রায়না, 27 মে: প্ল্যাস্টিক ব্যবহার নিয়ে দুঃশ্চিন্তা রয়েছে প্রশাসন-সহ সব মহলেই। কীভাবে প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানো যায় তা নিয়ে বিভিন্ন মহলে চিন্তাভাবনাও চলছে। পুনর্ব্যবহার যোগ্য না করা গেলেও, এবার সেই বর্জ্য প্লাস্টিককেই ব্যবহার করা হচ্ছে রাস্তা তৈরিতে। পূর্ব বর্ধমান জেলার রায়না দুই নম্বর ব্লকের একলক্ষী টোলপ্লাজা থেকে রাউতারা সেতু পর্যন্ত রাস্তা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর ফলে রাস্তার যেমন সৌন্দর্য বাড়ছে পাশাপাশি রাস্তার স্থায়িত্বও বেড়ে যাবে দুই থেকে তিনগুণ ৷ এমনটাই আশা প্রকাশ করছেন রাজ্যের মন্ত্রীর।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, 22 লক্ষ 94 হাজার টাকা খরচ করে উচালন গ্রাম পঞ্চায়েতের একলক্ষী থেকে রাউতারা সেতু পর্যন্ত প্রায় 320 মিটার রাস্তা প্লাস্টিক ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে। মূলত দুবাই, দোহা ইত্যাদি গরমের দেশগুলিতে দেখা যায় রাস্তায় প্লাস্টিকার ব্যবহার ৷ সেক্ষেত্রে যুক্তি, যেহেতু সেখানে তাপমাত্রা অত্যধিক বেশি, সে কারণে রাস্তা যাতে সহজে তাপ শোষণ করতে পারে সেই কথা ভেবেই রাস্তায় প্ল্যাস্টিক ব্যবহার করা হয়। এর ফলে একদিকে যেমন রাস্তার স্থায়িত্ব অনেকটাই বেড়ে যায়, পাশাপাশি রাস্তার উপরে জলও দাঁড়ায় না। সেই কথা মাথায় রেখে এবার উচালনের ক্ষেত্রে পাইলট প্রজেক্ট নেওয়া হয় নীল রাস্তা। সম্ভবত শুধু রাজ্য নয়, দেশের মধ্যে প্রথম এই নীল রাস্তা তৈরি করা হল বলেই দাবি স্থানীয় প্রশাসনের।
জেলা পরিষদের ইঞ্জিনিয়ারিং মেন্টর রাকেশ কুমার ধারা বলেন, "এই রাজ্যে কেন, দেশের মধ্যে প্রথম পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে রাস্তার উপর নীল কোটিং করা হয়েছে ৷ এর ফলে রাস্তার স্থায়িত্ব অনেকগুণ বৃদ্ধি পাবে।" তাঁর দাবি, প্লাস্টিকের এই রাস্তার উপর জল দাঁড়াবে না ৷ সেই সঙ্গে, তাপ শোষণ করে নেবে বলেও দাবি করেন ইঞ্জিনিয়ার। রাকেশ কুমারের দাবি, অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে প্লাস্টিক মেশানোর ফলে রাস্তা আরও মজবুত হয়েছে। পাশাপাশি রাস্তাকে ভালো রাখার জন্য রাস্তার উপরে একটা নীল কোটিং ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, "সেই চিন্তা আমরাও করেছি। বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এই নীল রাস্তা তৈরি করা হয়েছে।"
আরও পড়ুন: পৌরনিগমের ওয়েবসাইটে দেখা যাবে বাড়ির অনুমোদিত নকশা, বেআইনি নির্মাণ রুখতে তৎপর কর্পোরেশন
রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার বলেন, "লাগাতার কেন্দ্রীয় বঞ্চনার কারণে গ্রামোন্নয়নে কাজকর্ম ব্যহত হচ্ছে। সেই পরিস্থিতিতে মুখ্যমন্ত্রী গ্রামের মানুষের কথা ভেবে 12 হাজার কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে নির্মাণ করছেন। সেই কাজ চলছে। সেই কাজের অঙ্গ হিসেবে রায়নার উচালন গ্রামে বর্জ্য প্লাস্টিক থেকে রাস্তায় ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে রাস্তার স্থায়িত্ব বাড়বে। সেই সঙ্গে ব্যবহৃত প্লাস্টিক নিয়ে আমাদের দুঃশ্চিন্তা অনেকটাই কমে যাবে।"