তমলুক, 6 মে : কোরোনা আতঙ্কের মাঝেই খানিকটা হলেও স্বস্তিতে পূর্ব মেদিনীপুরের কনটেইনমেন্ট জ়োন শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বাসিন্দারা । আজ জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে জানা গেছে, প্রথম দফায় যে 170 জনের পরীক্ষা হয়েছিল, তাঁদের প্রত্যেকের রিপোর্ট নেগেটিভ । তবে স্বাস্থ্য বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের তরফে লাগাতার এলাকা বাসীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা চলছে । সেইসঙ্গে ব্লকের প্রতিটি বাজার এলাকায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছে প্রশাসন । দোকানগুলির উপরও নজর রাখা হয়েছে ।
31 মার্চ তমলুকের শহিদ মাতঙ্গিনী ব্লকের বছর 82-র এক পান ব্যবসায়ী প্রথম কোরোনায় আক্রান্ত হন। পরে ওই বৃদ্ধের সংস্পর্শে এসে তাঁর স্থানীয় চিকিৎসকের পরিবার সহ নিজের পরিবারের মোট 13 জন কোরোনায় আক্রান্ত হন। আক্রান্তদের মধ্যে বৃদ্ধের এক ভাইয়ের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে । কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে ভরতি ছিলেন তিনি । বাকি আক্রান্ত 11 জন পাঁশকুড়ার কোরোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন । পরে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আক্রান্ত বৃদ্ধ এখনও কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সংক্রমণ প্রতিরোধে শহীদ মাতঙ্গিনী ব্লকের দুটি গ্রামকে পুরোপুরি সিল করে দেওয়া হয় প্রশাসনের তরফে। আক্রান্তদের সংস্পর্শে থাকা 277 জন বাসিন্দাকে হোম আইসোলেশনে রাখা হয়। তারপর ধাপে ধাপে ওই দুই গ্রামের উপসর্গ থাকা বাসিন্দাদের সোয়াব সংগ্রহ করে টেস্টের জন্য পাঠানো হয় কলকাতা ও মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজে।
গত কয়েকদিনে প্রথম দফায় যে 170 জনের রিপোর্ট জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের হাতে এসে পৌঁছেছে, তাতে প্রত্যেকের রিপোর্টই নেগেটিভ । রিপোর্টে স্বস্তি মিললেও জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ কোনওভাবেই তা হালকাভাবে নিতে নারাজ। স্বাস্থ্য বিভাগের তরফ্ জানানো হয়েছে, লাগাতার ওই এলাকার তিন কিলোমিটার ব্যাসার্ধ জুড়ে নিয়ম করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে বাসিন্দাদের । নতুন করে এলাকা থেকে কোনও আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া না গেলেও এলাকার বাজার, দোকানপাট লকডাউনের বিধি মেনে চলছে ।
এবিষয়ে পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, "প্রথম দফায় 170 জনের রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে । তবে ভবিষ্যতে আর কেউ যে নতুন করে সংক্রমিত হবে না তার কোনও মানে নেই। তাই আমাদের সদা সতর্ক থাকতে হবে। এলাকার বাসিন্দাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রক্রিয়া জারি থাকবে । কোনওভাবেই লকডাউন শিথিল করা যাবে না।"
প্রসঙ্গত, গতকাল রাতে ওড়িশা ও আজমেড় থেকে 84 জন শ্রমিক বাসে করে জেলায় এসে পৌঁছেছেন। তাঁদের প্রত্যেককেই মেচেদা স্টেশন লাগোয়া পথসাথী কোয়ারানটিন সেন্টারে 14 দিনের জন্য থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।