আসানসোল, 18 অগাস্ট : আসানসোলের প্রত্যন্ত একটি গ্রাম ৷ গ্রামের বাড়ি ঘর দেখলেই বোঝা যায় গ্রামের প্রতিটি মানুষ অত্যন্ত কষ্টের সঙ্গে দিনযাপন করেন ৷ নুন আনতে পানতা ফুরানোর মতো অবস্থা গ্রামের বাসিন্দাদের ৷ মাটির বাড়িতে কোনও রকমে মাথা গোঁজার ঠাঁই তৈরি করেছেন তাঁরা ৷ গ্রামের কারও বাড়িতে নেই শৌচাগার ৷ শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষাকালে মাঠই ভরসা তাঁদের ৷ আসানসোলের 106 নম্বর ওয়ার্ডের বনগ্রামের চিত্রটা ঠিক এরকমই ৷ জানা গিয়েছে, শুধু এই গ্রাম নয় ৷ হিরাপুরের আরও 5টি অঞ্চলে শৌচাগার তৈরি হয়ে পড়ে রয়েছে ৷ উদ্বোধন হয়নি এখনও ৷
মুখ্যমন্ত্রী নির্মল বাংলার ঘোষণা করেছেন ৷ সেই মতোই উদ্যোগ নেয় আসানসোল পৌরনিগমও ৷ গ্রামের কারোর বাড়িতে শৌচাগার না থাকার কথা জানার পরই এগিয়ে আসে আসানসোল পৌরনিগম ৷ তৈরি করা হয় কমন টয়লেট ৷ টয়লেটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন মেয়র জীতেন্দ্র তিওয়ারি ৷ এই কমন টয়লেটের মধ্যে মোট 12টি শৌচাগারও রয়েছে ৷ তিন বছর আগে তৈরি করা হয় এটি ৷ কিন্তু, আজও কমন টয়লেটের বাইরে ঝুলতে তালা ৷ টয়লেট তৈরি হলেও তার উদ্বোধন করা হয়নি এখনও ৷ সেকারণেই তার চাবি আজও মেলেনি গ্রামবাসীদের ৷
বর্ষাকালে মাঠে সাপ সহ অন্যান্য পোকা মাকড়ের দেখা মেলে ৷ যার কামড়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাঁদের ৷ তা সত্ত্বেও মাঠেই যেতে হয় গ্রামবাসীদের ৷ এলাকার এক মহিলা তনুশ্রী রায় বলেন, "তিন বছর আগে তৈরি করা হয় শৌচাগারগুলো ৷ কিন্তু, এখনও প্রর্যন্ত চাবি না মেলায় মাঠেই যেতে বাধ্য হই ৷ বেশি অসুবিধা হয় বর্ষাকালে ৷ কাঁদা মাটি পাড় করে মাঠে যেতে হয় ৷ মাঠেও সাপ সহ বিভিন্ন পোকা মাকড়ের ভয় থেকে যায় ৷" গ্রামের অপর এক বাসিন্দা রাজেন রায় বলেন, "গ্রামের সব মানুষই সমস্যার মধ্যে রয়েছে ৷ গ্রামবাসীদের হাতে চাবি তুলে দেওয়া হয়নি ৷ চাবি তুলে দেওয়া হলে গ্রামবাসীদের অনেক সুবিধা হবে ৷ "
এপ্রসঙ্গে আসানসোল পৌরনিগমের মেয়র পারিষদ লক্ষ্মণ ঠাকুরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় ৷ তিনি বলে, "ঠিকাদারের গাফিলতির ফলেই এমন হচ্ছে ৷ শৌচাগারের কাজ ঠিকভাবে করা হয়নি ৷ কাজের জন্য নিম্নমানের পাইপ ব্যবহার করা হয়েছে ৷ খুব তাড়াতাড়ি ঠিকাদারের সঙ্গে কথা বলে শৌচাগারটি গ্রামবাসীদের জন্য খুলে দেওয়া হবে ৷ "
লক্ষ্মণ ঠাকুরের এমন প্রতিশ্রুতিতে অবশ্য চিড়ে ভেজেনি গ্রামবাসীদের মনে । এর আগেও এই ধরনের প্রতিশ্রুতি শুনেছেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের । এখন তাই শৌচাগারের তালা খোলার অপেক্ষাতেই দিন কাটছে তাঁদের ৷