ETV Bharat / state

শালবনি কোভিড হাসপাতালে রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যার অভিযোগ

author img

By

Published : Apr 24, 2021, 3:30 PM IST

এই ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য ভবন এবং হাসপাতালের তরফে এখনও অবধি মুখ খোলা হয়নি ৷ তবে বিভিন্ন সূত্র ধরে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি 2-3 দিন আগে শালবনি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন । শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন ৷

শালবনি কোভিড হাসপাতালে রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যার অভিযোগ
শালবনি কোভিড হাসপাতালে রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যু, আত্মহত্যার অভিযোগ

শালবনি, 24 এপ্রিল : করোনায় আক্রান্ত রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ৷ সেখানকার কোভিড হাসপাতালের ছাদ থেকে ওই রোগী নিচে লাফ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে ৷ মৃতের নাম চিত্তরঞ্জন বেরা (56) ৷

হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁকে রাত 1টা-দেড়টা থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না । তন্নতন্ন করে খুঁজে না পেয়ে শালবনি থানায় যোগাযোগ করা হয় ৷ শনিবার ভোরে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ হাসপাতালের পিছনের দিক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ । ইতিমধ্যে ঘাটাল মহকুমার দাসপুরে তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে ।

তবে শালবনি কোভিড হাসপাতালে এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয় ৷ এর আগে 2020 সালের 21 অগস্ট এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল ৷ ফলে সেই ভয়াবহ স্মৃতি আবার ফিরে আসায় হাসপাতালে শোরগোল পড়েছে ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷

এই ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য ভবন এবং হাসপাতালের তরফে এখনও অবধি মুখ খোলা হয়নি ৷ তবে বিভিন্ন সূত্র ধরে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি 2-3 দিন আগে শালবনি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন । শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন ৷ বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে 50 ঊর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এটিও কোভিডের অন্যতম লক্ষণ ।

মৃতের ছেলে অভিষেক বেরার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷ তবে পরিবারের তরফে পরোক্ষে স্বীকার করা হয়েছে যে করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসার আগে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়েছিলেন চিত্তরঞ্জনবাবু ৷ সেই সময় থেকেই তিনি কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলেন ! তারপর রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তাঁকে শালবনি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ।

এদিকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, উনি প্রায়ই নিজের শয্যা ছেড়ে এদিক‌ ওদিক চলে যাওয়ার চেষ্টা করতেন । প্রতিবারই ধরে আনা হয়েছে । কিন্তু গতকাল গভীর রাতে ডিউটিতে থাকা কর্মীদের নজর এড়িয়ে কোনওভাবে ছাদে চলে যান । কেউ টের পাননি ! রাত 2 টো থেকে তাঁকে খোঁজা হয় সর্বত্র ৷ কিন্তু পাওয়া যায়নি । অবশেষে পুলিশ এসে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে ।

এদিকে এই ঘটনায় নজরদারির অভাবের অভিযোগ তোলা হয়েছে স্থানীয়দের তরফে । ওই হাসপাতালে চিকিৎসক নার্স ছাড়াও 150 জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী আছেন । করোনা যোদ্ধা 6 জন এবং আরও 5 জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী রোগী সহায়তা কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন ৷ তা সত্বেও 60 জন ( গতকাল 59 জন ভর্তি ছিলেন বলে জানা গিয়েছে । আজ সকালের জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে 51 জন ভর্তি আছেন ৷ ) রোগীকে কেন পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া গেল না, সেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে ।

প্রসঙ্গত, গতবছর 21 অগস্ট হাসপাতালের ছোট্ট একটি কেবিনে ঢুকে বছর 55-র গোপাল ঘোড়ই ( বাড়ি সুলতানপুর, খড়্গপুর গ্রামীণ ) আত্মহত্যা করেছিলেন গলায় নিজের গামছার ফাঁস লাগিয়ে । তিনিও অবসাদগ্রস্ত হয়ে এই কাজ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছিল । তৎকালীন রাজ্যের কোভিড ওএসডি ড. গোপালকৃষ্ণ ঢালি মেদিনীপুরে এসে স্বীকার করেছিলেন কোভিড আক্রান্তরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন । তাঁদের সাহস দেওয়া ও পাশে থাকা প্রয়োজন । স্বভাবতই এই ঘটনার পর প্রতিটি হাসপাতালে আবারও একজন করে কাউন্সিলর বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত করার দাবিও উঠছে ।

আরও পড়ুন : গত 24 ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনায় মৃত 348, পরিস্থিতি ভয়াবহ

শালবনির এক সমাজকর্মী সন্দীপ সিংহ বললেন, ‘‘হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং কর্মী এই মুহূর্তে যথেষ্ট । তাই অবিলম্বে 200 জনকে সুচিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করুক প্রশাসন ।’’

এই ঘটনায় জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বললেন, "অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ও হৃদয় বিদারক ঘটনা । প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন ।"

শালবনি, 24 এপ্রিল : করোনায় আক্রান্ত রোগীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটল পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতে ৷ সেখানকার কোভিড হাসপাতালের ছাদ থেকে ওই রোগী নিচে লাফ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ ৷ শুক্রবার গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটে ৷ মৃতের নাম চিত্তরঞ্জন বেরা (56) ৷

