শক্তিগড়(পূর্ব বর্ধমান),21 সেপ্টেম্বর: ছেলেকে ব্যবসা করবে বলে বেসরকারি সংস্থা থেকে লোন নিয়েছিলেন মা রেখা মালিক । এদিকে ছেলে রমেশ মালিক সেই লোনের টাকা নিয়ে উধাও । এর ফলে লোন শোধের জন্য সংস্থার পক্ষ থেকে রেখা মালিক ও তার স্বামীকে হেনস্থা করা হয় । অপমান সহ্য করতে না পেরে এদিন রেখা মালিক (56) ও স্বামী হেমন্ত মালিক (65) গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন । পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ের বড়শুল দক্ষিণ গোপালপুর এলকার ঘটনা ৷
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত হেমন্ত মালিক খেতমজুরের কাজ করতেন । রেখা মালিক পরিচারিকার কাজ করতেন । ছোট ছেলে রমেশ মালিকের ব্যবসা করে দেওয়ার জন্য প্রায় লক্ষাধিক টাকা একটা বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন রেখাদেবী ৷ অভিযোগ, রমেশ সেই লোনের টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায় । এদিকে ঋণ শোধ করার জন্য ওই বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে রেখা মালিককের উপর চাপ দেওয়া হয় । ভয়ে রেখা মালিক তার বাপের বাড়ি চলে যান । লোন সংস্থার লোকেরা সেখানেও ধাওয়া করে । এমনকী তাকে বাড়ি থেকে বের করে ঋণ পরিশোধের হুমকি দিতে থাকে। সেই অপমান সহ্য করতে না পেরে বাড়ি ফিরেই রেখা মালিক ও তার স্বামী হেমন্ত মালিক গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন ।
ঘটনা প্রসঙ্গেই মৃতের ভাই রামু দলুই বলেন, "দিদি তাঁর ছেলের জন্য একটা বেসরকারি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিল । এরপর সংস্থার তরফে ঋণ শোধ করার জন্য তাগাদা শুরু করে । সংস্থার পক্ষ থেকে বেশ কিছু লোকজন আমার বাড়িতেও গিয়ে কথা শুনিয়ে আসে । দিদিকে হাত ধরে ঘর থেকে বের করে নিয়ে যায় । দিদি-জামাইবাবুর আত্মসম্মানে লাগে । এরপরেই দু’জনে আত্মঘাতী হন।"
আরও পড়ুন: তিন কন্যাসন্তানকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা ! উদ্ধার ব্যক্তির ঝুলন্ত দেহ
ওই আত্মীয়ের কথার রেশ টেনেই মৃত দম্পতির বড়ো ছেলে সনাতন মালিক জানান, সকালে তাঁর বাবাকে ঘুম থেকে ডাকতে যান। অনেকক্ষণ সাড়াশব্দ না পেয়ে মাটির ঘরে জানালা দিয়ে উঁকি দেতই চক্ষু চড়কগাছ ৷ তিনি দেখেন দু’জনেই গামছায় ফাঁস লাগিয়ে গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে ৷ তিনি বলেন, "ভাইয়ের জন্য মা ঋণ নিয়েছিল । এদিকে ভাই কোথায় পালিয়ে গিয়েছে সেই টাকা নিয়ে । ঋণ পরিশোধের বাবা- মায়ের উপর ওই সংস্থা চাপ দিতে থাকে ৷ এমনকী অপমানও করে ৷ সেই ভয়ে মা ও বাবা আত্মঘাতী হয়েছেন।"