শালবনি, 28 অগস্ট: এবার দলবিরোধী মন্তব্য খোদ রাজ্যের মন্ত্রীর মুখে । একটি ঘরোয়া আলোচনার সময় বিস্ফোরক মন্তব্য করে দলের রোষে শালবনির তৃণমূল বিধায়ক তথা মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো ৷ তিনি দলের নেতা, মন্ত্রী এবং বিধায়ককে চোর এবং প্রতারক বলে চাঁচাছোলা ভাষায় আক্রমণ । আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয় শাসক দল । তড়িঘড়ি মন্ত্রীর এই বক্তব্যের জন্য তাঁকে শো-কজের চিঠি পাঠানো হল দলের তরফে । মন্ত্রীকে এই শোকজের চিঠি ধরালেন জেলা তৃণমূল কো-অর্ডিনেটর তথা বিধায়ক অজিত মাইতি (TMC Show cause Minister Srikanta Mahata) । আর এতেই জেলা জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে ।
শুক্রবার শালবনির বিধায়ক তথা মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো এক ঘরোয়া বৈঠকে নিজের কর্মী ও সমর্থকদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য রাখেন । সেখানে নিজেদের লোকেদের ব্যাপারে আলোচনা করার সময় তিনি বলেন, "এই দলে লুটে পুটে খাওয়া দেবাদিদেব মহাদেব, মুনমুন, জুন, নুসরত, মিমি, সায়ন্তিকা, নেপাল সিংহ, সন্দীপ সিং এবং উত্তরা সিং যদি দলের সম্পদ হয়, তাহলে সেই দলে আর থাকা যাবে না ৷ সে দলের উন্নতিও সম্ভব না । তাঁরা যদি শালবনির টাকা ডাকাতি করে, টাকশালে টাকা ছাপায়, তা হলে মন্ত্রী জেলে গেলে ভাল আছে ৷ কলকাতায় গেলে মন্ত্রীদেরকে চোর বলে আখ্যা দেয়, সেই পার্টিতে থাকা যাবে না । এরা যদি চুরি এবং প্রতারণা করতে থাকে তাহলে আমাদের পার্টিতে থাকা যাবে না ৷ আমাদের আশ্রমে চলে যেতে হবে নয় আন্দোলনে নামতে হবে ।"
আর এই ভিডিয়ো মুহুর্তেই ভাইরাল হয়ে যায় ৷ সেই ভিডিয়ো বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে গিয়ে পৌঁছই শাসক দলের কাছে । আর এই ঘটনায় তড়িঘড়ি নড়েচড়ে বসে তৃণমূল। এই ঘটনার পরেই তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর তথা বিধায়ক অজিত মাইতি দলের নির্দেশ অনুযায়ী মন্ত্রীকে শোকজ চিঠি ধরিয়ে দেন শনিবার বিকেলে । তিনি এই চিঠির মাধ্যমে জানতে চান, কেন দল বিরোধী কথাবার্তা মন্ত্রী প্রকাশ্যে এভাবে বলেছেন এবং তিনি এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ কারণ দর্শাতে বলেছেন মন্ত্রীকে (Minister Srikanta Mahata explosive comments on TMC MLAs MPs) ।
মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো (Srikanta Mahata) মুখ না খুললেও তৃণমূলের জেলা কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি (Ajit Maity) বলেন, "দীর্ঘদিনের কর্মী এবং মন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো । আবেগতাড়িত হয়ে তিনি এই কথাগুলো বলে ফেলেছেন । আমাদের দলের বাইরে কেউ নয় । একজন বিধায়ক এবং মন্ত্রী যে এরকম ক্ষমতা ভোগ করেন ৷ তাঁকে দলের নির্দেশ মেনে চলা উচিত । যারা এই ধরনের কথা বলবে তাদের দল অবশ্যই শাস্তির ব্যবস্থা করবে ।"
আরও পড়ুন: সিবিআই ও ইডির তদন্তের আওতায় সমবায়কেও আনা উচিত, মন্তব্য দিলীপের
এ বিষয়ে শ্রীকান্ত মাহাতোকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি বিজেপি । অরূপ দাস বলেন, "আমরা তো প্রথম থেকে বলেছি ডাকাতকে তাড়িয়ে চোরকে এনেছি এ রাজ্যে । আজকে মন্ত্রী পিঠ বাঁচাতে এসব কথা বলেছেন । তিনি যদিও শেষ পর্যন্ত সত্যি কথাই মুখ দিয়ে বলে ফেলেছেন । তবে তাঁকেও জেলে যেতে হবে তাঁর কাজকর্মের জন্য । যারা কোর্টের নিয়ম মানেন না, যেসব রাজ্যের মন্ত্রী অগাদ সম্পত্তি লুকিয়ে রাখেন, তারা সব চোর-ডাকাতের দল ।"