চন্দ্রকোনা, 23 ফেব্রুয়ারি: কারও সেলুন আছে, তো কারও ফলের দোকান। কেউ আবার চা বিক্রেতা। তাঁদের হাত দিয়ে গড়ে ওঠা সোসাইটি পাশে দাঁড়াল সহায়-সম্বলহীন বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের। এ বছর ষষ্ঠ বর্ষে বনভোজনের আয়োজন করল চন্দ্রকোনা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি। গাড়িতে করে মাংস ভাত খাওয়ানো ও নতুন বস্ত্র দেওয়া হল তাঁদের।
বাড়ি বাড়ি ভিক্ষাবৃত্তি করে দু'বেলা যাঁদের মুখে অন্ন ওঠে, তাঁদের কাছে বনভোজন স্বপ্নের মতো । কিন্তু বিগত পাঁচবছর ধরে 60-70 জন সহায়সম্বলহীন বৃদ্ধ বৃদ্ধার সেই স্বপ্ন পূরণ করে চলেছে চন্দ্রকোনা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি । প্রতিবছরের মতো এ বছরও ওই সোসাইটির উদ্যোগে ভিক্ষুকদের নিয়ে বনভোজনের আয়োজন করা হয় চন্দ্রকোনার ধামকুড়িয়া জঙ্গলে । পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা 2 ব্লকের চন্দ্রকোনা পৌরসভার 5 নং ওয়ার্ড রেগুলেটেড মার্কেটে অবস্থিত চন্দ্রকোনা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি তাদের ষষ্ঠ বর্ষে পদার্পণ করেছে। সোসাইটির সদস্যদের মধ্যে কেউ ফল বিক্রেতা, কারও রয়েছে সেলুন তো আবার কেউ কেউ বাজারে সবজি বিক্রি করেন। সমাজসেবামূলক কাজ করার লক্ষে তৈরি হয় চন্দ্রকোনা ওয়েলফেয়ার সোসাইটি।
সোসাইটির ষষ্ঠ তম বর্ষে চন্দ্রকোনার আশপাশের এলাকার ভিক্ষুকদের নিয়ে এদিন চন্দ্রকোনার ধামকুড়িয়া জঙ্গলে এক বনভোজনের আয়োজন করা হয়। এ দিন সকালে বৃদ্ধ ভিক্ষুকদের সোসাইটির তরফে গাড়ি ভাড়া করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তুলে নিয়ে আসা হয় ধামকুড়িয়া জঙ্গলে । সেখানে সকালে টিফিন, মনোরঞ্জনের জন্য খোল কীর্তন নিয়ে হরিনাম সংকীর্তনের ব্যবস্থা-সহ দুপুরে পেট পুরে মাছ, মাংস, ভাত, ডাল, সবজি-সহ দই, মিষ্টি, চাটনি, পাঁপড়-সহ এলাহি খাবারের আয়োজন করা হয়।
আরও পড়ুন: চন্দ্রকোনায় সুফল বাংলার স্টল থেকে 25 টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি
দুপুরের আহার শেষে নতুন বস্ত্রও তুলে দেওয়া হয় তাঁদের হাতে । বনভোজন শেষে দায়িত্ব নিয়ে সোসাইটির তরফে পুনরায় গাড়ি করে বাড়ি পৌঁছে দেওয়া হয় সকলকে । চন্দ্রকোনা ওয়েলফেয়ার সোসাইটির এহেন উদ্যোগে উপস্থিত হয়ে একে সাধুবাদ জানান চন্দ্রকোনা পৌরসভার প্রশাসক অরূপ ধাড়া । অরূপবাবুর হাত দিয়ে দুঃস্থ মানুষদের নতুন বস্ত্র তুলে দেওয়া হয় সোসাইটির তরফে । বছরের প্রতিটা দিন অন্যের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি করে দিনযাপন করেন এই মানুষগুলি। তাঁদের একটা দিন আনন্দ দিতে বিগত চার বছরের মতো এ বছরও বনভোজনের আয়োজন করা হয় । সকলে মিলে একজোট হয়ে হরিনাম সংকীর্তন, কবজি ডুবিয়ে খাওয়া ও নতুন বস্ত্র পেয়ে মুখে চওড়া হাসি অসহায় মানুষগুলির মুখে।
এই ধরনের কর্মসূচি প্রশংসা করেছেন চন্দ্রকোনার মানুষজন । পাশাপাশি আরও সবাইকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে সোসাইটি তরফ থেকে । আগামী দিনে আরও বড় ধরনের অনুষ্ঠান করার আশা রয়েছে বলে সোসাইটি তরফ থেকে জানানো হয়।