বর্ধমান, 14 এপ্রিল: আগে চৈত্র মাস মানেই ছিল বিভিন্ন ছাপাখানার চূড়ান্ত ব্যস্ততা (Bengali new year)। ক্যালেন্ডার, হালখাতা তৈরি-সহ আনুষঙ্গিক কাজ করতেই তাঁদের কখন যে দিনরাত এক হয়ে যেত তা তাঁরা টেরই পেতেন না । অথচ বিগত দু'বছরের লকডাউনের জেরে আজ সেই ছবিটা সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে । চৈত্র মাসের শেষ দিনে সারাদিন হাতগুটিয়ে বসে থাকলেন ছাপাখানার কর্মীরা (worries over low demand of Haal Khata and calendar)৷
সারা রাজ্যের সঙ্গে বর্ধমান শহরের ব্যবসায়ীরাও পয়লা বৈশাখের দিনে হালখাতায় মেতে ওঠেন (Haal Khata and Bengali calendar)। ভোর হতে না হতেই দেবী সর্বমঙ্গলা মন্দিরে পুজো দিয়ে শুরু হয় বর্ষবরণ উৎসব । এরপর বিকেলে শুরু হয় নিত্যদিনের খদ্দেরদের দোকানে আনাগোনা । পুরনো দিনের যা কিছু হিসেব-নিকেশ সব চুকিয়ে দিয়ে খদ্দেরদের হাতে মিষ্টির প্যাকেট আর ক্যালেন্ডার ধরিয়ে হাসি মুখে বিদায় জানান ব্যবসায়ীরা ।
চলতি বছরে সেই ছবিটা কিছুটা হলেও ফিকে ৷ আর তারই প্রমাণ মিলেছে বিভিন্ন ছাপাখানাগুলোতে । আগে যেখানে মাঘ-ফাল্গুন মাস থেকেই ক্যালেন্ডার, হালখাতা তৈরির অর্ডার নেওয়া শুরু হয়ে যেত, চলতি বছরে তা হয়নি ৷ করোনা পরিস্থিতির জন্য বিগত দু'টো বছর বাদ দিলে তার আগের সমস্ত বছরে চৈত্র মাসের শেষ দিনে ব্যবসায়ীদের নাওয়া খাওয়ার সময় থাকে না । অথচ আজ সেই ছবি অতীত ৷
আরও পড়ুন: মন ভালো করতে অন্য হালখাতা পালন বৃদ্ধাশ্রমের আবাসিকদের
ব্যবসায়ী বিজয়েশ তা বললেন, "পেট্রোপণ্যের দাম বৃদ্ধির জন্য কাগজের দাম অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছে । সেই কারণে ক্যালেন্ডারের দামও অনেকটাই বেড়েছে । এই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সময় লাগবে । জানি না সরকার কী ভাবছে ! তবে পরিস্থিতি এমন দিকে যাচ্ছে যে ছোট ব্যবসাগুলো আগামী দিনে উঠে যাওয়ার জোগাড় ।"
ব্যবসায়ী সন্দীপ চক্রবর্তী বলেন, "বিগত দু'বছর আগে যে ব্যবসা ছিল সেই ব্যবসা এখন আর নেই বললেই চলে । আগে ব্যবসায়ীদের চাহিদামত যেখানে হাজার বারোশো ক্যালেন্ডার তৈরি হত, এখন এক ধাক্কায় তা 60 থেকে 70 শতাংশ কমে গিয়েছে । চাহিদা কমে যাওয়ায় ফাঁকা বসে থাকতে হচ্ছে মুদ্রণ কর্মীদেরও ৷ কাজ না পেয়ে অনেকে অন্য কাজে যুক্ত হয়েছে ৷" পরিস্থিতি বদলাতে সরকার কী পদক্ষেপ করে, সে দিকেই তাকিয়ে ব্যবসায়ীরা ৷
আরও পড়ুন: Halkhata Ceremony Crisis: ডিজিটাল লেনদেনে অস্তিত্ব সংকটে হালখাতা