দুর্গাপুর, 13 নভেম্বর: কালীপুজোর রাতে দুই ক্লাবের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুর ৷ সেখানকার দুর্গাপুর থানা এলাকার বেনাচিতি মহিষ্কাপুরে এই ঘটনাটি ঘটে ৷ অভিযোগ, দুই ক্লাবের সদস্যরা লাঠি, বাঁশ, তরোয়াল, ভোজালি নিয়ে একে অপরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন । এই সংঘর্ষে 12 জন আহত হয়েছেন ৷ আহতদের মধ্যে পুলিশ কর্মীরাও রয়েছেন ৷ আহতদের মধ্য়ে সাতজন ভরতি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে ৷ আহতদের মধ্যে তিনজনের আঘাত গুরুতর, মাথায় ও হাতে ভোজালির কোপ রয়েছে, লাঠির আঘাতে মাথা ফেটেছে একজনের । এই ঘটনার পর থেকেই ওই এলাকার পরিস্থিতি একেবারে থমথমে । চলছে পুলিশি টহল ।
যে দুই ক্লাবের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, তার একটির নাম অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদ ৷ অন্য ক্লাবটির নাম প্রভাত সংঘ ৷ অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদের সদস্য কৌশিক সামন্ত বলেন, "প্রভাত সংঘের 70-80 জন সদস্য পাঁঠা বলিদান করতে এসে অভব্য আচরণ করছিল । আমাদের গ্রামের মহিলারাও ছিলেন সেই সময় মন্দিরে । আমরা তার প্রতিবাদ করতে গেলে ওরা আমাদের ওপর চড়াও হয় । বাঁশ, লাঠি দিয়ে বেপরোয়া আঘাত করে আমাদের সদস্যদের । আমরা পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ জানাচ্ছি । এদের নেতৃত্ব দিয়েছে বিট্টু সান্যাল । আমাদের বেশ কয়েকজনের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় ।"
অন্যদিকে প্রভাত সংঘের অন্যতম প্রধান বিট্টু সান্যালের মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় । তিনি সোমবার হাসপাতালে শুয়ে বলেন, "এরা সবাই বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতি । কয়লামাফিয়ারাও ছিল গতকাল । গ্রামের মানুষের কাছে জোর করে ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে মন্দির এবং পুকুর । রাজীব শ্যাম, দেবব্রত কেশ এরা গায়ের জোরে মন্দির ও পুকুর দখল করে নিয়েছে ।"
স্থানীয়দের থেকে জানা গিয়েছে, পাশাপাশি এই দু’টি ক্লাবের বিবাদ দীর্ঘদিনের । মাঝেমধ্যে দু’টি ক্লাবের মধ্যে সংঘর্ষের বাতাবরণ তৈরি হলেও এতদিন পর্যন্ত তা বড় আকার ধারণ করেনি । দুর্গাপুজোর সময়ও এই এলাকার অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদ ও প্রভাত সংঘের সদস্যদের মধ্যে সংঘর্ষের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল । তবে সে যাত্রায় পুলিশের কড়া পদক্ষেপের কারণে বড় কোনও গোলমাল হয়নি ।
কিন্তু কালীপুজোর দিনে এই দুই ক্লাবের সদস্যদের সংঘর্ষ ঠেকানো গেল না । মহিষ্কাপুর এলাকায় শ্মশানকালী মন্দির রয়েছে । গ্রামের মানুষের তৈরি এই কালীমন্দির বর্তমানে অগ্রণী সাংস্কৃতিক পরিষদের পক্ষ থেকে সংস্কার এবং দেখভাল করা হয় । কালীপুজোর রাতে প্রভাত সংঘের সদস্যরা পাঁঠা বলিদান দিতে এলে ঘটনার সূত্রপাত ঘটে বলে অভিযোগ ।
পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ৷ দু’পক্ষের মোট আটজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । এ-জোন ফাঁড়ির পুলিশ কর্মী বরুণ মণ্ডল বলেন, "পুজো চলাকালীন প্রভাত সংঘের একজন বাইক নিয়ে বেপরোয়া গতিতে বারবার এদিকে যাওয়া আসা করছিল । আমি তাকে মানা করি । কিন্তু তারা এসে অতর্কিত আক্রমণ চালায় । আমার মাথাতেও লাঠি দিয়ে আঘাত করা হয় ।"
আরও পড়ুন: