তমলুক, ২৩ মার্চ : কোরোনা রুখতে বন্ধ করতে হবে একসঙ্গে অনেক মানুষের জমায়েত ৷ যে কারণে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সারাদেশ পালন করেছে জনতা কারফিউ । কোরোনা সতর্কতায় রাজ্যে লকডাউনের সিদ্ধান্তও নিয়েছে নবান্ন। বিকেল পাঁচটা থেকে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে । উদ্দেশ্য একটাই, জমায়েত বন্ধ করে কোরোনার সংক্রমণ রুখে সাধারণ মানুষকে বাঁচানো । এরই মধ্যে রাজ্য সরকারের তরফে সরকারি স্কুলগুলিতে বিলি করা হচ্ছে চাল ও আলু । সেই সমস্ত খাদ্যপণ্য বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলে ভিড় জমাচ্ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের বিভিন্ন স্কুলের পড়ুয়া থেকে অভিভাবকরা । একেবারে ঠাসাঠাসিভাবে দাঁড়িয়েই খাদ্যদ্রব্য সংগ্রহ করছেন তাঁরা । জেলার বাহারগ্রাম নিউ প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর মেচোগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়, ধুলিয়াড়া মহেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো স্কুলগুলিতে দেখা গেল সেই চিত্র ৷ এতে সংক্রমণ আরও ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে বলে মনে করছেন চিকিৎসকরা ।
সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, রাজ্যের প্রতিটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুলগুলি থেকে পড়ুয়া পিছু ২ কেজি আলু ও ২ কেজি চাল তুলে দেওয়া হবে ৷ নির্দেশিকা অনুযায়ী জেলার মিড ডে মিল সরবরাহ সেন্টারগুলি থেকে স্কুলে এসে পৌঁছায় পর্যাপ্ত পরিমাণ চাল ও আলু । এরপর আজ পূর্ব মেদিনীপুর জেলার একাধিক স্কুলে খাদ্যদ্রব্য বিলি শুরু হয় ৷ দেখা যায়, স্কুলে জমায়েত করেন শয়ে শয়ে মানুষ ।
চাল, আলু নিতে আসা অভিভাবক পূর্ণিমা দাস জানান, "জমায়েত হলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে এটা আমরা জানি । কিছু করার নেই ৷ আমি দূরে রয়েছি ঠিকই, কিন্তু কেউই নিয়ম মেনে লাইনে দাঁড়াচ্ছেন না । কাজকর্ম সব বন্ধ হয়ে গিয়েছে । একমাস ধরে এই অবস্থা চলতে পারে । বাজারে আলুর দাম 25 টাকা হয়ে গিয়েছে । তাহলে খাব কী ? তাই আতঙ্ক উপেক্ষা করেই চাল ও আলু বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য স্কুলে এসেছি ।" পাঁশকুড়া গান্ধি বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক তপন কুমার মাইতির কথায়, "আমরা সরকারি নির্দেশ মেনে কেবলমাত্র অভিভাবকদের ডেকেছিলাম । জমায়েত যাতে না হয় দুটি করে ক্লাসের অভিভাবকদের ডাকা ছিল । কিন্তু খবর পেয়ে সবাই ভিড় জমিয়েছে ৷ বাদ নেই পড়ুয়ারাও । আমাকেই ঘিরে সবাই দাঁড়িয়ে রয়েছে ৷ আমি নিজেও আতঙ্কিত । তাই মাস্ক পরে বসে রয়েছি । বর্তমানে যা অবস্থা এখান থেকেই কোরোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়তে পারে ।"