হাসপাতাল সূত্রে খবর, তাঁকে রাত 1টা-দেড়টা থেকেই খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না । তন্নতন্ন করে খুঁজে না পেয়ে শালবনি থানায় যোগাযোগ করা হয় ৷ শনিবার ভোরে ওই ব্যক্তির মৃতদেহ হাসপাতালের পিছনের দিক থেকে উদ্ধার করে পুলিশ । ইতিমধ্যে ঘাটাল মহকুমার দাসপুরে তাঁর বাড়িতে খবর দেওয়া হয়েছে ।

তবে শালবনি কোভিড হাসপাতালে এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম নয় ৷ এর আগে 2020 সালের 21 অগস্ট এই ধরনের একটি ঘটনা ঘটেছিল ৷ ফলে সেই ভয়াবহ স্মৃতি আবার ফিরে আসায় হাসপাতালে শোরগোল পড়েছে ৷ পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ৷

এই ঘটনায় জেলা স্বাস্থ্য ভবন এবং হাসপাতালের তরফে এখনও অবধি মুখ খোলা হয়নি ৷ তবে বিভিন্ন সূত্র ধরে জানা গিয়েছে, ওই ব্যক্তি 2-3 দিন আগে শালবনি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন । শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল থাকলেও মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছিলেন ৷ বিভিন্ন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে 50 ঊর্ধ্বদের ক্ষেত্রে এটিও কোভিডের অন্যতম লক্ষণ ।

মৃতের ছেলে অভিষেক বেরার সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি ৷ তবে পরিবারের তরফে পরোক্ষে স্বীকার করা হয়েছে যে করোনা পরীক্ষার ফলাফল আসার আগে স্থানীয় চিকিৎসকদের পরামর্শ মতো ওষুধ খেয়েছিলেন চিত্তরঞ্জনবাবু ৷ সেই সময় থেকেই তিনি কিছুটা অন্যমনস্ক হয়ে পড়েছিলেন ! তারপর রিপোর্ট পজিটিভ আসার পর তাঁকে শালবনি কোভিড হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ।

এদিকে হাসপাতালের কয়েকজন কর্মী জানিয়েছেন, উনি প্রায়ই নিজের শয্যা ছেড়ে এদিক‌ ওদিক চলে যাওয়ার চেষ্টা করতেন । প্রতিবারই ধরে আনা হয়েছে । কিন্তু গতকাল গভীর রাতে ডিউটিতে থাকা কর্মীদের নজর এড়িয়ে কোনওভাবে ছাদে চলে যান । কেউ টের পাননি ! রাত 2 টো থেকে তাঁকে খোঁজা হয় সর্বত্র ৷ কিন্তু পাওয়া যায়নি । অবশেষে পুলিশ এসে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করে ।

এদিকে এই ঘটনায় নজরদারির অভাবের অভিযোগ তোলা হয়েছে স্থানীয়দের তরফে । ওই হাসপাতালে চিকিৎসক নার্স ছাড়াও 150 জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী আছেন । করোনা যোদ্ধা 6 জন এবং আরও 5 জন চুক্তিভিত্তিক কর্মী রোগী সহায়তা কেন্দ্রের দায়িত্বে আছেন ৷ তা সত্বেও 60 জন ( গতকাল 59 জন ভর্তি ছিলেন বলে জানা গিয়েছে । আজ সকালের জেলা স্বাস্থ্য দফতরের হিসেবে 51 জন ভর্তি আছেন ৷ ) রোগীকে কেন পূর্ণ নিরাপত্তা দেওয়া গেল না, সেই অভিযোগ তোলা হচ্ছে বিভিন্ন মহল থেকে ।

প্রসঙ্গত, গতবছর 21 অগস্ট হাসপাতালের ছোট্ট একটি কেবিনে ঢুকে বছর 55-র গোপাল ঘোড়ই ( বাড়ি সুলতানপুর, খড়্গপুর গ্রামীণ ) আত্মহত্যা করেছিলেন গলায় নিজের গামছার ফাঁস লাগিয়ে । তিনিও অবসাদগ্রস্ত হয়ে এই কাজ করেছিলেন বলে জানা গিয়েছিল । তৎকালীন রাজ্যের কোভিড ওএসডি ড. গোপালকৃষ্ণ ঢালি মেদিনীপুরে এসে স্বীকার করেছিলেন কোভিড আক্রান্তরা মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন । তাঁদের সাহস দেওয়া ও পাশে থাকা প্রয়োজন । স্বভাবতই এই ঘটনার পর প্রতিটি হাসপাতালে আবারও একজন করে কাউন্সিলর বা মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নিযুক্ত করার দাবিও উঠছে ।

আরও পড়ুন : গত 24 ঘণ্টায় দিল্লিতে করোনায় মৃত 348, পরিস্থিতি ভয়াবহ

শালবনির এক সমাজকর্মী সন্দীপ সিংহ বললেন, ‘‘হাসপাতালের পরিকাঠামো এবং কর্মী এই মুহূর্তে যথেষ্ট । তাই অবিলম্বে 200 জনকে সুচিকিৎসা দেওয়ার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করুক প্রশাসন ।’’

এই ঘটনায় জেলা পরিষদের জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র বললেন, "অত্যন্ত মর্মস্পর্শী ও হৃদয় বিদারক ঘটনা । প্রতিটি ক্ষেত্রে আরও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.