দাসপুর, 12 মার্চ : অবশেষে দাসপুরে নৃশংসভাবে গলাকেটে খুন হওয়া মহিলার তদন্তে নেমে পুলিশ তিনজন অপরাধীকে গ্রেফতার করেল (Three Persons Arrested in Daspur Woman Murder Case) পুলিশ ৷ তাদের কাছে উদ্ধার হয়েছে ধারালো অস্ত্র ও চুরি যাওয়া সোনার গয়না ।
দাসপুরে নদী থেকে পাথর চাপা মহিলার গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধারের ঘটনায় তদন্তে নেমে মোবাইলের সূত্র ধরে মূল পান্ডা 3 জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ ৷ গত বুধবার বাড়ি থেকে প্রায় 15 কিমি দূরে কাঁসাই নদী থেকে উদ্ধার হয় মহিলার গলাকাটা মৃতদেহ । পুলিশের প্রাথমিক অনুমান ছিল, অতিরিক্ত সোনার গয়নাই মহিলার মৃত্যুর মূল কারণ। ঘটনার পর পরিবারের সদস্যরা মৃতদেহ দেখে শনাক্ত করে মহিলাকে ।
ওই মৃত মহিলার নাম উর্মিলা দাস ৷ বয়স প্রায় ৫৮ বছর ৷ দাসপুর থানার নবীনমানুয়া সিতাপুর এলাকার বাসিন্দা । উর্মিলাদেবীর এক ছেলে ও দুই মেয়ে । ছেলে সোনার কাজ করেন ৷ বৌকে নিয়ে থাকেন ভিনরাজ্যে । বাড়িতে থাকতেন উর্মিলাদেবী ও স্বামী চিত্তরঞ্জন দাস ।
আরও পড়ুন : Malda Murder Case : সাংসারিক অশান্তির জের, স্ত্রীকে কুপিয়ে খুনে করে পলাতক স্বামী
দাসপুর পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনার আগের দিন অর্থাৎ 8 মার্চ মঙ্গলবার বিকেল প্রায় 5 টা নাগাদ উর্মিলাদেবী বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। সেই থেকে আর বাড়ি ফেরেননি তিনি। বেশ কিছুদিন ধরেই উর্মিলাদেবীর নাতনির বিয়ের সম্বন্ধ বিষয়ে পরিচয় হয়েছিল এক ফেরিওয়ালার সঙ্গে ।
স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সোমনাথ ভৌমিক বলেন, "উর্মিলাদেবী গয়না পরতে ভালোবাসতেন । বাড়িতে ও বাড়ির বাইরে গা ভর্তি গয়না পরেই থাকতেন ।" তিনি মেয়ের বাড়ির এক নাতনির বিয়ের বিষয়ে এক ফেরিওয়ালার সঙ্গে পাত্রের খোঁজে গিয়েছিলেন বলে । তারপরই বুধবার সকালে দাসপুর থানার কলোড়া গ্রামে কাঁসাই নদীর জলে তাঁর গলা কাটা দেহ উদ্ধার করে দাসপুর পুলিশ । প্রাথমিকভাবে পুলিশ মনে করেছিল এই গয়না ছিনতাই করতে গিয়েই উর্মিলাদেবীকে নৃশংসভাবে খুন করা হয় । এরপর ওই অজ্ঞাতপরিচয় ফেরিওয়ালার খোঁজে তদন্তে নামে পুলিশ ।
দাসপুর পুলিশের একটি তদন্তকারী টিম তদন্ত শুরু করে । তারা গোপন সূত্র ধরে অভিযান চালায় । বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে মোবাইল নাম্বার ট্রেস করে অবশেষে সাগর খান,মহিবুল ইসলাম ও শেখ শামিম নামে তিনজন অভিযুক্তকে গতকাল রাতে গ্রেফতার করা হয় । এই তিনজনকে জেরা করলে তারা দোষ স্বীকার করে এবং তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় চুরি হয়ে যাওয়া গয়না ও একটি ধারালো অস্ত্র ।
এই ঘটনায় স্বস্তি নেমে এসেছে পুলিশ প্রশাসনের মধ্যে । এই ঘটনার জেরে পুলিশের সাহসিকতা ও তৎপরতার জন্য তাদের পুরস্কারের ঘোষণা করেছেন জেলা পুলিশ সুপার দিনেশ কুমার । এদিন জেলা পুলিশ সুপার দীনেশ কুমার বলেন, "দাসপুর থানার পুলিশের তৎপরতা এবং দক্ষতার জন্যই খুব দ্রুত এই ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা গেছে ।"