মেদিনীপুর, 10 অক্টোবর: দুর্গা ও লক্ষ্মীপুজো শেষ হয়েছে সবে ৷ কিন্তু তাতে কী? দিনকয়েকের মধ্যেই বাংলা ও বাঙালি মেতে উঠবে আলোর উৎসব দীপাবলিতে (Kali Puja)। তারই প্রস্তুতি চলছে সব জায়গায় ৷ যা প্রায় শেষের পর্যায়ে ।
আর দীপাবলিতে বাঙালির অন্যতম আকর্ষণ জঙ্গলমহলের মাটির তৈরি দিওয়ালি পুতুল (Diwali doll) । এই রং-বেরঙের প্রদীপে কখনও একটি, আবার কখনও একাধিক প্রদীপ থাকে ৷ আবার একটি হাত থেকে 25 হাতযুক্ত দিওয়ালি পুতুলও তৈরি হয় ৷ যা রীতিমতো সাড়া ফেলে দেওয়ার মত।
এই দিওয়ালি পুতুলের বাজার শুধু জেলায় নয়, রয়েছে ভিনরাজ্যেও ৷ রাতারাতি এগুলি হোলসেলারের মাধ্যমে পাড়ি দেয় অন্যান্য রাজ্যে । আর এই দিওয়ালি পুতুলের একমাত্র আদি ঘর জঙ্গলমহলের অধ্যুষিত পশ্চিম মেদিনীপুরের কুমোরপাড়া । যারা মাটির জিনিসপত্র বানানোর পাশাপাশি দিওয়ালি পুতুল তৈরি করেন এই বিশেষ সময়ে ।
কুমোরপাড়ায় গিয়ে ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় ধরা পড়ল দিওয়ালি পুতুল তৈরির ছবি ৷ ছোট থেকে বড় সকলেই দিওয়ালি পুতুল তৈরিতে ব্যস্ত । মাটি ও বালি দিয়ে তৈরি হয় এই দিওয়ালি পুতুল ৷ প্রথমে পর্যাপ্ত পরিমাণ মাটি ও বালি নিয়ে পুতুল বানিয়ে নেওয়া হয় ৷ এরপর সেগুলি উনুনে পোড়ানো হয় ৷ তারপর রোদে শুকিয়ে নেওয়া হয় ৷ সবশেষে রং করে আরও একবার রোদে শুকিয়ে নিলে তৈরি হয়ে যায় দিওয়ালি পুতুল । নানা রঙে সাজিয়ে তোলা হয় দিওয়ালি পুতুলগুলিকে ।
দীপাবলি ও কালীপুজোর আর বেশিদিন বাকি নেই ৷ ফলে তাই এখন দিনের পাশাপাশি রাতেও চলছে এই পুতুল তৈরির কাজ । কারণ এই দিওয়ালি পুতুলের উপর নির্ভর করে অনেকটাই জীবিকা নির্বাহ করেন কুমোরপাড়ার মানুষজন । তাই তারা এই বিশেষ সময়ের জন্য অপেক্ষা করে থাকেন ৷ আর এবারেও চাহিদা তুঙ্গে রয়েছে দিওয়ালি পুতুলের । কারণ দু'বছর করোনা মহামারী কাটানোর পর এবছর দীপাবলি উৎসবে মাততে চলেছে মেদিনীপুর-সহ পশ্চিমবাংলার মানুষজন (Deepabali 2022) ।
যদিও ডিজিটালের যুগে বাজার দখল নিয়েছে বিভিন্ন কৃত্রিমভাবে আলোর রকমারি পুতুল ও টুনি । তবুও নস্টালজিয়া দিওয়ালি পুতুলের চাহিদা এখনও অটুট জঙ্গলমহল-সহ রাজ্যে । তড়িঘড়ি সেই মাটির দিওয়ালি পুতুলকে শুকিয়েই প্রস্তুত করে ফেলছেন মৃৎশিল্পীরা (Artisans busy in making Diwali dolls) ।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির মধ্যেই পরম্পরায় আতশবাজি প্রদর্শনী পুজো কমিটির ! ভিড় সামলাতে হিমশিম পুলিশের
মৃৎশিল্পী মিঠু বেরা ও রাজকুমার বেরা জানান, এই পুতুল এবারে একটু আগে করে নেওয়ার মূল কারণ আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা । তাছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণ মাটির অভাব যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বালির অভাব । তবে সারা বছর ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে হয় এই মৃৎশিল্পের কাজ করে । কয়েক প্রজন্ম ধরে তাঁরা এই দিওয়ালি পুতুল তারি করে আসছেন । এর চাহিদা জঙ্গলমহল-সহ রয়েছে গোটা রাজ্যে ।