বর্ধমান, 21 মে: দলীয় কোন্দল মেটানোর জন্য দিন সাতেক সময় দিয়েছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু তারপরেও মিটছে না পূর্ব বর্ধমানে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব ৷ সমস্যা মেটাতে জেলা সভাপতির নির্দেশে দলীয় নেতাদের কাছে পৌঁছলেও সেই কোন্দল তো মেটেইনি বরং তা আরও জটিল আকার ধারণ করেছে ৷
এই কোন্দল মেটাতে জেলা তৃণমূল নেতৃত্বের তরফে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্থানীয় বিধায়ক ও ব্লক সভাপতিদের সঙ্গে আলোচনা করেই কাজ করতে হবে । দলীয় নেতাদের মতে আসলে যারাই ক্ষমতা পাচ্ছে তারা তাদের নিজেদের ইচ্ছেমতো দলকে পরিচালনা করতে চাইছে । দলীয় কর্মীদের কথাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না । ফলে সমাধানসূত্র বের হবে কীভাবে ?
উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে পূর্ব বর্ধমান জেলায় নবজোয়ার কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, দলীয় নেতা কর্মীদের নিয়ে রাত্রি অধিবেশনে বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, "মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে হবে । কোনও পঞ্চায়েত প্রধান যদি মনে করেন পাঁচ বছর ধরে ক্ষমতায় থেকে যা খুশি তাই করে যাবে তাহলে তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছেন । আর কোনও নেতার সুপারিশে কাউকে টিকিট দেওয়া হবে না । আমি নিজে তিন মাস অন্তর পর্যালোচনা করব । মানুষের কাছে গিয়ে হাসিমুখে তাদের কথা শুনতে হবে । সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করতে হবে । সকলকেই মনে রাখতে হবে সাধারণ মানুষ যদি তাদের ভোট না-দেয় তাহলে আজ কেউ জনপ্রতিনিধি হতে পারতেন না । তাই জনগণের কথা ভেবে সবাই মিলেমিশে কাজ করুন ।"
এদিকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশ পেয়ে জেলা তৃণমূল কার্যালয়ে জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়, মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী-সহ অন্যান্য বিধায়করা বৈঠকে বসেন ৷ বৈঠকে যোগ দেন দলের ব্লক সভাপতি-সহ অন্যান্য নেতারাও ৷ দলীয় সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে সমস্যার সমাধান তো হয়নি উলটে প্রকাশ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয় । এমনকি কয়েকজন নেতা রেগে সভা ছেড়ে চলে যান ৷ শুধু তাই নয়, মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীর সামনেই তাঁর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মেমারি 2 নম্বর ব্লকের একাধিক নেতা ৷
আরও পড়ুন: 'আমি তো কুন্তলের নাম নিইনি...', সিবিআই জিজ্ঞাসাবাদ শেষে চিঠি মামলায় সাফাই অভিষেকের
মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ, সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী যখন মন্তেশ্বর বিধানসভার টিকিট পান তখন যেসব তৃণমূল কংগ্রেসের দলীয় কর্মীরা তাঁকে জেতানোর জন্য কাজ করেছিলেন আজ তাদের দলে কোনও গুরুত্বই দেওয়া হয় না । উলটে সেই সময় যারা সিপিএম কিংবা বিজেপির হয়ে প্রচার করছিলেন তারাই আজ দল বদল করে তৃণমূল কংগ্রেসে এসে ছড়ি ঘোরাচ্ছে । মেমারি 1 নম্বর ব্লক, রায়না 1, রায়না 2, বর্ধমান 1, মন্তেশ্বর-সহ বেশকিছু ব্লকের নেতাদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সতর্ক করা হয় ৷ বর্ধমান 1 নম্বর ব্লকের নেত্রী কাকলি গুপ্তের সঙ্গে জেলা পরিষদের সদস্য নুরুল হাসানের দ্বন্দ্বের জেরে নুরুল হাসানকে ভর্ৎসনা করে জেলা নেতৃত্ব । এমনকি সাবধান না হলে দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে । যদিও, নুরুল হাসানের অভিযোগ, তাঁর মতো অনেককেই কথা বলতে দেওয়া হয়নি সভায় । ফলে সমস্যা সহজে মিটবে না ।