মেদিনীপুর, 10 সেপ্টেম্বর: বছরের পর বছর খাঁচায় কেটে যায় জীবন । ভারতীয় আইন অনুযায়ী খাঁচায় বন্দি করে রাখা যাবে না অবলা জীবদের । সেখানে প্রশাসনের নাকের ডগায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাঁচার মধ্যে রেখে দেদার বিক্রি হচ্ছে পাখিরা । এই রাস্তা দিয়ে ভিভিআইপিদের যাতায়াত ৷ তবু প্রকাশ্যে এই খাঁচাবন্দি পাখি বিক্রির দিকে নজর নেই কারও ! প্রশ্ন উঠছে পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে (People displease as bird seller sales caged birds in Medinipur) ।
মেদিনীপুর শহরের কালেক্টরেটের ব্যস্তবহুল এলাকায় পুলিশ সুপারের দফতর ৷ তার সামনে চলছে অবাধে পাখি কেনাবেচা ৷ পাখিদের ছোট, অপরিসর খাঁচায় পুরে প্রতিদিনই টাঙানো হয় রাস্তার ধারে । সারাদিন কিচিরমিচির করেও কিছুতেই নিজেদের কষ্টের কথা বলতে পারছে না তারা ৷ মুক্ত হতে পারছে না ৷
পাখি বিক্রেতা নির্মল কান্তি পড়িয়ার জানালেন মানুষের শখ আছে ৷ তারা পাখি কেনে ৷ আর এভাবে পাখি বিক্রির মধ্যে কোনও বেআইনি কিছু নেই ৷ তাঁর দাবি, তিনি কোনও ভারতীয় পাখি বিক্রি করছেন না ৷ নির্মলবাবুর খাঁচায় বন্দি (Caged Bird Sale) পাখিগুলি সব বিদেশি ৷ কোনও অস্ট্রেলিয়ার তো কোনওটা ইউরোপের ৷ আর সব কেজিং বার্ড ৷ তিনি জানালেন, ভারতীয় আইন অনুযায়ী ভারতের কোনও পাখিকে খাঁচাবন্দি করে বিক্রি করা অপরাধ ৷ তাঁর কাছে যেহেতু সব বিদেশি পাখি রয়েছে, তাই তিনি দোষী নন ৷ প্রশাসন এ বিষয়ে সব জানে, স্বীকার করলেন পাখি বিক্রেতা ৷
আরও পড়ুন: পানাগড়ে উদ্ধার 205 টিয়া পাখি, গ্রেফতার 2 পাচারকারী
প্রতিদিন এভাবেই শ'য়ে শ'য়ে পাখি বিক্রি হয়ে যাচ্ছে ৷ যদিও এই বিষয়ে কোনও হেলদোল নেই পুলিশ প্রশাসনের ৷ টনক নড়েনি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের । নাকের ডগায় পুলিশ সুপারের দফতর রয়েছে ৷ জেলাশাসকের দফতর, এসডিও এবং জেলা পরিষদ-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতর । এই ব্যস্তবহুল রাস্তার উপর দিয়ে নীল-লাল হুটার বাজিয়ে যাতায়াত করছেন ভিভিআইপি-রা । অনেকে দেখেও না-দেখার ভান করে এড়িয়ে যাচ্ছেন বিষয়টি।
কোনটা আইন এবং কোনটা বেআইনি সে কথা কে শুনবে ? তবে এ নিয়ে সোচ্চার হয়েছে মেদিনীপুরের সাধারণ মানুষ । বনদফতরে (Forest Department over caged Birds sale) বিষয়টি জানানো হলে, তারা জানিয়েছে বিদেশি পাখি বিক্রি করা নিয়ে তাদের ধরা এবং শাস্তি দেওয়ার কোনও এক্তিয়ার নেই । ভারতীয় পাখি বিক্রি করা হলে, তাদের বিরুদ্ধে আইন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া যেত ৷ এখানে তাই কিছুই করার নেই ৷
এক পুলিশ আধিকারিকের মতে এটা সম্পূর্ণ বনদফতরের কাজ । তিনি বলেন, "আমাদের এখানে কোনও কিছু করার নেই । বনদফতর যদি মনে করে তাহলে এটা আটকাতে ব্যবস্থা নিতে পারে ।" পৌরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, "এভাবে কেউই পাখি বিক্রি করতে পারে না । আমরা অবশ্যই খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেব । কারা কীভাবে এই অবলা প্রাণীদের বন্দি ও বিক্রিতে জড়িত, তা খোঁজখবর নিয়ে আমরা ব্যবস্থা নেব।"
আরও পড়ুন: কোপাই নদীর তীরে শোভা বাড়াচ্ছে বৃহদাকারের শামুখখোল পাখির ঝাঁক