আসানসোল, 21 অগস্ট : 2014 সালে আসানসোলের সাংসদ হিসেবে নির্বাচিত হন বাবুল সুপ্রিয় । আর তারপরেই আদর্শ গ্রাম যোজনায় আসানসোলের একেবারে প্রান্তিক এলাকায় সালানপুর পঞ্চায়েতের সিধাবাড়ি গ্রামকে দত্তক নেন বাবুল সুপ্রিয় । একটু ভালভাবে থাকবার, ভালভাবে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিলেন সিধাবাড়ি গ্রামের মানুষরা । কিন্তু, দু‘বারের সাংসদ বাবুল সুপ্রিয় কি তাদের আশা পূরণ করতে পেরেছ ? আদৌ কি তাদের সমস্যার সমাধান হয়েছে ?
স্থানীয় গ্রামাবাসী শেফালি দত্ত, উমাপদ মণ্ডল, চিন্তা দত্ত, প্রদীপ মণ্ডলরা জানাচ্ছেন, কিছু কাজ তো শুরু করেছিলেন বাবুল সুপ্রিয় । তবে তার কোনওটা অর্ধেক কাজ হয়েছে । কোনও কাজ আবার সফলই হয়নি । খারাপ অবস্থায় পড়ে রয়েছে । সিধাবাড়ি গ্রামকে দত্তক নেওয়ার পর কিছুটা রাস্তা তৈরি করেছিলেন । মাছ চাষের প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছিলেন । গ্রামের পানীয় জলের সমস্যা মেটাতে তৈরি করেছিলেন সাবমার্সিবল পাম্প । লাগানো হয়েছিল সোলার লাইট ও হাইমাস্ট লাইট । কিন্তু সবই প্রায় মুখ থুবড়ে পড়েছে । সিধাবাড়ি পিকনিক স্পটে মাইথন জলাধারে তালা বন্ধ হয়ে পড়ে আছে মাছ চাষ প্রকল্পের ঘর, সাবমার্সিবল খারাপ, লাইটও আর জ্বলে না । গ্রামে কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়ছে । অধিকাংশ বাড়িতেই শৌচাগার নেই । নেই হাইস্কুল । পড়াশোনার জন্য় ছাত্রছাত্রীদের অনের দূরে যেতে হয় ।
আরও পড়ুন, Salt Satyagraha : সমুদ্র ক্রমশ এগিয়ে আসছে, ইনচুড়িতে অবলুপ্তির পথে ভারতের দ্বিতীয় ডান্ডি
গ্রামবাসীদের দাবি, বাবুল সুপ্রিয়কে শেষ দেখা গিয়েছিল 2019 সালে লোকসভা ভোটের নির্বাচনের প্রচারে । ভোটে জেতার পর তিনি নাকি আর গ্রামে আসেননি । এত বড় মহামারি বা কোভিড পরিস্থিতিতেও বাবুল সুপ্রিয় খোঁজ নেননি বলে জানিয়েছেন তাঁরা । যদিও সাংসদের প্রতিনিধিরা জানাচ্ছেন, কোভিড পরিস্থিতিতে প্রয়োজন মতো খাদ্যদ্রব্য ও জিনিসপত্র পৌঁছানো হয়েছিল বাড়ি বাড়ি ।
সম্প্রতি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন বাবুল সুপ্রিয় । তাতে অবশ্য গ্রামবাসীদের আর কিছু যায় আসে না । গ্রামবাসীদের মতে, তিনি থাকাতেও তাঁরা তেমন কিছু পাননি । তাই তাঁর না থাকাতেও প্রভাব পড়বে না । স্থানীয় বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়ের প্রতিনিধিরা কোভিড পরিস্থিতিতে সঙ্গে ছিলেন বলে দাবি গ্রামবাসীদের । বিধান উপাধ্যায় বলেন, “আমি অনেকবার গিয়েছি গ্রামে । আবারও যাব । গ্রামবাসীদের প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করে দেব ।’’ বাবুল সুপ্রিয় গ্রাম দত্তক নিয়েছিলেন বলে গ্রামবাসীরা আশঙ্কায় ছিলেন, তৃণমূল বিধায়ক বোধহয় আর গ্রামের দিকে ফিরেও তাকাবেন না । যদিও বিধান উপাধ্যায় আশ্বাস দিয়েছেন, আশঙ্কার কোনও কারণ নেই, তিনি আছেন ।