বর্ধমান, 17 মার্চ: সাঁইবাড়ি হত্যাকাণ্ডের 53 বছর পেরিয়ে গেলেও মেলেনি বিচার। অথচ বর্ধমানের রাজনীতিতে সাঁইবাড়ি একটা অন্যতম ঢাল রাজনৈতিক নেতাদের। তাহলে কি শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্বার্থেই সাঁইবাড়িকে ব্যবহার করা হয় আক্ষেপ পরিবারের সদস্যদের। আজ শুক্রবার 53তম শহিদ দিবসে তাঁদের শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ-সহ অন্যান্য তৃণমূল নেতারা (Saibari Murder Incident Controversy)।
1970 সালের 17 মার্চ বর্ধমান শহরের বীরহাটা সংলগ্ন প্রতাপেশ্বর শিবতলায় সাঁইবাড়িতে ঘটেছিল নারকীয় হত্যাকাণ্ড। দুই ভাই প্রণব সাঁই, মলয় সাঁই-সহ খুন হয়েছিলেন ওই বাড়ির গৃহশিক্ষক জিতেন রায়। ওই বাড়িতে পড়াতে যেতেন তিনি। ওই মামলায় নাম জড়ায় প্রয়াত নিরুপম সেন, বিনয় কোঙার-সহ সিপিএমের বহু নেতা-কর্মীর। সাঁই পরিবারের অভিযোগ, পুরো বাড়ি ঘিরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল। রান্নাঘরে ঢুকে প্রণব আর জিতেনকে বল্লম দিয়ে খুঁচিয়ে-পিটিয়ে খুন করা হয়। পাশের বাড়িতে খাটের তলায় লুকিয়ে থাকা মলয়কেও টেনে বার করে খুন করা হয়।
এদিন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, "এই সাঁই বাড়িতেই ঘটেছিল নারকীয় হত্যাকাণ্ড। সিপিএমের গুন্ডা বাহিনীর হাতে খুন হয়েছিলেন বাড়ির সদস্যরা। যে হত্যাকান্ড দেখে কেঁপে উঠেছিল বাংলা তথা ভারতবর্ষের মানুষ। আজ 53 বছর ধরে আমরা শহিদদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে আসছি।" বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার বলেন, "1970 সালে আজকের দিনকে স্মরণ করে আমরা এই শহিদ দিবস পালন করে আসছি। সেই হত্যাকাণ্ডের কথা মনে পড়লে পুরনো দিনের মানুষেরা আজও শিহরিত হয়ে ওঠেন। কীভাবে বাড়িতে ঢুকে মায়ের সামনে তাঁদের সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল তা ভাবলে আজও গায়ে কাঁটা দেয়। সেই দিন যে রক্তের হোলি খেলা হয়েছিল তারই প্রতিবাদে মানুষ সিপিএমকে বিদায় করেছে। রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল কংগ্রেস। তাই তাঁদের রক্তঋণ আমরা কোনওদিন শোধ করতে পারব না। এই স্মৃতিস্তম্ভের অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। আমরা নতুন করে স্মৃতি স্তম্ভ তৈরি করেছি।"
আরও পড়ুন: বগটুই হত্যাকাণ্ডের মূল অভিযুক্তদের গ্রেফতারি-সহ বিভিন্ন দাবিতে সিপিএমের মিছিল
সাঁই পরিবারের সদস্যরা এখন শাসকদলের সদস্য। তবুও তাঁদের আক্ষেপ 53 বছর পেরিয়ে গেলেও কোনও বিচার মেলেনি। বিচারের জন্য একের পর এক কমিশন গঠন করা হয়েছে। কিন্তু বিচার মেলেনি। কোনও সরকারই কিছু করেনি। অথচ প্রতিবছর শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের সময় নেতারা এই সাঁইবাড়িকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করে থাকেন। সাঁইবাড়ির পরিবারের সদস্যদের একটাই প্রশ্ন বিচার কি আদৌ মিলবে?