মেদিনীপুর, 22 জুলাই: কখনও শুনেছেন চা খাওয়ার সঙ্গে ভাঁড় ফেলে না-দিয়ে সেই চায়ের ভাঁড়টা চিবিয়ে খাওয়া যায় ? হ্যাঁ এরকমই এক অভিনব চা নিয়ে হাজির মেদিনীপুর শহরের নিশীথেরর চা দোকানে (Nishit is Selling Fancy Tea in Midnapore) । আর তা ঘিরেই যথেষ্ট উদ্দীপনা মেদিনীপুর শহরে । প্রসঙ্গক্রমে বলা যায় বছর 35-এর নিশীথ একসময় মডেলিং ও অভিনয় জগতে কাজ করতেন । এক সময়ে হঠাৎ করোনার কারণে কাজ হারিয়ে বসে । এরপর ভেবেছিলেন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে হয়ত তাকে আবার তার স্বপ্নের জগতে ঠিক ফিরে পাবে । কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি ।
আরও পড়ুন : বলাইয়ের 'দুয়ারে চা' মন জিতল দমদমের সাংসদের
দীর্ঘ দু'বছর করোনাকালে অবশেষে তার সিনেমা জগত থেকে দূরে সরে যায় নিশীথ । উপার্জনের কোনও পথ না পেয়ে অবশেষে 'চায়ে পে চর্চা' নামে একটি দোকান খুলে ফেলেন রাতারাতি । সেই চায় পে চর্চাতে সে বিভিন্ন ধরনের ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের চা-কোলড্রিংস বিক্রি করে পরিবার ও পরিজনের নিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকেন । আর এই চায়ে পে চর্চাতে প্রতিদিনই সন্ধ্যেবেলা থেকে হাজির হয় মেদিনীপুরের তরুণ-তরুণী থেকে বয়স্করা ।
নিশীথ তাঁর দোকানে অভিনব চা ও চায়ের গ্লাসের সম্ভার নিয়ে এসেছে এবার । তিনি এনেছেন চায়ের সঙ্গে চায়ের ভাঁড় খাওয়ার এক অভিনব পদ্ধতি । এই ভাঁড়ে 40 মিনিট পর্যন্ত চা গরম থাকবে এবং গ্লাস নষ্ট হবে না । ভাঁড়টা দেখতে কিছুটা ঠিক মালাই আইসক্রিমের কাপের মত । এই চায়ের দাম রাখা হয়েছে 40 টাকা করে আর তাতেই খুশি চা প্রেমীরা ।
আরও পড়ুন : নিত্যদিনের স্বাদ বদলাতে এবার বাড়িতেই বানিয়ে নিন মশলা চা
তবে এ বিষয়ে নিশীথের বক্তব্য, একসময় কাজ হারিয়ে ভেবেছিলাম জীবনে কিছু করারই নেই । কিন্তু এরপর পরিবারপরিজন ও মা বাবার কথা চিন্তা করে এই চায়ে পে চর্চা-র দোকান খোলা । নতুন নতুন স্বাদের চা বানিয়ে গ্রাহকদের উপহার দিতে চেষ্টা করছি যাতে এই শহর, জেলা ছাড়িয়ে ভিন্ন রাজ্যেও সেই স্বাদ ছড়িয়ে পড়ে । তাই এখানে নবাবি চা থেকে গোলাপ চা এবং তার সঙ্গে এই নতুন এক চায়ের সন্ধান নিয়ে আসা হয়েছে যাতে মানুষকে আরও বিনোদনমূলক করা যায় এবং স্বাদে ভরিয়ে দেওয়া যায় ।
তবে চা-প্রেমীরা দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছেন চা খেতে নিশীথের দোকানে । চা-প্রেমী ডহর পাত্র ও নিশিকান্ত দলুই-এর বক্তব্য, এমন চা কোথাও আজ পর্যন্ত খাওয়া হয়নি । আমরা বহু দোকানে বহু ধরনের চায়ের স্বাদ নিয়েছি কিন্তু এই চায়ের সঙ্গে সঙ্গে কাপও খেয়ে নিতে হবে এরকম জায়গা এই প্রথম । খুব ভালো উদ্যোগ । এখন জঙ্গলমহলের আপামর মানুষের কাছে নিশীথের চা ও চায়ের কাপ দুই-ই নজর কাড়ছে ৷ সবাই চাইছেন একবার এর স্বাদ গ্রহণ করার ।