চন্দ্রকোনা, 7 মে : করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে জীবন জীবিকা থমকে যেতে বসেছে চন্দ্রকোনার গব্বর ও পকোড়া সিংয়ের । কারণ মাদারির খেলা হয় মূলত জমায়েতের উপর ৷ আর সেই জমায়াতের উপর রয়েছে নিষেধাজ্ঞা । রোজগারের অভাবে মাদারির খেলা আর কেউ দেখছেন না । সংসার কীভাবে চলবে তা ভেবেই আতঙ্কে ছত্তিশগড় থেকে আসা সিং পরিবার ।
গব্বর সিং-এর ভালো নাম সূর্য সিং আর পকোড়া সিংয়ের নাম শিবরাজ সিং । দড়ির উপর ব্যালেন্স করে খেলা ও নানা কলাকৌশল দেখিয়ে টাকা রোজগার করে সংসার চালায় সিং পরিবার ৷ পরিবারের দুই খুদে জীবনের বাজি রেখে গ্রামেগঞ্জে খেলা দেখিয়ে বেড়ায় ৷ খেলা শেষে পয়সার থালাতে যা জমা পড়ে সেটা যায় পরিবারের প্রধান সূর্য সিংয়ের ঝুলিতে ৷ তাতেই 5 জনের সংসার কষ্টে সৃষ্টে চলে ৷ কিন্তু তাতেও পড়েছে করোনার থাবা ।
আরও পড়ুন : করোনাকে কিস্তিমাত করতে এবার টেরাকোটার আদলে দাবা
ছত্রিশগড় জেলার চাপাডাঙ্গি গ্রামের বাসিন্দা সূর্য সিং পরিবারকে নিয়ে পেটের টানে এ রাজ্যে এসেছিলেন ৷ বাঁশের উপর দড়ি খাটিয়ে তার উপর দাঁড়িয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মাদারির খেলা দেখান । নানা কলাকৌশল দেখায় দুই খুদে । চার মাস ধরে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় বিভিন্ন জায়গায় হাট বাজারে বাঁশ বাজির খেলা দেখিয়ে সংসার চালাচ্ছিল এরা । তার মধ্যেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁরা ৷ সাধারণত শহরাঞ্চলের বাজার হাটে খেলা দেখাত ৷ কিন্তু বর্তমানে করোনার জেরে তৈরি হওয়া নিয়মে বাজার ফাঁকা, মানুষ গৃহবন্দি ৷ তাই খেলা দেখাতে গিয়ে এসেও দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাঁরা । কারণ অনেকে বাইরের লোক দেখলে গ্রামে প্রবেশ করতে দিচ্ছে না । কোথাও আবার দয়া দেখিয়ে খেলা দেখানোর অনুমতি মিলছে ৷
সূর্য সিং বলেন, ‘‘আমরা নিজের রাজ্য ছাড়াও ভিনরাজ্যে এই মাদারির খেলা দেখিয়ে টাকা উপার্জন করি । তাতে যা উপার্জন হয় আমাদের পাঁচজনের সংসারে কোনওক্রমে চলে যায় । কিন্তু বাচ্চাদের খেলা দেখতে এখন ভিড় জমছে না ৷ অনেকে গ্রামে ঢুকতে দিচ্ছে না ৷ এখন আমাদের সংসার কীভাবে চলবে সেটাই চিন্তার ।’’