বর্ধমান, 11 জুন: সমঝোতার কথা বলা হলেও কংগ্রেসকে ছাড়াই পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করায় ক্ষুব্ধ বর্ধমান জেলা কংগ্রেস নেতৃত্ব । কংগ্রেসের অভিযোগ প্রার্থী বাছাই করা নিয়ে সিপিএম কোনও আলোচনাই করেনি । পঞ্চায়েত ভোট ঘোষণার পর থেকেই রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে প্রস্তুতি নেওয়ার পর্ব শুরু হয়ে গিয়েছে । পূর্ব বর্ধমান জেলায় সিপিএমের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই জেলা পরিষদের জন্য 66টি আসনের মধ্যে 61টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে । শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপির পক্ষ থেকে এখনও কোনও প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়নি । 66টি আসনের মধ্যে 61টি আসনে লড়বে সিপিএম । বাকি 5টি আসন তাদের শরিকদের জন্য ছেড়ে রাখা হয়েছে ।
এককালে সিপিএমের গড় নামে পরিচিত ছিল বর্ধমান জেলা । জেলা ভাগ হয়ে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমান হয় । এরপর 2013 সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে পূর্ব বর্ধমান জেলা সিপিএমের হাত থেকে তৃণমূলের কংগ্রেসের দখলে যায় । 2018 সালেও তৃণমূল পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদ নিজেদের দখলে রাখে । যদিও বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ ছিল, 2018 সালে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে মনোনয়ন জমা দিতে না দিয়ে প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে একতরফাভাবে তৃণমূল জেলা পরিষদের দখল নেয় ।
কিছুদিন আগে কর্ণাটকে কংগ্রেসের ফল দেখার পরে ফের কংগ্রেস সিপিএমের জোট নিয়ে একটা আশার আলো দেখা গিয়েছিল । প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও জোট প্রসঙ্গে দু'দিন আগে বলেন, "এই পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম কংগ্রেস একসঙ্গে লড়ছি । কিন্তু পূর্ব বর্ধমান জেলার ক্ষেত্রে কোনও আলোচনাই হয়নি । সিপিএমের তরফে বলা হয় দলের নির্দেশেই জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে ।"
সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেনের বক্তব্য, কমিশন যেভাবে দিনক্ষণ ঠিক করেছে তাতে শনি ও রবিবার বাদ দিলে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য পাঁচদিন সময় রয়েছে ৷ মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য দেওয়া হয়েছে চার দিন । অর্থাৎ, এই প্রশ্ন এসেই যায় শাসকদলকে সুবিধা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ যাতে ভয় দেখিয়ে মনোনয়ন তুলে নেওয়া যায় সেই জন্য কি মনোনয়ন তুলে নেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হয়েছে ? 2018 সালের নির্বাচন একথাই বলে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার সময় বেশি থাকলে হুমকি দিয়ে প্রত্যাহার করানোর কাজ করা সম্ভব । সেইজন্যই সাধারণ মানুষ থেকে রাজনৈতিক দলের মধ্যে এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । 2018 সালের নির্বাচনের চেহারা সকলেই দেখেছে । সকলেই দেখেছে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে বিরোধীরা কিভাবে আক্রান্ত হয়েছে । ব্লকগুলিতে জমায়েত করে কীভাবে আটকানো হয়েছে সেটাও কারও অজানা নয় । তবে আমরা নির্বাচনে লড়াই দিতে প্রস্তুত । আমরা অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন চাই ।
অন্যদিকে, জোট না হওয়ার প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দার বলেন, "সিপিএমের তরফে তাদের সঙ্গে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে কোনও আলোচনাই করা হয়নি । তারা এক তরফা প্রার্থী দিয়েছে । কংগ্রেসও জেলা পরিষদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করবে ।"
আরও পড়ুন : বামেদের আন্দোলন ঠেকাতে বর্ধমান জুড়ে ব্যারিকেড, গরম ও যানজটে ভোগান্তি মানুষের