আসানসোল, 25 নভেম্বর: আসানসোল পৌরনিগম এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত দূষণ নিয়ে উদ্বেগে পৌর প্রশাসন ৷ তবে এখনও দূষণ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোনও মাস্টার প্ল্যান নেওয়া হয়নি বলে দাবি বিরোধীদের ৷ অন্যদিকে পৌরকর্তারা দোষ ঠেলছে ইসিএলের দিকে ৷ এদিকে আসানসোলই একসময় স্বচ্ছ শহর হিসেবে সরকারি পুরস্কার পেয়েছিল ৷ আজ রাজ্যের মধ্যে যে শহরগুলি দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ, তালিকার প্রথম 7টি শহরের মধ্যে আসানসোল অন্যতম ৷ চলছে রাজনৈতিক দলগুলির একে অপরের উপর দোষারোপের পালা ৷ অন্যদিকে দূষণ থেকে মুক্তি কোথায়, উত্তর খুঁজছে সাধারণ মানুষ ৷
আসানসোল পৌরনিগমের 23টি ওয়ার্ডের দূষণ চিত্র বেশ দুশ্চিন্তার ৷ পৌরনিগমের নিজস্ব বৈঠকেই এমন তথ্য উঠে এসেছে ৷ জানা গিয়েছে, আসানসোল শহরের দূষণ সূচক 250 ছাড়িয়েছে, যা চিন্তার বিষয় ৷ পৌরনিগমের ওয়ার্ডগুলি- 12, 13, 14, 20, 21, 23, 25, 31, 34, 35, 36, 38, 39, 40, 50, 51, 52, 53, 56, 77, 88, 97 ও 106 সবচেয়ে বেশি দূষণ কবলিত ।
একদিকে কলকারখানার দূষণ, সঙ্গে বাসের ধোঁয়া ৷ অন্যদিকে পৌর এলাকায় এমন 3 হাজার 912টি দোকান চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে জ্বালানির জন্য কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে ৷ এই কয়লার ধোঁয়া থেকেই মাত্রাতিরিক্ত দূষণ ছড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন পৌরকর্তারা ৷
আসানসোল পৌরনিগম সূত্রে জানা গিয়েছে, এইসব ওয়ার্ড এলাকায় যে সব দোকানি কয়লার জ্বালানি ব্যবহার করেন, তাঁদের সেগুলি বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ পাশাপাশি যে 21টি ওয়ার্ডের দূষণ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক, সেই ওয়ার্ডগুলিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণে আনতে 20টি গাড়ি দিয়ে দিনে চারবার করে রাস্তায় জল দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে ৷ পাশাপাশি কয়লা ব্যবহার না-করতে সাধারণ মানুষেদেরও সচেতন করার উপর জোর দেওয়া হবে ৷ অন্যদিকে রেল, সেল ও ইসিএল-এর এলাকায় যে দূষণ ছড়াচ্ছে, তা নিয়ন্ত্রণে তিন সংস্থার আধিকারিকদেরও জ্ঞাত করা হবে ৷
আসানসোল পৌরনিগমের মেয়র পারিষদ গুরুদাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, "ইসিএলের থেকে অবাধ কয়লা চুরির জন্যই এই দূষণ বেশি ছড়াচ্ছে ৷ মানুষ সহজেই দোকানে ব্যবহার করার জন্য কয়লা পেয়ে যাচ্ছে ৷ যার ফলে দূষণ ছড়াচ্ছে ৷ আমরা ইসিএলকে অনুরোধ করেছি, কয়লা চুরি রুখতে সচেষ্ট হওয়ার জন্য ৷"
অন্যদিকে আসানসোলের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারি বলেন, "আসানসোল ভারতের দ্বিতীয় অপরিচ্ছন্ন শহরের তকমা পেয়েছিল ৷ কিন্তু আমার সময় গ্রিন অ্যান্ড ক্লিন আসানসোল মাস্টারপ্ল্যান নেওয়া হয়েছিল ৷ সেই কাজের ফলস্বরূপ আমি ছেড়ে দেওয়ার পর পৌরনিগমকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল ৷ কিন্তু পুরস্কারের অর্থমূল্যে আর কিছুই করা হল না ৷ সেই প্ল্যানটিও বন্ধ করে দেওয়া হল ৷ আসানসোলের পরিবেশবিদদের পরামর্শ মাফিক নির্দিষ্ট পরিকল্পনা করে কাজ করলে নিশ্চিত ফল পাওয়া যাবে ৷"
অন্যদিকে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী জানান, দূষণ নিয়ন্ত্রণে পুলিশও সচেষ্ট ভাবে কাজ করছে ৷ ড্রোন দিয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে দূষণ কবলিত এলাকায় ৷
আরও পড়ুন: