ETV Bharat / state

বাস্তবের 'জয়-বীরু', আট বছর ধরে একসঙ্গে খাবারের জোগাড় বিশেষভাবে সক্ষম দুই বন্ধুর - নিতাই

Specially Abled Persons Friendship: পেটের তাগিদ ৷ একমুঠো খাবারের জন্য শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে রেখে জোট বেঁধেছেন বিশেষভাবে সক্ষম অশোক ও নিতাই ৷ তাঁদের বন্ধুত্বে হার মানাবে সিনেমার জয় বীরুকেও ৷

Specially Abled Persons Friendship
বিশেষভাবে সক্ষম দুই বন্ধু
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Dec 10, 2023, 7:46 PM IST

বিশেষভাবে সক্ষম দুই বন্ধুর গল্প

খড়ার (পশ্চিম মেদিনীপুর), 10 ডিসেম্বর: দু'জনেই বিশেষভাবে সক্ষম । একজন ছোটবেলা থেকে চোখে দেখেন না ৷ অন্যজন হাঁটতে পারেন না ৷ তবে পেট কি কথা শোনে? পেটের তাগিদে অন্নের জোগাড় করতেই হবে ৷ তাই একমুঠো খাবারের জন্য শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে রেখে জোট বেঁধেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়ার পৌরসভার 7 নম্বর ওয়ার্ডের দলপতিপুরের বাসিন্দা অশোক ভূঁইয়া (55) ও নিতাই ঘোড়ুই(48) ৷ আট বছরের বন্ধুত্ব তাঁদের ৷ এখন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছেন ৷ তাঁদের বন্ধুত্ব হার মানাবে সিনেমার 'জয়-বীরু'কেও ৷

তবে বাস্তবের জয় বীরুর থেকে মুখ ফিরিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা । এখন ভরসা বলতে মাসে হাজার টাকা সরকারি ভাতা ৷ আর সঙ্গে মা ক্যান্টিনের দু'মুঠো ভাত ৷ ওই খেয়েই চলে সারাটা দিন ৷ সরকার থেকে পাননি বাড়িঘর কিছুই ৷ তবে নিজেদের অন্ন জোগাতে ভিক্ষাবৃত্তি নয়, একে অপরের বন্ধু হয়ে পরের বাড়িতে কাজ করেই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন এই দু'জন ৷

অশোক ট্রাই সাইকেলের পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেন ৷ আর নিতাই ট্রাই সাইকেলে বসে দিক নির্ণয় করেন ৷ আর এভাবেই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে তাঁরা গন্তব্যে ঠিক পৌঁছে যান ৷ নিতাই ঘোড়ুই বলেন, "ঠিক মতন আমরা কথা বলতে পারি না ৷ কিন্তু মানুষের সাহায্য নিয়ে কোনওক্রমে চলে যায় । আমার বন্ধু আমাকে প্রায় সময় সাহায্য করে ৷ সঙ্গে সরকারি ভাতা কিছুটা সাহায্য করে। এসব থেকেই কোনওক্রমে দু'মুঠো খাবার জুটে যায় দু'জনের ৷"

অন্যদিকে অশোক ভূঁইয়া বলেন, "আমরা আট বছর ধরে একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের পরিবার থাকা সত্ত্বেও আমাদের কেউ দেখে না ৷ তাই দু'জনেই দু'জনের সাহায্য করে কোনক্রমে দু'মুঠো খাবার জোগাড় করি। নিতাই আমাকে দিক নির্দেশ করে দেয় ৷ আমি সেই অনুযায়ী মা ক্যান্টিনে ভাত নিয়ে আসি । লোকের কাছে কাজ চাই ৷ যে যা কাজ দেয় করে দিই একে ওপরের সাহায্যে ৷" তাঁদের বন্ধুত্ব নিয়ে এলাকার বাসিন্দা চণ্ডীচরণ ঘোষ বলেন, "এই দু'জনকে গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি ৷ একে অপরের পরিপূরক হয়ে খাবার জোগাড় করে তাঁরা । এই অসময়ে দুর্দিনে যাদের দেখার কেউ নেই তাদেরকে এভাবে একসঙ্গে থাকতে দেখে ভালো লাগে । এরা লোকের কাছে টাকার বিনিময়ে কাজও করতে যায় । তবে একে অন্যজনের পরিপূরক হয়েই ।"

আরও পড়ুন:

