চন্দ্রকোনা, 1 জানুয়ারি: 60 লক্ষ টাকা ব্যয়ে চন্দ্রকোনা ব্লক 2-তে গড়ে উঠেছিল কর্মতীর্থ ৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বপ্নের প্রকল্প এটি ৷ তবে তৈরির পর সাত বছর পেরোলেও সেই কর্মতীর্থ চালুই হয়নি এখনও ৷ দোতলা ভবনের বর্তমানে বেহাল দশা ৷ আগাছা থেকে ঝোপঝাড়ে ঢেকেছে চারিদিক। শুধু তাই নয়, কর্মতীর্থের ভিতর বর্তমানে পায়রাদের আশ্রয়স্থল ৷ একাধিক ঘরের সাটার দরজা ভাঙা, ভেঙে ফেলা হয়েছে বিদ্যুতের বাল্ব থেকে বিদ্যুৎ সংযোগের সামগ্রীও। কর্মতীর্থের চারিদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে মদের বোতল ৷ রাতের অন্ধকারে বসছে নেশার আসর ৷ চলছে অসামাজিক কার্যকলাপ। বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্বনির্ভর করে তোলায় জন্য তৈরি এই কর্মতীর্থ বর্তমানে কেবল ধান ক্রয় কেন্দ্র হয়েই থেকে গিয়েছে ৷
এই পরিস্থিতি নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরা ৷ তাদের অভিযোগ, কর্মতীর্থ গড়া মানে সরকারি টাকার অপব্যবহার ছাড়া কিছুই না ৷ কর্মসংস্থানের নামে মানুষকে ভাঁওতা দেওয়া হচ্ছে । যদিও বিরোধীদের তোলা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসকদল ৷ কর্মতীর্থ দ্রুত চালু করার আশ্বাস দিয়েছে তৃণমূল পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতি। এ বিষয়ে চন্দ্রকোনা-2 পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অলোক ঘোষ বলেন, "আমি সভাপতি হওয়ার পর বিষয়টি আমার নজরে এসেছে ৷ আগামিদিনে যাতে ওই প্রকল্পটি সফল করা যায় তার জন্য আমি বিডিও-সহ অন্যান্য কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করছি। বর্তমানে ওখানে কৃষকদের থেকে সরকারের ধান কেনা হয় ৷ তবে ওখানে ক্ষুদ্র শিল্পের একটা প্রোডাক্ট ইউনিট যাতে করা যায় তার আলোচনা চলছে।"
জানা গিয়েছে, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার জয়ন্তীপুর এলাকায় চন্দ্রকোনা-2 ব্লক প্রশাসনের উদ্যোগে লক্ষাধিক টাকা ব্যায়ে গড়ে তোলা হয়েছিল ওই কর্মতীর্থ । 2016 সালে এই কর্মতীর্থের কাজ সম্পূর্ণ হলেও এই সাতবছরে তা চালুই হয়নি । বিগত দুই থেকে তিন বছর ধরে এই কর্মতীর্থ কৃষকদের থেকে সরকারি সহায়ক মূল্যে ধান ক্রয় করা হয় । দিনের বেলা দু'জন কর্মী একটি ঘরে কৃষকদের থেকে ধান কেনার কাজ করেন ৷ তবে কর্মতীর্থের অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য সেখানে স্থায়ীভাবে কেউ থাকেন না । এমনটাই জানিয়েছেন ধান ক্রয় কেন্দ্রের ডিসবার্সমেন্ট অফিসার মহম্মদ তাহিরউদ্দিন ।
অন্যদিকে তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রসূন ঘোষ বলেন, "বিরোধীদের তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন ৷ তারা কারণে-অকারণে অভিযোগ করে থাকে । মুখ্যমন্ত্রীর স্বপ্নের প্রকল্প কর্মতীর্থ ৷ সেখানে এখন সরকারিভাবে কৃষকদের সুবিধার্থে ধান কেনা চলছে। তবে কর্মতীর্থের বর্তমান অবস্থা নিয়ে প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলব ৷"
আরও পড়ুন: