজ্য সহ একাধিক জেলায় সরবরাহ করা হয় রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার। মঙ্গলবার সকাল নাগাদ জানা যায় কসবেরিয়া গ্রামের বাসিন্দা কারখানার এক শ্রমিক জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন।তাই তিনি কাজে যোগ দিতে পারেননি। তারপরই গোটা কারখানায় রটে যায় ওই যুবক কোরোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এরপরই শ্রমিকরা কারখানায় কাজ করতে বেঁকে বসেন। তাঁদের অভিযোগ ভিন রাজ্য থেকে কারখানায় প্রতিদিনই গাড়ি নিয়ে আসছেন চালকেরা। কাজের স্বার্থে ওই চালকদের সঙ্গে মেলামেশা করতে হচ্ছে তাঁদের। কারও শরীরে কোরোনা ভাইরাস রয়েছে কি-না তা কেউ জানেননা। নিরাপত্তার জন্য সংস্থার তরফে শ্রমিকদের দেওয়া হয়নি গ্লাভস, মাস্ক ও স্যানিটাইজার ৷ এমনকী, স্বাস্থ্য বীমার আওতায় আনা হয়নি তাঁদের।
আর তাই নিরাপত্তার দাবিতে তাঁরা দুপুর নাগাদ কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে সেই বিক্ষোভ থামলেও কাজে যোগ দেননি কেউই। ফলে গ্যাসের সিলিন্ডার রিফিলিং না হলে হেঁসেলে গ্যাসের অভাব পড়বেই তা একরকম নিশ্চিত। যদিও সমস্যা কাটিয়ে উঠতে দফায় দফায় শ্রমিক নেতাদের সাথে আলোচনা চলছে কর্তৃপক্ষের।
এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক জানিয়েছেন, "আমরা কারখানায় কোনওরকম সুরক্ষার বন্দোবস্ত ছাড়াই এই মহামারীর দিনে প্রতিনিয়ত কাজ করে চলছি। সংস্থার তরফে কোন কিছুই ভাবনা চিন্তা করা হয়নি আমাদের জন্য। আজ এক শ্রমিকের জ্বর হয়েছে। আমরা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছি ৷ অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা করছি কিছু হলে কে দেখবে? তাই আমরা সবাই ঠিক করেছি যতদিন না সংস্থার তরফে আমাদের সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে আমরা ততদিন কাজে যোগ দেব না।"
যদিও এ বিষয়ে সংস্থার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, বর্তমানে আমাদের কাছে চারশোরও বেশি সিলিন্ডার বোঝাই গাড়ি রয়েছে। ফলে গ্রাহক পরিষেবার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না। শ্রমিক ও স্থানীয় প্রশাসনের সাথে দফায় দফায় আলোচনা চলছে। খুব শীঘ্রই সমাধানসূত্র বেরিয়ে আসবে।