  1. আধার পেয়ে আঁধার ঘুচল জন্মান্ধ সুখেনের, বসতে চলেছেন টেট ইন্টারভিউয়ে
  2. মাধ্যমিকে 'পা দিয়ে' লিখে স্বপ্ন জয় করতে চান মানসী
  3. হাঁটতে পারেন না, ভাইয়ের পিঠে চেপে পাঠান দেখতে বিহার থেকে মালদায় যুবক

বিশেষভাবে সক্ষম দুই বন্ধুর গল্প

খড়ার (পশ্চিম মেদিনীপুর), 10 ডিসেম্বর: দু'জনেই বিশেষভাবে সক্ষম । একজন ছোটবেলা থেকে চোখে দেখেন না ৷ অন্যজন হাঁটতে পারেন না ৷ তবে পেট কি কথা শোনে? পেটের তাগিদে অন্নের জোগাড় করতেই হবে ৷ তাই একমুঠো খাবারের জন্য শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে দূরে রেখে জোট বেঁধেছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খড়ার পৌরসভার 7 নম্বর ওয়ার্ডের দলপতিপুরের বাসিন্দা অশোক ভূঁইয়া (55) ও নিতাই ঘোড়ুই(48) ৷ আট বছরের বন্ধুত্ব তাঁদের ৷ এখন একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছেন ৷ তাঁদের বন্ধুত্ব হার মানাবে সিনেমার 'জয়-বীরু'কেও ৷

তবে বাস্তবের জয় বীরুর থেকে মুখ ফিরিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা । এখন ভরসা বলতে মাসে হাজার টাকা সরকারি ভাতা ৷ আর সঙ্গে মা ক্যান্টিনের দু'মুঠো ভাত ৷ ওই খেয়েই চলে সারাটা দিন ৷ সরকার থেকে পাননি বাড়িঘর কিছুই ৷ তবে নিজেদের অন্ন জোগাতে ভিক্ষাবৃত্তি নয়, একে অপরের বন্ধু হয়ে পরের বাড়িতে কাজ করেই জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন এই দু'জন ৷

অশোক ট্রাই সাইকেলের পেছন থেকে ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে নিয়ে চলেন ৷ আর নিতাই ট্রাই সাইকেলে বসে দিক নির্ণয় করেন ৷ আর এভাবেই ছোট্ট ছোট্ট পায়ে চলতে চলতে তাঁরা গন্তব্যে ঠিক পৌঁছে যান ৷ নিতাই ঘোড়ুই বলেন, "ঠিক মতন আমরা কথা বলতে পারি না ৷ কিন্তু মানুষের সাহায্য নিয়ে কোনওক্রমে চলে যায় । আমার বন্ধু আমাকে প্রায় সময় সাহায্য করে ৷ সঙ্গে সরকারি ভাতা কিছুটা সাহায্য করে। এসব থেকেই কোনওক্রমে দু'মুঠো খাবার জুটে যায় দু'জনের ৷"

অন্যদিকে অশোক ভূঁইয়া বলেন, "আমরা আট বছর ধরে একসঙ্গে রয়েছি। আমাদের পরিবার থাকা সত্ত্বেও আমাদের কেউ দেখে না ৷ তাই দু'জনেই দু'জনের সাহায্য করে কোনক্রমে দু'মুঠো খাবার জোগাড় করি। নিতাই আমাকে দিক নির্দেশ করে দেয় ৷ আমি সেই অনুযায়ী মা ক্যান্টিনে ভাত নিয়ে আসি । লোকের কাছে কাজ চাই ৷ যে যা কাজ দেয় করে দিই একে ওপরের সাহায্যে ৷" তাঁদের বন্ধুত্ব নিয়ে এলাকার বাসিন্দা চণ্ডীচরণ ঘোষ বলেন, "এই দু'জনকে গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি ৷ একে অপরের পরিপূরক হয়ে খাবার জোগাড় করে তাঁরা । এই অসময়ে দুর্দিনে যাদের দেখার কেউ নেই তাদেরকে এভাবে একসঙ্গে থাকতে দেখে ভালো লাগে । এরা লোকের কাছে টাকার বিনিময়ে কাজও করতে যায় । তবে একে অন্যজনের পরিপূরক হয়েই ।"

আরও পড়ুন:

  1. আধার পেয়ে আঁধার ঘুচল জন্মান্ধ সুখেনের, বসতে চলেছেন টেট ইন্টারভিউয়ে
  2. মাধ্যমিকে 'পা দিয়ে' লিখে স্বপ্ন জয় করতে চান মানসী
  3. হাঁটতে পারেন না, ভাইয়ের পিঠে চেপে পাঠান দেখতে বিহার থেকে মালদায় যুবক
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.