রামনগর, 17 ফেব্রুয়ারি: আবারও বিতর্কে মন্ত্রী অখিল গিরি । এবার তাঁর নিশানায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি । রামনগরের সভা থেকে তিনি বলেন, "প্রধানমন্ত্রী গরুকে আঁকড়ে ভালোবাসা করতে গিয়েছিলেন। গরু গুঁতিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।" স্বভাবতই মন্ত্রীর এই মন্তব্য ঘিরে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে । কয়েক মাস আগে একটি দলীয় সভা থেকে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন । এবার তাঁর নিশানায় প্রধানমন্ত্রী মোদি ।
দু'দিন আগে বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডার সভার পর বৃহস্পতিবার পালটা সভা করে তৃণমূল। সেখানে বিজেপি-র 'কুৎসা'র বিরুদ্ধে সরব হলেন অখিল, কুণাল-সহ অন্যান্যরা। রামনগর আরএসএ ময়দানে গত রবিবার একই মাঠে সভা করেছিলেন বিজেপি-র সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা। ওইদিনের সভায় প্রতিবেশী রাজ্য ওড়িশা থেকে লোক আনিয়েও বিজেপি মাঠ ভরাতে পারেনি বলে দাবি করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে। সেই সঙ্গে বিজেপির নেতৃত্বের বিরুদ্ধে মিথ্যে প্রচারের অভিযোগ তুলেছিলেন তৃণমূল নেতৃত্ব। এরপর গতকাল, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার একটি সভার আয়োজন করেছিল তৃণমূল। সেখানেই অখিল গিরি, প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করেন (Akhil Giri Slams Narendra Modi)৷
এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, "পাশের রাজ্য ওড়িশা থেকে লরিতে করে লোক নিয়ে এসে মাঠ ভরানো হল। সুকান্ত মজুমদার এখানে কাঁচকলা করবেন ! এখানে এত শক্তি দেখাতে আসবেন না। আর আজকের সভায় বিজেপির তুলনায় অন্তত দু'গুণ বেশি লোক হয়েছে ৷ রামনগর বিধানসভার 17টি অঞ্চলেই তৃণমূল রয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতি, জেলা পরিষদও আমাদের দখলে। ক্ষমতা থাকলে বিজেপি মোকাবিলা করে দেখাক। লড়াই করে দেখাক। ফেস-টু-ফেস লড়াই হোক।" এমনকী তিনি এদিন চ্যালেঞ্জ করে বলেন, "পারলে বুথে বুথে প্রার্থী ঠিক করে দেখাক।"
এরপর তিনি বলেন, "14 তারিখ ভ্যালেন্টাইন্স ডে ছিল, ভালোবাসা দিবস, ছেলে-মেয়েরা প্রেম করে । গোলাপ ফুল দেওয়া-নেওয়া হয়। একজন মানুষকে আরেকজন মানুষ ফুল দিয়ে ভালোবাসে। প্রধানমন্ত্রী গরুকে আঁকড়ে ভালোবাসা করতে গিয়েছিলেন। গরু গুঁতিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে। পুরো পড়ে গিয়েছে। ভাগ্যিস গরু ছিল, ষাঁড়কে ধরেননি প্রধানমন্ত্রী, ধরলে ষাঁড় গুতিয়ে দিলে পেটে লেগে যেত, তারপর ফুস!" মন্ত্রী আরও বলেন, "14 তারিখ ভ্যালেন্টাইন্স ডে'তে নরেন্দ্র মোদি গরুকে আঁকড়ে ধরেছেন, কী সুন্দর! আগামী 24-এ গুঁতো খাবে। যাতে উলটে পড়বে প্রধানমন্ত্রী মানুষ পার্লামেন্টের বাইরে পাঠিয়ে দেবে।"
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতিকে কুরুচিকর মন্তব্য, মামলা থেকে মুখ্যমন্ত্রীর নাম বাদ দেওয়ার নির্দেশ
এদিন বিজেপির পালটা জবাব দিতে গিয়ে 'হেরো নাড্ডা' বলে কটাক্ষ করেন কুণাল ঘোষও। তিনি বলেন, "যিনি নিজের রাজ্য বিজেপিকে জেতাতে পারেন না। তিনি এসেছেন এখানে জ্ঞান দিতে! হিমাচলপ্রদেশ কার রাজ্য ? সেখানে বিজেপি ক্ষমতায় ছিল। জিততে পারেনি। হেরে গিয়েছে। নিজের রাজ্যকে হারিয়ে তিনি এখানে এসেছেন শুভেন্দু অধিকারীর হয়ে দালালি করতে।"
তাঁদের কটাক্ষ নিয়ে বিজেপির পালটা দাবি, সভায় মাঠ ভরাতে দলের অভিনেতা-সাংসদ ও শত্রুঘ্ন সিনহাকে নিয়ে আসতে হয়েছিল। অভিনেতা দেখিয়ে মাঠ ভরাতে হয়েছে। কাঁথি সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সভাপতি সুদাম পণ্ডিত বলেন, "একটা মোস্ট থার্ড ক্লাস দল। দুর্নীতি করতে করতে রাজ্যটাকে শেষ করে দিয়েছে। ওদের কথায় কান দিয়ে আমাদের লাভ কী। ওদের মতো আমাদের তো আর অভিনেতা দেখিয়ে লোক ডাকতে হয়নি। বিনাশকালে বুদ্ধিনাশ হয়েছে তৃণমূলের নেতা-নেত্রীদের। তাই ভুল-ভাল কথা বলছেন ।"