বর্ধমান, 18 অগস্ট : "স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মতো ধাপ্পা কিছু নেই ৷" এই বলে তার সপক্ষে উপস্থিত জনতার থেকে সমর্থন চাইতে ফের জিজ্ঞাসা করলেন, "কী বললাম ?" ৷ জনগণও তাতে সায় দিয়ে একই কথা বলে উঠল একসঙ্গে ৷ মঙ্গলবার সন্ধেয় বর্ধমানে বিজেপির শহিদ সম্মান যাত্রায় যোগ দিতে এসে খোলা মঞ্চে এই মন্তব্য করলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ সুভাষ সরকার । এমনকি বলেন যে "কর্ম সাথী"তে যেমন ধাপ্পা হয়েছিল, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডেও সেরকম হবে ৷ এর ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, "লোকে কার্ড পাবে, কিন্তু লোন পাবে না ৷ তার কারণ তাতে যে নিয়মাবলী রাজ্য সরকার করেছে, সেটি ইচ্ছাকৃত ত্রুটিযুক্ত করেছে ৷"
গতকাল কলকাতার মুরলীধর সেন লেনে পুলিশি বাধা পেরিয়ে তিনি একা কনভয় নিয়ে শহিদ সম্মান যাত্রা শুরু করেন ৷ বর্ধমান শহরে বিজেপির এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি ৷ তবে সব উত্তরে ছিল তৃণমূল সরকারের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ৷
মাওবাদীদের প্রতি রাজ্যসরকার
রাজ্য সরকারের স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড কর্মসূচি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "এই ধরনের কার্যকলাপ হলে, প্রথমে রাজ্য সরকারকে জানতে হবে ও জানাতে হবে ৷ এটা রাজ্য সরকারের প্রাথমিক দায়িত্ব ৷" এ প্রসঙ্গে তিনি বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতে মাওবাদীদের প্রতি রাজ্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির কথা টেনে বলেন, "রাজ্য সরকার প্রয়োজনমতো মাওবাদী তৈরি করে ৷ আবার কাজ মিটে গেলে তাদের মেরেও ফেলে । তাই এর উত্তর প্রাথমিকভাবে রাজ্যসরকারই দিতে পারবে ৷"
পৌরসভা ভোট
পৌরসভার ভোট না হওয়া নিয়ে তাঁর মত, ভোট করলে যদি লোকাল বডিগুলি বিজেপির হাতে চলে যায়, এই আতঙ্কে রয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস । এই আতঙ্কের কারণে ভোট করছে না তৃণমূল সরকার ৷
আরও পড়ুন : Shahid Samman Yatra : কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে গ্রেফতারের অভিযোগ, রাজ্য সরকারকে তালিবানের সঙ্গে তুলনা বিজেপির
ভোট-পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা
শহিদ সম্মান যাত্রার পুলিশি বাধা প্রসঙ্গে তিনি জানান যে এই ধরনের বাধা বিজেপি আশা করেছিল ৷ তার কারণ 2 মে-র পর থেকে রাজনৈতিক হিংসায় বহু মানুষের প্রাণ গিয়েছে । তা সত্ত্বেও সে সব ক্ষেত্রে বিজেপির কার্যকর্তাদের মিথ্যে মামলায় জড়ানো হয়েছে । আর সেটা এখনও থামেনি ৷ তাতে পুলিশের আচরণে বিজেপির আন্দাজ ছিল যে পুলিশ এই যাত্রা করতে দেবে না ৷
রাজ্য সরকারের করোনা বিধিনিষেধ
রাজ্যে এখনও চলছে করোনা বিধিনিষেধ বা কার্যত লকডাউন ৷ এই পরিস্থিতি নিয়ে তিনি বলেন, "রাজ্য সরকার একদিকে বলছে সংক্রমণ কমছে, অন্যদিকে লকডাউন বাড়িয়ে দিচ্ছে । আবার লকডাউন বাড়িয়ে দিয়ে পার্কগুলিকে খুলে দেওয়া হল । এটা কী রকম ?"
খেলা হবে দিবস
বাদ যায়নি তৃণমূল সরকারের "খেলা হবে দিবস" পালন ৷ এই দিবসের সমালোচনা করে তিনি জানিয়েছেন, এই দিনটা রাজ্যের মানুষের সবচেয়ে দুঃখের দিন ৷ এই দিনে গ্রেট ক্যালকাটা কিলিং হয়েছিল । কলকাতার পথে কয়েক হাজার মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল, মহিলাদের উপর অত্যাচার করা হয়েছিল ৷ সেই দিনটাকে বাছা হল খেলা হবে দিবস হিসেবে । তাঁর কথায়, "স্বভাবত তারা সমাজকে নিয়ে কতখানি ভাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ।"