বর্ধমান, 28 জুলাই : রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর মন্তব্য ইশুতে নয়া মোড় । রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিলেন রাজ্যপাল । রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল । একাধিকবার তাঁর কাছে একথা স্বীকার করেছেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী । গতকাল একথা জানালেন BJP নেতা রাহুল সিনহা । রাজ্যপাল কড়া ভাষায় আক্রমণ করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, গতকাল কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে এই খবর প্রকাশিত হয় । সংবাদসংস্থা PTI-র খবর অনুযায়ী রাজ্যপাল বলেছেন, "মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তোষণ রাজনীতি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে বিপরীতদিকে প্রভাবিত করছে ।" এই খবর সামনে আসতেই তৃণমূলের তরফে কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সমালোচনা করা হয় । এরপর মিডিয়ার ভূমিকার সমালোচনা করেন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী । অহেতুক বিতর্ক তৈরি করতে তাঁর বক্তব্যের একটা অংশকে সামনে আনা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি । এরইমধ্যে সামনে আসে রাহুল সিনহার প্রতিক্রিয়া ।
কেশরীনাথ ত্রিপাঠী যে রাজ্যের পরিস্থিতি নিয়ে খুশি ছিলেন না তার স্বপক্ষে বসিরহাট ও আসানসোলে হিংসার প্রসঙ্গকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন রাহুল সিনহা । বর্ধমানে দলীয় একটি বৈঠক থেকে সাংবাদিকদের সামনে এই BJP নেতা বলেন, "রাজ্যপাল সংগত মন্তব্যই করেছেন । রাজ্যের শাসকদলের বাস্তব চরিত্র তুলে ধরেছেন । এতদিন বিভিন্ন লোক রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছেন । রাজ্যপালের মুখে তারই প্রতিধ্বনি শোনা গেছে । বসিরহাটে হিংসার সময় রাজ্যপাল রাজ্য সরকারকে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন । এই হিংসার সময় রাজ্য সরকারের ভূমিকা একপেশে ছিল । তার প্রতিবাদ করেছিলেন তিনি । প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, রাজ্য সরকারের সদর্থক ভূমিকা নেওয়া প্রয়োজন । কোনও একটি সম্প্রদায়ের উপর পুলিশের সাহায্যে হামলা চালানো হচ্ছে । এটা উচিত নয় । রাজ্যপাল একথা বলার পর তাঁর নিন্দা করা হয়েছিল তৃণমূলের তরফে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যপালকে অপমান করেছিলেন । আসানসোলে হিংসার সময়ও একই ঘটনা ঘটেছিল । রাজ্যপাল আসানসোলে যেতে চেয়েছিলেন । কিন্তু, রাজ্য সরকার যেতে দিতে রাজি হয়নি । শেষপর্যন্ত রাজ্যপাল সেখানে গেছিলেন । সবদিক দেখেশুনে তিনি রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেছিলেন । পুলিশের ভূমিকা দুর্ভাগ্যজনক বলে মন্তব্য করেছিলেন । রাজ্যের আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি যখনই প্রশ্নের মুখে পড়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজধর্ম পালনের বার্তা দিয়েছিলেন রাজ্যপাল ।" এরপরই রাহুল সিনহার সংযোজন, "রাজ্যপালের সাথে আমার বহুবার কথা হয়েছে । তিনি স্বীকার করেছেন, 356 ধারা লাগু করার মতো সমস্ত পরিস্থিতি এরাজ্যে আছে ।"
এই সংক্রান্ত খবর : PTI-কে সাক্ষাৎকার ; রাজ্যপালের কথায় তোষণের রাজনীতি, মমতা স্তুতিও
রাহুল সিনহা রাজ্যপালের মন্তব্যকে হাতিয়ার করে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করলেও কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর গলায় শোনা গেছে অন্য সুর । সংবাদসংস্থা PTI রাজ্যপালের রাজ্যসরকার বিরোধী মন্তব্য সামনে আনার পর ফের আসরে নামের কেশরীনাথ ত্রিপাঠী । এবার তিনি বলেন, "সংবাদমাধ্যম পুরোটা বলেনি । অহেতুক বিতর্ক তৈরির জন্য একটা অংশ বলেছে । আমি তাঁর (মুখ্যমন্ত্রীর) প্রশংসাও করেছি । আমি বলেছি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নতি করছেন । তাঁর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষমতা আছে । সেই অংশটা রিপোর্ট করা হয়নি । এর মধ্যে কোনও বিতর্ক নেই ।"
এই সংক্রান্ত খবর : BJP-র কাছে পয়েন্ট বাড়াতে মন্তব্য করেছেন রাজ্যপাল : পার্থ
যদিও রাজ্যপাল ও রাজ্য সরকারের মধ্যে মতবিরোধের বিষয়টি এর আগেও সামনে এসেছে । 2014 সালে এরাজ্যের রাজ্যপাল হন কেশরীনাথ ত্রিপাঠী । তারপর থেকে একাধিকবার রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তিনি ।