ঘাটাল, 28 জুন : চলতি বছরের শুরুর দিকে কিছুটা স্বাভাবিক হয়েছিল পরিস্থিতি ৷ লকডাউন উঠেছিল ৷ মানুষ আবার রাস্তায় বেরিয়েছিল ৷ বাসের চাকা ঘুরেছিল ৷ ফিরছিল চেনা ছন্দ ৷
কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ৷ আবার স্তব্ধ রাস্তা ৷ ট্রেন বন্ধ ৷ গড়াচ্ছে না বাসের চাকাও ৷ সবকিছু থমকে গিয়েছে আবার ৷
পশ্চিম মেদিনীপুরের অন্যতম ব্যস্ত শহর ঘাটাল ৷ কিন্তু কড়া বিধিনিষেধ জারির পর থেকে বাসস্ট্যান্ডে সারি সারি দাঁড়িয়ে বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার বাস । স্বল্প দূরত্বের বাসগুলিরও একই হাল ৷ সব এখন ঠাঁয় দাঁড়িয়ে ঘাটাল সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে ৷ বাসে তালাচাবি মেরে চলে গিয়েছেন বাসের চালক, কন্ডাকটর ও খালাসিরা ।
কেউ কেউ এসে মাঝে মধ্যে ঢুঁ মেরে যাচ্ছেন ৷ দেখে যাচ্ছেন তাঁদের বাস ঠিকঠাক আছে কি না ৷ আবার কেউ বৃষ্টির জন্য বাসের ক্ষতি যাতে না হয়, তাই বাসের ছাদের উপরে আস্তরণ দিয়ে যাচ্ছেন । চরম দুশ্চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন পরিবহণের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা ৷
তার উপর লাগামহীনভাবে বাড়ছে পেট্রল-ডিজ়েলের দাম ৷ সেঞ্চুরির কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছে জ্বালানি ৷ ফলে বাস পরিষেবা চালু হলেও লাভ হবে কি না, তা নিয়ে কুল কিনারা পাচ্ছেন না পরিবহণ কর্মী থেকে শুরু করে বাস মালিকরা ৷
আরও পড়ুন : রাজ্যে 15 জুলাই পর্যন্ত বিধিনিষেধ , চালু হচ্ছে বাস পরিষেবা
পরিস্থিতি ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে পরিবহণ কর্মীদের জন্য ৷ একদিকে জ্বালানির আকাশছোঁয়া দাম, তার উপর আবার করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ভ্রুকুটি ৷ পরিবহণ কর্মীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন বাস অ্যাসোসিয়েশনগুলিও ৷
আরও পড়ুন : পথে নামছে বাস, খুলছে জিম-পার্লার ; আর কীসে কীসে ছাড় দেখে নিন
পরিবহণ বন্ধ থাকায় অধিকাংশ বাসকর্মীই পেটের টানে কেউ রাজমিস্ত্রির যোগাড়ে বা একশো দিনের কাজে তো আবার কেউ দিনমজুরির করছেন । ঘাটাল বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, তিনি যেন বাস মালিক ও শয়ে শয়ে কর্মীদের দুরাবস্থা নিয়ে কিছু ভাবেন । এই পরিবহণ শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শুধু বাসকর্মীরাই নন, ওতপ্রোতভাবে রুজি রোজগারে জড়িত গ্যারেজ, যন্ত্রপাতির দোকান থেকে আরও অনেকে । তাদেরও রুজিতে টান পড়ছে ।
লোকাল ট্রেন আপাতত চালু হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ 2 জুলাই থেকে বাস পরিষেবা চালু হবে ৷ তবে 50 শতাংশ যাত্রী নিয়ে ৷ বাসের চাকা আবার গড়ালে কিছুটা হাসি ফুটবে পরিবহণ কর্মীদের মধ্যে ৷